কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে মানিকগঞ্জে অবৈধভাবে পাসপোর্ট করতে এসে এক রোহিঙ্গা তরুণ ও এক কিশোরী আটক হয়েছেন। তাঁরা হলেন, হুমাইরা (১৬) ও আবু তাহের (২৭)।

আজ রোববার মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে তাদের আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়।

তাঁরা সাংবাদিকদের জানান, এক লাখ টাকার চুক্তিতে পাসপোর্ট করতে আসেন। ইতোমধ্যে দালালকে ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন।

আটক আবু তাহের জানান, ২০০৮ সালে মিয়ানমার থেকে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। চকরিয়ায় হোটেলে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন। কিশোরী হুমাইরা সম্পর্কে তাঁর কাকি। কাকা সৌদি আরব থাকেন। মো. শাদ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইল ফোনে পাসপোর্ট করার জন্য এক লক্ষ টাকার চুক্তি হয়। ওই ব্যক্তি সকল কাগজপত্র তৈরি করে দেন। তারা আজ রোববার কক্সবাজার থেকে মানিকগঞ্জে আসেন। এরপর দালাল শাদের সঙ্গে পাসপোর্টের যাবতীয় কাগজপত্র জমা দেন। পাসপোর্ট কর্মকর্তা কাগজপত্র দেখে সন্দেহ হওয়ায় সত্য ঘটনা প্রকাশ করতে বাধ্য হন।

হুমাইরা জানান, ২০১৭ সালে তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বাংলাদেশে আসেন। ২০২০ সালে মোবাইল ফোনে সৌদিপ্রবাসী তোফায়েল হোসেনের (৫০) সঙ্গে বিয়ে হয়। তিনি সৌদি যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করতে আসেন।

মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক নাহিদ নেওয়াজ জানান, হুমাইরা উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকেন। তার রোহিঙ্গা আইডি ১৫৫২০১৭১২২৪১১৫৪৫৯। তিনি চার বোন ও মা-সহ ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসেন।

তিনি আরও জানান, মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইরের চর চান্দহর গ্রামের খলিলুর রহমানের মেয়ে তাসনিমা বেগম পরিচয়ে এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন বাদলের পরিচয়পত্র নিয়ে তাঁরা পাসপোর্ট করতে আসেন। যাচাইবাছাই ও ফিঙ্গার প্রিন্ট নেওয়ার সময় রোহিঙ্গা ডাটাবেজের সঙ্গে মিলে যায়। পরে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ওই কিশোরী সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার সোনাতানি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মসনদ গ্রহণ করেন।

এ ব্যাপারে চান্দহর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন বাদলের সঙ্গে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, তার স্বাক্ষর জাল করে একটি চক্র এই অপকর্মটি করেছেন। তিনি এ ব্যাপারে সিংগাইর থানায় সাধারণ ডায়েরি করবেন বলে জানান। তার স্বাক্ষরযুক্ত যে পরিচয়পত্রটি তৈরি করা হয়েছে সেখানে কোনো স্মারক নম্বর নেই। স্বাক্ষরটিও তার নয়।

মানিকগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রউফ সরকার বলেন, পাসপোর্ট অফিস থেকে এক রোহিঙ্গা নারী ও যুবককে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে দালালচক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।