প্রধান শিক্ষক বনাম অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কমিটি
নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইলঃ জেলার সদর উপজেলার বাঘিলে অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ ফজলুল হকের অপসারণের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি নিয়ে বাঘিল ইউনিয়নের সয়া-চাকতা গ্রামের বিভিন্ন সড়ক পরিদর্শন করে।
পরে তারা বিদ্যালয় মাঠে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এছাড়া শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে।
অন্যদিকে, প্রধান শিক্ষকের অনাস্থা চেয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন একাধিক শিক্ষক।
মানববন্ধনে বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাব্বির, সপ্তম শ্রেণির কালাম, নবম শ্রেণির শরিফ, অষ্টম শ্রেণির ফাতেমা, খাদিজাসহ একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, প্রধান শিক্ষক সৈয়দ ফজলুল হক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং তাদের বিভিন্ন সময় প্রহার করেন। তারা শিক্ষকের অপসারণ চান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক বলেন, প্রধান শিক্ষক সৈয়দ ফজলুল হক এ বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। বিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ ও সমন্বয় না করে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলে তিনি শিক্ষকদের লাঞ্ছিত ও অপমানিত করে। এছাড়া তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের ‘অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ’ করেন। তিনি সব সময় বিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা লাগিয়ে রাখেন।
কমিটির সদস্য ও অভিভাবকদের নামে থানায় মামলা ও জিডিও করেছে। এতে প্রতিষ্ঠানের সম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবিতে টাঙ্গাইল শহরে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নেওয়ায় প্রধান শিক্ষক আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমরা তার অপসারণ চাই।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আলী হোসেন বলেন, প্রায় চার বছর আগে ফজলুল হক এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেন। তিনি যোগদানের পর থেকেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ২২ মাস ধরে তিনি শিক্ষককের বেতন আটকে রেখেছে। বিষয়টি নিয়ে অভ্যন্তরীণ অডিট কমিটি গঠন করা হয়। তিনি কাগজপত্র জমা না দিয়ে উল্টো কমিটির বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছেন। এছাড়াও তিনি আমার বিরুদ্ধেসহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রায় ১২ জন অভিভাবকের বিরুদ্ধে জিডি করেছেন। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা জরুরি। এভাবে চলতে থাকলে বিদ্যালয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ ফজলুল হক বলেন, বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে আমাকে অন্যান্য শিক্ষকরা মেনে নিতে পারছেন না। এজন্য বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে। আমার বেতনও আটকে রয়েছে। শিক্ষকদের বেতন হয় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে। ফান্ডের বিষয়টা কমিটি ভালো জানেন। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের বিষয়টির ব্যাপারে অবগত নই আমি।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৭/০৩/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়