পরিবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থায় টিকে থাকতে শিক্ষকদের প্রস্তুতি জরুরী
নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনাঃ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলতে নতুন পাঠ্যক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষকরাই এ অগ্রগতির পথপ্রদর্শক, সৈনিক। তাই শিক্ষকদের নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের শিক্ষা দর্শন ছিল গণমূখী। যার মূল লক্ষ্য ছিল সময়োপযোগী মানবিক মর্যাদাসম্পন্ন দক্ষ, উন্নত মানুষ গড়ে তোলা। ২০০০ সালে যেখানে চরম দারিদ্র সীমার নিচে ছিল ৩৪ শতাংশ, ২০২২ সালে তা ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। একইসাথে আজ শিক্ষা হার ৭৪ শতাংশ, যা ২০০০ সালে ছিল মাত্র ৩৪ শতাংশ। তাই শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। সুতরাং বিশ্বায়নের যুগে টিকে থাকার উপযোগী করে আমাদের শিক্ষক সমাজের তৈরী হতে হবে। প্রয়োজন বিশ্বমানের শিক্ষা ব্যবস্থা ধারণ করার। বাংলাদেশ দেরীতে হলেও সে পথে চলছে। নতুন শিক্ষা কারিকুলামে যে শিক্ষা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে শিক্ষকদের আন্তরিক হতে হবে।’
বাগেরহাটের ফকিরহাট শেখ হেলাল উদ্দীন ফাউন্ডেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘সময়ের চাহিদা ও শিক্ষা সংস্কারে অব্যাহত প্রচেষ্টা’ শীর্ষক উন্মুক্ত আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা অডিটরিয়ামে শেখ হেলাল উদ্দীন ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সোহবান মিয়া, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও যশোর শিক্ষা বোর্ডের প্রাক্তন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র, শেখ হেলাল উদ্দীন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন দাশ, সরকারী ফকিরহাট ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ দেবদুলাল বসু চম্পক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারুফা বেগম নেলী, হেলাল উদ্ধীন ফাউন্ডেশনের সাধারন সম্পাদক মো. ইউনুস আলী শেখ প্রমুখ। সরকারি শেখ হেলাল উদ্দীন কলেজের অধ্যক্ষ বটু গোপাল দাশের সঞ্চালনায় উন্মুক্ত আলোচনায় বিভিন্ন প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, মাদ্রাসা সুপার ও জনপ্রতিনিধিসহ বিশিষ্টজনেরা অংশগ্রহণ করেন। শেখ হেলাল উদ্দীন ফাউন্ডেশন মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তিপ্রদান সহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের কাজ করছেন।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সোহবান মিয়া বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম আগামী বিশ্বে টিকে থাকার উপযোগী। এই পদ্বতি যথাযথ অনুসরণ করলে কোচিং বানিজ্য বন্ধ হবে। শিক্ষার্থীরা আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম হবে।’ তিনি শিক্ষকদের সঙ্গতিপূর্ণ জীবনযাপনে রাষ্ট্রের ন্যায্যতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও যশোর শিক্ষা বোর্ডের প্রাক্তন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউট থাকা জরুরী। শিক্ষা জাতীর মেরুদন্ড, আর সেই মেরুদন্ডের প্রধান শক্তি বা’ সেনিক হলেন শিক্ষক। তাই শিক্ষকদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আরও পরিশ্রমী ও দেশপ্রেমিক হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী বলেন, ’৭৫ সালে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে পরিকল্পিতভাবে জাতীতে পিছিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্থ করা হয়েছে। কিন্তু আজ উন্নত রাষ্ট্রগঠনের আকাঙ্খা জনমানসে জেগে উঠেছে। তৈরি হয়েছে তারুণ্যকে প্রস্তুত করার প্রত্যয়। এক্ষেত্রে নতুন কারিকুলাম নিঃসন্দেহে একটা সাহসী উদ্যোগ।
স্বাগত বক্তব্যে শেখ হেলাল উদ্দীন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন দাশ বলেন, আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সময় উপযোগী শিক্ষায় বিনিয়োগ সর্বশ্রেষ্ট বিনিয়োগ। আলোকিত মানুষ তৈরীর লক্ষ্যে- সেই আলোর পথে বাংলাদেশ হাঁটছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৪/০৪/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়