প্রথম হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
ইউক্রেনে প্রথমবার হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার দাবি করেছে রাশিয়া। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের অস্ত্র গুদামে শক্তিশালী এক হামলার কথা জানিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এ খবর প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি। রুশ মুখপাত্র ইগোর কোনাশেনকোভ দাবি করেন, ‘ইউক্রেনের ভূগর্ভস্থ সামরিক স্থাপনায় হাইপারসনিক প্রযুক্তির কিনজাল ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
সেখানে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র ও সেনাদের বিমানের গোলাবারুদ সংরক্ষিত ছিল। সফলতার সাথেই আঘাত হেনেছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রটি’। রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর তথ্যমতে, হামলায় ব্যবহৃত কিনজাল ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ২০০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সক্ষমতা রাখে।
একই সাথে আকাশ ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ফাঁকি দিতে পারে। রুশ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ইউক্রেন সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। শব্দের চেয়ে অন্তত পাঁচগুণ বেশি দ্রুতগতি সম্পন্ন যে কোনো প্রযুক্তিকে হাইপারসনিক বলা হয়ে থাকে। যুদ্ধের অবসান চায় তুরস্ক : ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান যুদ্ধের অবসান চায় তুরস্ক। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে বলেন, ইউক্রেন সংঘাতের শান্তিপূর্ণ অবসানে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে আঙ্কারা।
গতকাল শনিবার ইব্রাহিম কালিন আরো বলেন, আমরা সবাই এ সঙ্কট নিরসনের চেষ্টা করছি। যুদ্ধের শুরু থেকেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সাথে আমাদের প্রেসিডেন্ট এরদোগান দু’বার ফোনালাপ করেছেন। যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে বিভিন্ন মতামতের পাশাপাশি সবাইকে এক করার চেষ্টা করছি আমরা।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানের পর থেকেই সঙ্কট উত্তরণে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ বেলারুশে ইতোমধ্যে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। এ ছাড়া তুরস্কে মস্কো ও কিয়েভ প্রতিনিধিদের আলোচনা থেকে উল্লেখযোগ্য ফল আসেনি। জয়ী হবে রাশিয়া : পুতিন মস্কোর এক ফুটবল স্টেডিয়ামে কানায় কানায় পূর্ণ সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন।
শুক্রবারের এ সমাবেশে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনকে ন্যায্য বলে দাবি করেন তিনি। এ যুদ্ধে মস্কো বিজয়ী হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। মস্কোর লুঝিনি স্টেডিয়ামে সমর্থকরা সমবেত হয়। রাশিয়ার পতাকা উড়িয়ে ‘রাশিয়া, রাশিয়া, রাশিয়া’ স্লোগান দিয়ে তারা দাবি করে, ক্রেমলিনের সব লক্ষ্যই অর্জিত হবে। রয়টার্স জানায়,‘নাৎসিমুক্ত পৃথিবীর জন্য’, ‘আমাদের প্রেসিডেন্টের জন্য’ নানা স্লোগান লেখা মঞ্চ থেকে ৬৯ বছরের পুতিন বলেন, ‘আমরা জানি আমাদের কী করা প্রয়োজন, কিভাবে তা করতে হয় এবং এর মূল্য কী। আর আমরা অবশ্যই আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব।’ ইউক্রেনে রুশ বাহিনী মোটিফ হিসেবে ব্যবহার করা ‘জেড’ প্রতীক যুক্ত করেও স্লোগান দেয় পুতিন সমর্থকরা।
কোট পরিহিত পুতিন বলেন, বিশেষ সামরিক অভিযানে অংশ নেয়া রুশ সেনারা ইউক্রেনে রাশিয়ার ঐক্য দেখিয়ে দিয়েছে। পুতিন বলেন, ‘কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, তারা পরস্পরকে সাহায্য করছে, পরস্পরের পাশে দাঁড়াচ্ছে আর যখন প্রয়োজন পড়ছে তখন ভাইয়ের মতো বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়ে অন্যকে রক্ষা করছে। এ ধরনের ঐক্য আমাদের দীর্ঘকাল ছিল না।’ পুতিন বলেন, ইউক্রেনে অভিযানের দরকার ছিল কারণ যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে হুমকি দিতে দেশটিকে ব্যবহার করছিল।
আর ইউক্রেনের রুশভাষী মানুষদের ‘গণহত্যা’ থেকে রক্ষার দায়িত্ব রাশিয়ার। শান্তি ও নিরাপত্তা আলোচনার আহ্বান জেলেনস্কির : এদিকে ‘অবিলম্বে’ মস্কোর সাথে অর্থবহ শান্তি ও নিরাপত্তা আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। গতকাল এ আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আগ্রাসন চালিয়ে রাশিয়ার করা ‘ভুলের’ ক্ষয়ক্ষতি সীমিত রাখার এটাই একমাত্র সুযোগ। প্রতিদিনের মতো দেয়া রাত্রিকালীন ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ‘নিজেদের ভুলের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য রাশিয়ার কাছে এটাই একমাত্র সুযোগ’। তিনি বলেন, ‘এটাই সাক্ষাতের সময়, আলোচনার সময়, এটাই ইউক্রেনের ন্যায়বিচার ও আঞ্চলিক অখ তা পুনর্বহালের সময়।’
মস্কোকে সতর্ক করে জেলেনস্কি বলেন, ‘অন্যথায় রাশিয়ার এমন ক্ষতি হবে, তা কাটিয়ে উঠতে আপনাদের কয়েক প্রজন্মের প্রয়োজন পড়বে।’ ক্রিমিয়া দখলের আট বছর পূর্তি উপলক্ষে মস্কোয় আয়োজিত বিশাল র্যালির প্রতি ইঙ্গিত করে জেলেনস্কি বলেন, ‘ক্রিমিয়া দখলের বার্ষিকী সংশ্লিষ্ট অনেক কথাই আজ মস্কোতে শোনা গেছে।’ এবার নিহত রুশ লেফটেন্যান্ট জেনারেল : বিবিসি জানায়, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের জেরে চলমান যুদ্ধে এবার এক রুশ লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিহত হয়েছেন।
গতকাল ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ অব দ্য আর্মড ফোর্সেস এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানায়। ওই পোস্টে বলা হয়, ইউক্রেনের খেরসন প্রদেশের চেরনোবাইয়েভকা শহরে ইউক্রেনীয় বাহিনীর কামান গোলাবর্ষণে রুশ সামরিক বাহিনীর সাউদার্ন মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের ৮ম কম্বাইন্ড আর্মস আর্মির প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল অগ্রন্দ্রই মরদভিচেভ নিহত হন।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়নি। এর আগে ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে রাশিয়ার জেনারেল পর্যায়ের চার সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। তবে ওই চার সেনা কর্মকর্তাই মেজর জেনারেল র্যাঙ্কের ছিলেন। ৩ মার্চ রাশিয়ার সেন্ট্রাল মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের ৪১তম কম্বাইন্ড আর্মস আর্মির ডেপুটি কমান্ডার মেজর জেনারেল আন্দ্র্রেই সুখোভেতস্কি নিহত হন। পরে ৭ মার্চ রুশ ৪১তম আর্মির ফার্স্ট ডেপুটি কমান্ডার মেজর জেনারেল ভিতালি গেরাসিমভ ইউক্রেনীয় শহর খারকিভের কাছে যুদ্ধে নিহত হন। ১১ মার্চ তৃতীয় রুশ জেনারেল হিসেবে রাশিয়ার ইস্টার্ন মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের ২৯তম কম্বাইন্ড আর্মস আর্মির কমান্ডার মেজর জেনারেল আন্দ্রেই কোলেসনিকভ নিহত হন।
চতুর্থ রুশ জেনারেল হিসেবে ১৫ মার্চ রুশ সামরিক বাহিনীর ১৫০তম মোটরাইজড রাইফেল ডিভিশনের কমান্ডার মেজর জেনারেল ওলেগ মিতইয়ারেভ মারিউপোলে নিহত হন। জাপোরিঝজিয়ায় কারফিউ জারি : রয়টার্স জানায়, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গড়িয়েছে ২৪তম দিনে। এখনো চলছে লড়াই। এরই মধ্যে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের শহর জাপোরিঝজিয়ায় ৩৮ ঘণ্টার কারফিউ জারি করেছে। গতকাল দুপুর ২টা থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে কারফিউ। শহরটির ডেপুটি মেয়র আনাতোলি কুর্তিয়েভ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অনলাইন এক পোস্টে তিনি বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলেছেন এবং বাড়ির বাইরে যেতে বারণ করেছেন।
মারিউপোল রাশিয়ার সেনারা অবরুদ্ধ করলে এ আঞ্চলিক শহরটি দেশটির মানুষদের পালানোর বড় বিকল্প পথ হয়ে ওঠে। এখন পর্যন্ত এই ট্রানজিট দিয়ে দেশ ছেড়েছেন ৩৫ হাজার ইউক্রেনীয়। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে টানা এক মাস ধরে উত্তেজনা চলার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায় রাশিয়া। এরই মধ্যে কয়েক শ’ মানুষ হতাহতের খবর পাওয়া গেছে দেশটিতে।
ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছেন প্রায় ২৭ লাখ মানুষ। যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিলেও থামতে নারাজ পুতিন সরকার। ১৪৪০০ রুশ সেনা নিহত : ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসনের প্রথম তিন সপ্তাহে পাল্টা আঘাতে রুশ বাহিনীর ১৪ হাজারের বেশি সৈন্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে কিয়েভ। গতকাল ইউক্রেন সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফ রুশ সৈন্যদের প্রাণহানির এই তথ্য জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলেছেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ১৪ হাজার ৪০০ রুশ সৈন্য নিহত হয়েছে।
এতে বলা হয়, এক হাজার ৪৭০টি সৈন্যবাহী সাঁজোয়া যান, ৬০টি ট্যাংক এবং শতাধিক যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারসহ বিপুল পরিমাণ সামরিক সরঞ্জাম হারিয়েছে মস্কো। তবে ইউক্রেনের এই দাবি নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি। যদিও পশ্চিমা গোয়েন্দা সূত্রগুলো ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার সাত হাজারের মতো সৈন্য নিহত এবং আরো ১৪ হাজার থেকে ২১ হাজারের মতো সৈন্য আহত হয়েছে বলে আভাস দিয়েছে।
আজভ সাগরে প্রবেশাধিকার হারাল ইউক্রেন : আজভ সাগরের উপকূলবর্তী শহর মারিউপোল রুশ বাহিনীর দখলে চলে যাওয়ায় ওই সাগরে প্রবেশাধিকার হারিয়েছে ইউক্রেন। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে অবশ্য এ অবস্থাকে ‘সাময়িক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ সম্পর্কে বলা হয়, ‘দখলদার বাহিনী দোনেতস্ক অপারেশনাল ডিস্ট্রিক্টে আংশিকভাবে সফল হয়েছে এবং সাময়িকভাবে আজভ সাগরে প্রবেশাধিকার হারিয়েছে ইউক্রেন।’
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে একই তথ্য জানিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, মারিউপোল থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। আজভ সাগরের উপকূলবর্তী মারিউপোল শহরটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাশিয়া ও ইউক্রেন’ উভয়ের কাছেই। কারণ, শহরটির পশ্চিমদিকে আছে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ, আর পূর্বদিকে দোনেতস্ক এলাকা, যা বর্তমানে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে আছে। ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের প্রথম থেকেই শহরটিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছিল রুশ বাহিনী।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, মারিউপোলের ৮০ শতাংশ ভবন রুশ বাহিনীর গোলায় ধ্বংস হয়ে গেছে এবং এখনো শহরটিতে আটকা পড়ে আছে অন্তত এক হাজার মানুষ। সৈন্য পাঠানোর তথ্য অস্বীকার করল হিজবুল্লাহ : আলজাজিরা জানায়, লেবাননের সশস্ত্র রাজনৈতিক দল হিজবুল্লাহর সেক্রেটারি জেনারেল সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তার জন্য তারা কোনো যোদ্ধা পাঠাননি। শুক্রবার রাতে এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
হাসান নসরুল্লাহ বলেন, ‘আমি এ দাবি সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। এ ধরনের দাবি মিথ্যা যার মধ্যে বিন্দুমাত্র সত্য নেই।’ তিনি বলেন, ‘হিজবুল্লাহ থেকে কোনো যোদ্ধা বা বিশেষজ্ঞ সেই যুদ্ধক্ষেত্রে যায়নি।’ এর আগে শুক্রবার ইউক্রেন সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ও লেবাননের হিজবুল্লাহ থেকে ভাড়ায় এক হাজার যোদ্ধা ইউক্রেনে গেছে।
ইউক্রেনকে সমর্থন জানালেন বুশ ও ক্লিনটন : এএফপি জানায়, ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক দুই প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও জর্জ ডব্লিউ বুশ। শিকাগোতে একটি ইউক্রেনীয় গির্জা পরিদর্শনের সময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিজেদের অবস্থান জানানোর সময় ইউক্রেনকে সমর্থনের কথা জানান এই দুই সাবেক প্রেসিডেন্ট। বিল ক্লিনটনের টুইটার অ্যাকাউন্টে তাঁদের গির্জা পরিদর্শনের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর সে দেশের নাগরিকদের প্রতি সংহতি জানানোর লক্ষ্যেই তারা এখানে এসেছেন। ওই ভিডিও বার্তায় বলা হয়, ‘স্বাধীনতা ও রুশ অভিযানের বিরুদ্ধে লড়াই করা ইউক্রেনীয় নাগরিকদের পাশে দাঁড়াতে আমেরিকানরা ঐক্যবদ্ধ।’ মারিওপোলের কেন্দ্রে রুশ বাহিনী : ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর নগরী মারিওপোল রুশ অবরোধের মুখে পর্যুদস্ত।
রুশ বাহিনী দাবি করছে, তারা একেবারে শহরের কেন্দ্রস্থলে পৌঁছে গেছে। রুশ প্রতিরক্ষা বিভাগকে উদ্ধৃত করে রিয়া নভোস্তি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, রুশ বাহিনীর সমর্থন নিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা মারিওপোল শহরে ইউক্রেনিয়ান বাহিনীর চাপ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্টাডি অব ওয়ার জানিয়েছে, রুশ বাহিনীর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে আগামী কিছুদিনের মধ্যে শহরটির পতন ঘটতে পারে। লাভিভ বিমানবন্দরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা : বিবিসি জানায়, ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে লাভিভ শহরের আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী বলছে, কৃষ্ণ সাগর থেকে রাশিয়া ছয়টি ক্রুজ মিসাইল ছুঁড়েছিল। তারা দাবি করছে, এর মধ্যে দু’টি মিসাইল তারা বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়।
এর মানে হলো চারটি মিসাইল লক্ষ্যভেদ করতে সক্ষম হয়েছে। লাভিভের মেয়র আন্দ্রেই সাদোভি বলেছেন, রুশ মিসাইল লাভিভ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের এয়ারক্রাফট মেইনটেনেন্স সেন্টারের ওপর আঘাত হানে। এখানে বিমানের মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হয়। মিসাইল হামলায় এ ভবনটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। এ হামলার আগে লাভিভ শহরে অনেকক্ষণ ধরে বিমান হামলার সাইরেন বাজছিল। এর পরপরই বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। লাভিভ বিমানবন্দরটি ইউক্রেনের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। পোল্যান্ডের সীমান্ত থেকে এটি ৭০ কিলোমিটার দূরে।