প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের ‘দুধ-ডিম-ফল’ দেওয়ার প্রস্তাব
নিউজ ডেস্ক।।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে তাদের নিয়মিত ডিম, দুধ, কলা, মৌসুমি ফল ও মাঝেমাঝে রান্না করা খাবার দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
রোববার (৩ অক্টোবর) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সংশ্লিষ্টরা এ প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে, কোন পদ্ধতিতে তা বাস্তবায়ন করা হবে, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, মিড ডে মিল প্রকল্পের অধীনে ২০১০ সাল থেকে দেশের দারিদ্র্যপীড়িত ১০৪টি উপজেলায় প্রতিদিন ৩০ লাখ শিক্ষার্থীকে ৭৫ গ্রামের এক প্যাকেট বিস্কুট দেওয়া হচ্ছে। বিস্কুট থেকে একজন শিক্ষার্থী প্রতিদিন ৩৩৮ কিলো ক্যালরি শক্তি পায়। প্রকল্পটি প্রথম দফায় ২০১০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হয়। পরে প্রকল্প সংশোধন করে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ১৪২ কোটি ৭৯ লাখ ৯১ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকার দিয়েছে ৫৯৭ কোটি ৭০ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৫৪৫ কোটি ৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। এ প্রকল্পের ৪৬৯ কোটি টাকা অব্যয়িত আছে। ছয় মাসের প্রকল্প পরিচালনায় ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০১ কোটি টাকা। এ ছয় মাসের মধ্যে নতুন একটি প্রস্তাবনা তৈরি করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে দেওয়ার শর্তে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, নতুন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) তৈরি করতে এ পর্যন্ত দুটি বৈঠক করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সহ ১০ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। রোববার (৩ অক্টোবর) দ্বিতীয় দফায় বৈঠক হয়েছে। এতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে বিরতির সময়ে নিয়মিত দুধ, ডিম, কলা, রুটিসহ পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সপ্তাহে এক দিন বা দুই দিন খিচুড়ি বা অন্য কোনো রান্না করা খাবার দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রয়োজনে প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে মৌসুমি ফল দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তবে, এসব খাবার সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে, নাকি মায়েদের আনতে বলা হবে, সরকার দিলে কোন পদ্ধতিতে দেবে, সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে নানা ধরনের প্রস্তাব এসেছে। পরে আরেকটি সভায় এসব বিষয় চূড়ান্ত করে নতুন প্রস্তাবনা তৈরি করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। যেসব খাবার দেওয়া হবে তা শিশুদের উপযোগী কি না, তা নিশ্চিত করতে পুষ্টিবিদদের আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মুনসুরুল আলম বলেছেন, ‘ক্লাসের বিরতিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কী কী খাওয়ানো যেতে পারে, সে বিষয়ে নানা ধরনের প্রস্তাব এসেছে। কীভাবে তা বাস্তবায়ন করা হবে, সে বিষয়েও সংশ্লিষ্টরা নানা প্রস্তাব দিয়েছেন। সব প্রস্তাব নথিবদ্ধ করা হয়েছে। পুষ্টি নিশ্চিত করতে বাস্তবসম্মত বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন প্রকল্পের প্রস্তাব তৈরি করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ, এ কার্যক্রম কোন পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করা হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়া। এজন্য কী কী করা প্রয়োজন, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আরও একটি বৈঠক করে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ডিপিপি চূড়ান্ত করা হবে।’