সাতক্ষীরা শ্যামনগরের কৈখালী এস আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাসারের আত্মহত্যার ঘটনায় সাতজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। বুধবার রাতে নিহতের স্ত্রী নুরুন্নাহার পারভীন বাদী হয়ে শ্যামনগর থানায় এ মামলা করেন। এতে তার স্বামীর সঙ্গে একই কর্মস্থলে থাকা তিনজন সহকারী শিক্ষকসহ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও তিন সদস্যকে আসামি করা হয়েছে।

আসামিদের বিরুদ্ধে পারস্পরিক যোগসাজশে নানামুখী চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে তার স্বামীকে আত্মহত্যার পথে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই শিক্ষকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ হতে শোকজ নোটিশ পাওয়ার পর গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন প্রধান শিক্ষক আবুল বাসার। আগের কমিটির মেয়াদকালে নিয়োগ দেওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে আদায়কৃত প্রায় পৌনে ১ কোটি টাকার হিসাব চাওয়া হয় তার কাছে। যথাসময়ের মধ্যে হিসাব দিতে ব্যর্থ হলে তাকে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে বহিস্কারের হুমকি দেওয়া হয় বলে দাবি করেছে পরিবার।

এদিকে আবুল বাসারের আত্মহত্যার ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। পরিচালনা পর্ষদের শীর্ষ ব্যক্তিদের মর্জিমাফিক জনবল নিয়োগ প্রদানসহ নিজেদের মেয়াদে অর্থ গ্রহণের পর দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের ওপর প্রতিপক্ষের মানসিক চাপ সৃষ্টির ঘটনায় রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে পরিচালনা পর্ষদের অর্থ আত্মসাতের পর প্রধান শিক্ষককে বলির পাঁঠা বানানোর ঘটনায় বিশদ তদন্ত দাবি করেছেন উপজেলায় কর্মরত শিক্ষকরা। একই সঙ্গে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জনবল নিয়োগসহ নানা ক্ষেত্রে পরিচালনা পরিষদের অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধের আহ্বান জানান।

শ্যামনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণেন্দু মুখার্জী জানান, পরিচালনা পর্ষদের চাপের কারণে আবুল বাসার আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। সদ্য গঠিত কমিটি তার ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করায় তিনি কয়েক দিন আগে থেকে সহকর্মীদের কাছে নিজের অসহায়ত্বের বিষয়টি জানিয়ে আসছিলেন। তার আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনার সঙ্গে জড়িতদের পাশাপাশি ওই বিদ্যালয়ের নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে তদন্তের দাবি জানান তিনি।