পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বংশানুক্রমে চাকরি দিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
নিউজ ডেস্ক।।
পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বংশানুক্রমে চাকরি প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি জানান, ঢাকার চার পাশে এলিভেটেড সার্কুলার রোড (চক্রাকার উড়াল সড়ক) তৈরিরও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, মাটিতে যেহেতু জায়গা কম সেহেতু এলিভেটেড হলে ভালো হবে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী। সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ব্রিফিংয়ে এই তথ্যগুলো জানান। এ সময় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমও বক্তব্য রাখেন। এম এ মান্নান বলেন, একনেক সভায় সাত হাজার ৫৮৯ কোটি ৭২ লাখ টাকার আটটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সরকারি তহবিল থেকে ৫ হাজার ৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে ২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা জোগান দেয়া হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, অপর এক প্রকল্প অনুমোদন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এলসি স্টেশনগুলোতে বডি ও মালামাল স্ক্যানার বসাতে হবে। নদীগুলো নিয়মিত মেইনটেন্যান্স ড্রেজিং ও ক্যাপিটাল ড্রেজিং করতে হবে। এ ছাড়া নদীর ধারে অবস্থিত শিল্প কারখানার বর্জ্য যাতে নদীতে ফেলা না হয় সে দিকে নজর রাখতে হবে। শিল্প কারখানাগুলোতে ইটিপি স্থাপন করতে হবে। বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার এক ফসলি জমিতে যাতে করা হয় সেদিকে নজর দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসাথে শিশুপার্ক তৈরিরও নির্দেশ দেন তিনি।
এম এ মান্নান বলেন, যুবসমাজ, নারী ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে কর্মসংস্থানের উপযোগী ও চাহিদাভিত্তিক কর্মীবাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে বলেন, শিল্প কিংবা আবাসনের বর্জ্য পরিশোধন ছাড়া নদীতে ফেলা যাবে না। প্রয়োজনে সমন্বিত ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট করে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেছেন, উপকূলে বাঁধ কেটে যেন চিংড়ি চাষের জন্য নোনা পানি ব্যবসায়ীরা ভেতরে প্রবেশ করাতে না পারে সে বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে হবে। বাঁধের নকশা চিংড়ি চাষের সহায়ক করে তৈরির নির্দেশ দেন তিনি; যেন আলাদা ড্রেনেজ উৎস তৈরি হয়। সেখান থেকে পানি সংগ্রহের জন্য অর্থ দিতে হবে ঘের মালিকদের।
একনেক সভায় অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো, ১ হাজার ১৪২ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে পৌরসভায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প, ৮০ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে হিলি, বুড়িমারি ও বাংলাবান্ধা এলসি স্টেশনের ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প, ৩৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীররক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ, ৪১৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার রংপুর স্থাপন, ১৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আঞ্চলিক ডাল গবেষণা কেন্দ্র, মাদারীপুরের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বৃহত্তর বরিশাল, ফরিদপুর অঞ্চলে ডাল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প, ১২৮ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদী থেকে পুনরুদ্ধারকৃত ভূমির উন্নয়ন এবং প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল রক্ষা প্রকল্প, ১ হাজার ২০ কোটি ৪২ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যয়ে সাতক্ষীরা জেলার পোল্ডার নম্বর ১৫ পুনর্বাসন প্রকল্প এবং বিশ্বব্যাংকের ঋণে দক্ষতা উন্নয়নে ৪ হাজার ৩০০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে এক্সসিলারেটিং অ্যান্ড স্ট্রেনথদেনিং স্কিলস ফর ইকোনমিক ট্রান্সফরমেশন প্রকল্প।