নিয়োগ পরীক্ষার দিন উধাও সভাপতি
রাজশাহীঃ তানোর পৌরসভা দাখিল মাদ্রাসা( আমশো)তে আবারো নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করে মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাবেক যুবলীগ নেতা ইকবাল মোল্লা ও সদস্যরা আত্মগোপন করেছেন বলে নিশ্চিত করেন পরিক্ষা দিতে আশা নিয়োগ প্রার্থীরা।
গত শুক্রবার পৌরসভা দাখিল মাদ্রাসায় ঘটে এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি। এতে করে নিয়োগ প্রত্যাশীরা সভাপতির বাড়িতে ও মাদ্রাসার সামনে আত্মহত্যার জন্য প্রস্তুতি নিলে স্থানীয় ও গ্রামবাসী এবং শিক্ষক দের অনুরোধে করেননি আত্মহত্যা। এতে করে একের পর এক নিয়োগের দিন ধার্য্য করেও সভাপতি ও সুপারের জন্য বাতিল হচ্ছে। ফলে এমন ঘটনায় নিয়োগ প্রার্থীরা ও গ্রামবাসী সভাপতির পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। নচেৎ যে কোন মুহুর্ত্বে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা করছেন।
জানা গেছে, তানোর পৌরসভা (আমশো) দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ পরিক্ষার জন্য শুক্রবার দিন ধার্য্য ছিল। সে মোতাবেক ঢাকা থেকে ডিজির প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নির্ধারিত সময় সকালে উপস্থিত হন। তার আগ থেকে নিয়োগ প্রার্থীরা পরিক্ষার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এক দু ঘন্টা করতে করতে সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত অপেক্ষার পরও সভাপতি ইকবাল মোল্লা ও সদস্যরা কেউ উপস্থিত হয়নি এবং সবার মোবাইল নম্বর বন্ধ ছিল।
এমন খবর পেয়ে মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায় সবকিছু তালাবদ্ধ। নাসিমা নামের এক নিয়োগ পরিক্ষার্থী বাড়িতে এসে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন। তার পরিবারের লোকজন নানা ভাবে শান্তনা দিচ্ছেন।
নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, আয়া ও নিরাপত্তা কর্মী দুইটি পদে দুটি নিয়োগ হওয়ার কথা। কিন্তু সভাপতি ও সুপার একাধিক ব্যাক্তির কাছ থেকে টাকা আদায় করেছেন। এজন্য সে নিয়োগ পরীক্ষার আযোজন করে মাদ্রাসায় আসছেন না।তিনি নিজেকে বিশাল কিছু মনে করে ফোন বন্ধ করে রাখছেন। তিন চার বার নিয়োগ পরিক্ষার আয়োজন করা হলেও সভাপতি ও সুপার উপস্থিত হন না। কারন তারা অনেকের কাছে টাকা নিয়েছেন নিয়োগ দিব বলে।
এদিকে নেতারা, সভাপতি ও সুপারও নিয়েছেন টাকা। চাকুরী হবে দুজনের, আর একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কারনেই নিয়োগ পরিক্ষা নিয়ে সভাপতি ও সুপার এবং কিছু নেতারা ইঁদুর বিড়াল খেলা শুরু করেছেন। যারা টাকা দিয়েছে নিয়োগ পাব তাদের পরিবারের কি অবস্থা চলছে একবারও কেউ ভাবছেনা। মানুষ ক্ষোভে রাগে কত কি ঘটনা ঘটিয়ে ফেলছেন। গত শুক্রবারের সবাই বিদায় হওয়ার পর অনেকে বিষের বোতল নিয়ে আসেন। সবার অনুরোধে তারা এমন ঘটনা ঘটায়নি। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে অঘটন ঘটবেই।
এ বিষয়ে তানোর পৌরসভা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মুনসুর রহমান বলেন, আমি উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু সভাপতি না আশার কারনে হয়নি পরিক্ষা। সভাপতির কথায় দিন ধার্য্য করা হয়েছিল। সভাপতি যে কাজ করেছেন এজন্য প্রতিষ্ঠানকে মাসুল গুনতে হবে। কারন মাদ্রার নিয়োগ পরিক্ষার জন্য ঢাকা থেকে আসে ডিজির প্রতিনিধি। সে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তানোর পৌরসভা দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও তানোর পৌর যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইকবাল মোল্লা বলেন, আমি স্বচ্ছতা মোতাবেক পরিক্ষায় যারা পাশ করবে তাদেরকে চাকুরী দেওয়া হবে। কিন্তু কিছু নেতারা টাকা নিয়ে তাদের পছন্দ অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। আমিও সাব বলে দিয়েছি তাহলে আমাকে সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে ইচ্ছেমত দিতে।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সুপার ও সভাপতি দিন তারিখ নির্ধারন করে সভাপতি না আশার কারনে পরিক্ষা হয়নি।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৮ মে নিয়োগ পরিক্ষার দিন ধার্য্য করে সভাপতি ও সুপার অনুপস্থিত থাকায় হয়নি পরিক্ষা।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৮/০৭/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়