নিয়মবহির্ভূতভাবে মাদ্রাসার সহ-সুপার নিয়োগ
চট্টগ্রামঃ জেলার হাটহাজারীতে নিয়মবর্হিভূতভাবে মাদ্রাসার সহ সুপার নিয়োগের অভিযোগ পাওয়া গেছে এক মাদ্রাসার সুপার ও পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ধলই ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামের বায়তুশ শরফ আদর্শ দাখিল মাদ্রাসায়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার এক আনুষ্ঠানিক নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে তাকে নিয়োগ দেওয়ার তথ্য পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় স্মারক নং ০৫.৪২.১৫৩৭.০০৬.০০.০২.০২. ২০২২.৫৭৯, তারিখ: ২৮.০৭.২০২২ অনুষ্ঠিতব্য সভায় কার্যবিবরনী ক্রমিক নং ১ আলোচনা ও সিদ্ধান্তে যেসব মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার কমিটির মেয়াদ শেষ ও অভিযোগ আছে তাদের শিক্ষক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা ও তদন্ত দেওয়া হয়। যার মধ্যে বায়তুশ শরফ দাখিল মাদ্রাসাও রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৫ সালে ভোটার তালিকা অনিয়ম নিয়ে মো: আলী নামে একজন ঐ কমিটির কয়েকজন সদস্যকে বিবাদী করে হাটহাজারী সিনিয়র জজ আদালতে মাদ্রাসার বিরুদ্ধে মামলা করেন, যার নম্বর- ৮১/২০১৫। উক্ত কারণে কমিটির মেয়াদত্তীর্ণ হলে পরবর্তী ম্যানেজিং কমিটি গঠিত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে বিধায় ঐ কমিটিকে নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটি বলা বিধি সঙ্গত নয়।
পরবর্তীতে হাইকোর্টে এডহক কমিটি গঠনের জন্য মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা এম এম ইব্রাহিম বাদী হয়ে ৫০/২০১৯রিট পিটিশন দায়ের করেন।
অন্যদিকে ঐ কমিটির সভাপতি শাহ আলম চৌ: রিট পিটিশন ৫০/১৯ এ সভাপতি হিসেবে পক্তভুক্তি আবেদন করলে বিগত ৯/৪/২০১৯ তারিখে আবেদনটি মহামান্য হাইকোর্ট খারিজের আদেশ প্রদান করেন। এতে তিনি ঐ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালনে বৈধতা না থাকায় উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে বিবিধ আপিল মামলা দায়ের করেন যার নম্বর- ৩৭৪/২০১৯ দায়ের করেন।
উপরোক্ত মামলাসমূহ নিস্পত্তি ও এডহক কমিটি গঠনের পরামর্শ প্রদান করে রেজিস্ট্রার, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড মাদ্রাসার সুপারকে পত্র প্রেরণ করেন যার স্বারক নং-চট্টগ্রাম-১২০/৩০৬২, তারিখ: ২৭.৩.২০১৯। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে উক্ত আদেশ এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পত্র নং ৫৭.২৫.০০০.০০৪.০২.০৩৮.১৬.৭২১ তারিখ: ২০/১১/২০১৯ তারিখের নিয়োগের শর্তবলী বর্ণিত ০৬ ও ০৮ লঙ্গন করে মাদ্রাসায় অফিস সহকারী পদে মো: আলী মিয়াকে (ইনডেক্স- এম ০০০০৮৩৭) ২০১৯ সালে সুপার মাও: ফরিদুল আলম (ইনডেক্স-৩০৫৬৭৯) এর কারিশমায় ঐ কমিটি দিয়ে নিয়োগ দেন।
উক্ত মো: আলী মিয়া অফিস সহকারী পদে নিয়োগ পেয়ে (মাদ্রাসা বিরুদ্ধে) ৮১/১৫ মামলার ৩৯ নং আদেশ বাতিলের জন্য আমুক্তারমূলে জেলা জজ আদালত চট্টগ্রামে, সিভিল রিভিশন ৬৮/২০২১ মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে উক্ত মাদ্রাসায় চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালতে ৮১/১৫, ৬৮/২১ , হাইকোর্টে রিট পিটিশন নং-৫০/১৯, সুপ্রিম কোর্টে বিবিধ আপিল মামলা নং-৩৭৪/২০১৯ চলমান থাকায় এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ২৩/০৬/২০২৩ ইং তারিখে স্মারক নং ৫৭.২৫.০০০০.০০১.১৫.০০২.১৫-৬৮১ এর ২.১ (খ) লঙ্ঘন করে মাদ্রাসার সুপারের কারিশমায় সহ: সুপার পদে গত ২৯/০৯/২০২৩ তারিখে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঐ মাদ্রাসার সুপার মাওলানা ফরিদুল আলম বলেন, যথাযত নিয়ম মেনে সহ: সুপার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়মিত পরিচালনা কমিটি ছাড়া এবং মামলা চলাকালীন অবস্থায় কীভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তার কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। পরে নিয়মিত কমিটি আছে জানালেও কমিটির কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
বিষয়টা নিয়ে মাদ্রাসার সভাপতি শাহ আলম চৌধুরী বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা। আর বিধি সঙ্গত না হলে মাদ্রাসা বোর্ডের প্রতিনিধি ও শিক্ষা অফিসার কীভাবে আসলেন?
নিয়মিত পরিচালনা কমিটি না থাকার বিষয়টি অজানা জানিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাঈনুদ্দিন মজুমদার বলেন, কোথায় কমিটি আছে নাই এ ধরনের কোনো কাগজপত্র আমাদের সরবরাহ করা হয় না। এর ফলে এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। চিঠি পেয়ে সেখানে উপস্থিত হয়েছি।
এবিষয়ে হাটহাজারী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, আমি বিষয়টি খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিব।
এদিকে নিয়মবহির্ভূতভাবে এই নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে এলাকার সচেতন মহলে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৬/১০/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়