নববর্ষে কলেজ শ্রেণিকক্ষে বিয়ে, মাঠে খাওয়া দাওয়া
দিনাজপুরঃ রবিবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা। জেলার বিরামপুর মহিলা কলেজের ১০১ নম্বর শ্রেণিকক্ষে বিয়ের মঞ্চে বসে পড়ে বর ও কনে। মঞ্চের আশপাশের পুরো অংশ বর ও কনে পক্ষের অতিথিতে পরিপূর্ণ। আর কলেজ সীমানার ভেতরের মাঠে বরযাত্রী ও কনে পক্ষের অতিথিদের জন্য খাওয়া দাওয়ার যাবতীয় আয়োজন।
স্থানীয়রা জানায়, আরিফুল-আঁখি দম্পতির বিয়ে উপলক্ষে ছিল এ আয়োজন। কলেজ একাডেমিক ভবনের ১০১ নম্বর কক্ষটি বিয়ের আসরের জন্য ব্যবহার করেন স্থানীয় একটি পরিবার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ ও মাঠ কেন বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে, এ বিষয়ে বর ও কনে পক্ষের কেউ কোনো কথা বলতে রাজি হননি। কলেজের ওই শ্রেণিকক্ষে অনুষ্ঠিত বিয়েটি স্থানীয় নিকাহ রেজিস্ট্রার মোখলেছুর রহমান তিন লাখ টাকা মোহরানায় রেজিস্ট্রি করেন। কনের বাবার বাড়িতে জায়গার সংকুলান না হওয়ায় বাড়ির পাশের কলেজে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
বর আরিফুল ইসলাম রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার শ্যামবাসেরপাড়া গ্রামের মোমিনুল ইসলামের ছেলে। আর কনে বিরামপুর পৌর শহরের পূর্ব জগন্নাথপুর মহল্লার আজাহার আলীর মেয়ে ফাতেমা বিনতে আজাহার ওরফে আঁখি। বিয়ে শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বরযাত্রীরা কনেকে গাড়িতে করে পীরগঞ্জে রওনা দেন।
কনের বাবা আজাহার আলী বলেন, নববর্ষের দিন বিরামপুরের কমিউনিটি সেন্টার ফাঁকা না থাকা ও বাড়িতে জায়গার সংকুলান না হওয়ায় কলেজের শ্রেণি কক্ষে কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে বিয়ের আয়োজন করা হয়।
এ বিষয়ে বিরামপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মেজবাউল হক বলেন, ‘মেয়েটি (কনে) আমাদের কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী। কলেজে ওই মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান করার জন্য মেয়ের বাবা আমাকে অনুরোধ করেছিলেন। এখন তো কলেজে ঈদের ছুটি, তাই বিয়ের জন্য কলেজের মাঠ ও কক্ষটি ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিয়ের আসর বসানোর সুযোগ আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বিরামপুর মহিলা কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সোহেল রানা মুঠোফোনে বলেন, ‘কলেজের শ্রেণিকক্ষ ও কলেজ চত্বরের ভেতরে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, এমন তথ্য আমার কাছে নেই। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করার কোনো সুযোগ নেই।’
ইউএনও নুজহাত তাসনীম বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করা নীতিগতভাবে ঠিক নয় বলে আমার যত দূর মনে হচ্ছে। কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরে খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখব।’
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৫/০৪/২০২৪