প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন কোটি ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ
শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ গাইবান্ধার ১ হাজার ৩৩৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ডিজিটাল হাজিরা মেশিন ক্রয়ের নামে তিন কোটি ৩৪ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুয়ায়ী, গাইবান্ধার সাঘাটা, ফুলছড়ি, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ি, সাদুল্লাপুর, সুন্দরগঞ্জ ও সদর উপজেলায় এক হাজার ৪৬৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। উপজেলা পরিষদের শ্লিপ প্রকল্পের আওতায় এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাজিরার জন্য ডিজিটাল মেশিন ক্রয়ের কথা। এজন্য শ্লিপ প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে ২৫ হাজার টাকা করে মোট প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ৬৬ লাখ দুই হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু গাইবান্ধা সদর, গোবিন্দগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কোনো বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন স্থাপন করা হয়নি।
হাজিরা থেকে ফাঁকি দিতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ২৫৯টি বিদ্যালয়ের বরাদ্দের ৬৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হয়। এদিকে, পলাশবাড়ি শিক্ষক সমিতির নেতারা বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ডিজিটাল হাজিরা মেশিনগুলো ক্রয়ের অলিখিত চুক্তি করেন। সে অনুযায়ী ২০২২ সালে পলাশবাাড়ি উপজেলার ২১৬টি বিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ ৫৪ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়। এ টাকা উত্তোলন করতে গাইবান্ধার অ্যাকটিভ পাওয়ার-৫৫ নামের একটি কোম্পানির ভাউচার দেওয়া হয়। কাগজে-কলমে মেশিন ক্রয় করা হলেও বাস্তবে কোনো বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন বসানো হয়নি।
এ উপজেলার গিরিধারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিনের উদ্ধোধন করেন সংসদ-সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি। বাস্তবে কোনো মেশিনই বসানো হয়নি। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, হাজিরা মেশিন উদ্ধোধনের দুদিন পর বিকল হয়ে যায়।
তথ্য অনুয়ায়ি, সুন্দরগঞ্জে ২৫৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৪৮টি বিদ্যালয়ে মেশিন ক্রয় দেখানো হয়। বাকি ১১টি বিদ্যালয়ে মেশিন কেনাই হয়নি। এই ১১ বিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দের দুই লাখ ৭৫ হাজার টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি। সরেজমিন কোনো বিদ্যালয়েই হাজিরা মেশিন চোখে পড়েনি।
গোবিন্দগঞ্জে ২৭০টি বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন ক্রয়ের জন্য ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। কিন্তু কোনো বিদ্যালয়েই বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন বসানো হয়নি। একই চিত্র সাঘাটা, গাইবান্ধা সদরসহ ৬ উপজেলায়। এতে ভুয়া ভাউচার ও কোটেশনের মাধ্যমে ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকাই পানিতে গেছে। এসব বিষয় খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করছেন সাদুল্লাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহরিয়া খান বিপ্লব।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হারুনর রশিদ বলেন, আমার আসার আগে এসব ঘটেছে। আমি তো জানি না। তবে তার এক রিপোর্টে বলা হয়, শুধ ফুলছড়ি উপজেলায় ডিজিটাল হাজিরা মেশিনের ২৩ লাখ ৬৯ হাজার ৫০০ টাকা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৭/০৪/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়