প্রশাসনের ৩ স্তরে পদোন্নতি প্রক্রিয়া শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
প্রশাসনে আবারো তিন স্তরে (অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব ও উপসচিব) পদোন্নতি আসছে। এর মধ্যে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির জন্য সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) প্রথম সভা আজ সোমবার বেলা ২টায় মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে পদোন্নতি দেয়ার জন্য প্রত্যেক কর্মকর্তার কর্মজীবনের সব নথিপত্র আলাদাভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রয়োজনীয় নম্বর, চাকরিজীবনের শৃঙ্খলা, দুর্নীতির বিষয়সহ সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যুগ্মসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতিতে নিয়মিত হিসেবে ১৫তম ব্যাচকে বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রশাসন ক্যাডারের পাশাপাশি অন্যান্য ক্যাডার থেকেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হবে।
এ ছাড়া যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আগে পদোন্নতিবঞ্চিত বিভিন্ন ব্যাচের কিছু কর্মকর্তাকেও পদোন্নতির জন্য বিবেচনা করা হতে পারে। এবারের অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির জন্য যুগ্মসচিব পদমর্যাদার ২৯৫ জন যোগ্য কর্মকর্তা বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে নিয়মিত ১৫তম ব্যাচের রয়েছে ৯৮ জন (ইকোনমিক ক্যাডারসহ) কর্মকর্তা। বিভিন্ন সময়ে পদোন্নতিবঞ্চিত (লেফট আউট) ১৪৭ জন এবং অন্যান্য ক্যাডারের রয়েছে ৫০ জন। যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ পদে গত বছর ২০তম ব্যাচের আংশিক পদোন্নতি দেয়া হয়। অবশিষ্ট কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়ের এপিডি শাখা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশিক্ষণ, সিআর, শৃঙ্খলা এবং পিএসিসি শাখায় চিঠি পাঠানো হয়।
এবারের পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের ২০তম ব্যাচ পর্যন্ত (লেফট আউটসহ) ১৮৬ এবং অন্যান্য ক্যাডারের ১৭৯ জনকে বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে। উপসচিব পদে পদোন্নতির জন্য আগ্রহী বা যোগ্য বিভিন্ন ক্যাডারের ২৮তম ব্যাচ পর্যন্ত কর্মকর্তাদের তালিকা চেয়ে ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়গুলোকে চিঠি পাঠায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গত ১৫ নভেম্বরের মধ্যে যোগ্য কর্মকর্তাদের তালিকা পাঠাতে বলা হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখনো তালিকা পাঠাতে পারেনি বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ জন্য এই ব্যাচের পদোন্নতির প্রক্রিয়া এখনো শুরু করা যাচ্ছে না।
সূত্র জানায়, উপসচিব পদে পদোন্নতির জন্য ২৮ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের ৩৬৩ জন কর্মকর্তাকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে নিয়মিত ব্যাচের রয়েছেন ১৬৪ জন। ইকোনমিক ক্যাডারের বিবেচনায় নেয়া হয়েছে ৪৫ জনকে। বিভিন্ন সময়ে পদোন্নতিবঞ্চিত (লেফট আউট) ১৫৪ জন রয়েছেন। চলতি বছরে অবসরজনিত কারণে সচিবের ১২ পদ ফাঁকা হচ্ছে। অতিরিক্ত সচিবকে পদোন্নতি দিয়ে ১২টি পদে নিয়োগ দেয়া হতে পারে। শূন্য হতে যাওয়া এসব পদ পাওয়া নিয়ে চলছে হিসাব-নিকাশ। অবসরের সময় হওয়ায় কোনো কোনো সচিব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে চেষ্টা করছেন।
চলতি বছরে অবসরে যাবেন যারা আগামী ৯ এপ্রিল পিপিপির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা আফরোজ, ২২ এপ্রিল স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলাল উদ্দীন আহমেদ, ১৪ জুন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো: লোকমান হোসেন মিয়া, ২৬ জুলাই আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, ৫ আগস্ট এনএসডিএর নির্বাহী চেয়ারম্যান দুলাল কৃষ্ণ সাহা, ২৯ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: ফজলুল বারী, ৩০ সেপ্টেম্বর পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো: ইয়ামিন চৌধুরী, ৩০ অক্টোবর জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো: আখতার হোসেন, ২ নভেম্বর জনপ্রশাসন সচিব কে এম আলী আজম, ৩১ ডিসেম্বর পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মো: মামুন আল রশিদ, ৩১ ডিসেম্বর পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য রামেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, ৩১ ডিসেম্বর বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মোকাম্মেল হোসেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও সচিব কে এম আলী আজমের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত, বর্তমানে অতিরিক্ত সচিবের ২১২টি পদে কর্মরত রয়েছেন ৪২১ জন, যুগ্মসচিবের ৪১১ পদে ৭৬৩ জন, উপসচিবের ১৩২৪টি পদে কর্মরত আছেন ১৭৩৬ জন।