দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়।
পাঠ্যবই সংকট প্রাথমিকে
শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ নতুন শিক্ষাবর্ষে নতুন শ্রেণিতে উঠেছে প্রাথমিকের সোনামণিরা। কাগজ ও কালির সংকট, ঊর্ধ্বমুখী দাম, ছাপা সরঞ্জামের মূল্যবৃদ্ধি, লোডশেডিং, দুটি শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম ও এনসিটিবির কার্যাদেশে দেরি ইত্যাদি কারণে বিপাকে পড়েছে প্রাথমিকের এ খুদে সোনামণি শিক্ষার্থীরা। এখনও পঞ্চম শ্রেণির একটি বইও পায়নি তারা। প্রাথমিকের অন্যান্য শ্রেণিতেও পুরো সেট বই বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছেনি।
বই মুদ্রণ ও বিতরণের দায়িত্বে থাকা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) বলছে, প্রাথমিকের এক কোটি ৪৫ লাখ বই ছাপা বাকি আছে। তিনটি লটের কাজ এখনও শুরু হয়নি। অন্যদিকে মাধ্যমিকের সব শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবই হাতে পেয়েছে। তবে নবম শ্রেণির গণিত, ইংলিশ গ্রামার অ্যান্ড কম্পোজিশন, বাংলা সহপাঠ, বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও কৃষিশিক্ষা বই বেশিরভাগ স্কুলে পৌঁছায়নি।
বছরের প্রথম দিন ঘটা করে বই উৎসব হলেও এবার শিক্ষার্থীদের পুরো সেট বই হাতে তুলে দেওয়া যায়নি।
শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা বলছেন, সময়মতো বই না পাওয়ায় মহামারিকালে পড়ালেখার ক্ষতি আরও বাড়বে। পাঠ্যপুস্তক নিয়ে আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল।
তবে এক সপ্তাহের মধ্যে অবশিষ্ট বই স্কুলে যাবে বলে আশা ব্যক্ত করেছে বই বিতরণের দায়িত্বে থাকা এনসিটিবি।
রাজধানী ঢাকা ও বিভিন্ন এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, স্কুলে ধাপে ধাপে বই দেওয়া হচ্ছে। বাকি বই এলে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে শিক্ষকরা জানান।
গত সোমবার খোদ রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলে দেখা যায়, প্রাথমিকের অধিকাংশ শিক্ষার্থী বেশিরভাগ বই পায়নি। কোনো বই পায়নি এমন শিক্ষার্থীরও খোঁজ মিলেছে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এসব বিষয়ের ক্লাস নেওয়া যায়নি।
২০১০ সাল থেকে বছরের প্রথম দিন উৎসব করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক তুলে দিচ্ছে সরকার। ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার মোট ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১ কপি বই বিনামূল্যে বিতরণ করেছে। এবার ৪ কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার ৩৮১ জন শিক্ষার্থীকে ৩৩ কোটি ৯১ লাখ ১২ হাজার ৩০০ কপি পাঠ্যবই বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে।
দেরিতে দরপত্র প্রক্রিয়া করা, কার্যাদেশে বিলম্ব, কাগজ সংকট, বিদ্যুতের লোডশেডিং- এসব কারণে শুরুতেই পাঠ্যবই নিয়ে সংকট তৈরি হয়। বাজারে অব্যবহৃত (ভার্জিন) পাল্পের চরম ঘাটতি দেখা দেয়। এ কারণে ৮৫ শতাংশ উজ্জ্বলতার কাগজ পাওয়া যায়নি। এমনকি পুনঃব্যবহৃত (রিসাইকেল বা পুরোনো কাগজ প্রক্রিয়া করে বানানো) পাল্পেরও ঘাটতি আছে। এই সুযোগে পুরোনো কাগজ সরবরাহকারী এবং কাগজ উৎপাদনকারীদের অনেকে সিন্ডিকেট করে ফেলে।
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, এনসিটিবির নমনীয়তা আর কাগজের এই সংকট পুঁজি করে কিছু মুদ্রাকর নিউজপ্রিন্ট আর নিম্নমানের কাগজে বই ছাপিয়েছে। বইয়ের কাগজ, রং, বাঁধাই ও মলাট- সব নিয়েই রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।
এ বিষয়ে জাতীয় এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকের দরপত্র দেরিতে দেওয়া হয়। দরপত্রের তারিখ অনুযায়ী ১৭ জানুয়ারি সব বই দেওয়ার কথা রয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে প্রাথমিকের সব পাঠ্যবই পৌঁছানো হবে। প্রথমে কাজ করতে না চাওয়ায় তিনটি লটের পাঠ্যবই ছাপা শুরু হয়নি।
তিনি বলেন, বেশিরভাগ পাঠ্যবই পৌঁছে গেছে। প্রাথমিকের এক কোটি ৪৫ লাখ বই বাকি আছে। সব স্কুলে পাঠ্যবই পৌঁছানো হয়েছে। কোথাও কোথাও কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, কেউ জড়িত থাকলে খুঁজে বের করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০১/১৩/২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে পেজে লাইক দিয়ে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়।
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
এই বিভাগের আরও খবর