নন.এমপিও শিক্ষক সমাজের ভাগ্যাকাশ আজ অন্ধকারাচ্ছন্ন
মো.সাজ্জাদ হোসেন।।
শিক্ষক সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে এক লড়াকু সৈনিক। শিক্ষক সব সময় মিথ্যা ও অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করে সত্যের পতাকাকে তুলে ধরেছে। শিক্ষক সমাজ সর্বদা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে সোচ্চার। শিক্ষক বাংলাদেশ ও বাঙালির সংস্কৃতিকে মনেপ্রাণে লালন করে ও ধারণ করে। শিক্ষক সমাজ সত্য বলতে ও সত্যের পথে চলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী।
১০ শে জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস থেকে ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের জন্য রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজস্ব উদ্যোগে হাতে নিয়েছে নানা ধরনের কর্মসূচি। চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা,আলোকচিত্র প্রদর্শনী,দেয়ালিকা লিখন,রচনা প্রতিযোগীতা,উপস্থিত বক্তৃতা, ৭ মার্চের ভাষণ,নাটিকা প্রদর্শন, আলোচনা অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচি।
শিক্ষার্থীদের সামনে জাতির পিতার আদর্শ তুলে ধরার জন্য শিক্ষকদের ব্যস্ততার শেষ নেই। ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকার পাশাপাশি নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে শিক্ষক সমাজ হাতে নিয়েছে নানা ধরনের কর্মসূচি। গ্রামীন জনগোষ্ঠীর সামনে জাতির পিতার অমর কীর্তিগুলো তুলে ধরার জন্য সদা ব্যস্ত শিক্ষক সমাজ। গ্রামের মা বোন সহ শহরের চিত্র-বিনোনের সুযোগ থেকে যারা বঞ্চিত তারা সবাই অধীর আগ্রহে তাকিয়ে থাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দিকে। ছেলে মেয়েদের নিকট থেকে সর্বদা খোঁজ খবর নেই জাতীয় দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানের।
বাঙালি জাতির ইতিহাস ঐতিহ্যের সংস্কৃতি গুলোই গ্রামীণ মা-বোনদের বিনোদনের একমাত্র উৎসব। ছেলে মেয়েদের বায়না থাকে নতুন পোশাক কেনার। খুব কম সংখ্যক বাবা মা এই বিশেষ দিনগুলোতে ছেলে মেযেদের বায়না অপূর্ণ রাখে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলার জনগণ পালন করবে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী। এটা প্রতিটি বাঙালির জন্য এক গর্ব ও অহংকারের বিষয়। সারা বিশে^র প্রভাবশালী নেতৃবিন্দু জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবে। তারা স্বচক্ষে দেখবে শেখ হাসিনার উন্নয়নের বাংলাদেশ। ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত নতুন বাংলাদেশ। তথ্য ও প্রযুক্তিভিত্তিক ডিজিটাল বাংলাদেশ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। মাথাপিছু আয় ১৯০৯ মার্কিন ডলার। উন্নয়ন অগ্রগতির রোল মডেল স্থাপিত হয়েছে। রাস্তাঘাট,স্কুল,কলেজ ও অবকাঠামো খাতে বর্ণনাতীত সাফল্য অর্জিত হয়েছে। গ্রাম-গঞ্জের কোথাও আজ কর্দমাক্ত রাস্তা খুঁজে পাওয়া যায়না। বিদ্যুতের আলোয় আজ পুরো বাংলাদেশ আলোকিত হয়েছে। শিক্ষা চিকিৎসা,কৃষি,অর্থনীতি ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সকল সেক্টরে যে উন্নয়ন হয়েছে তা একসময় কল্পনাতীত ছিল। শিক্ষক সমাজ সম্ভাবনার বাংলাদেশকে তরুণ সমাজের সামনে তুলে ধরছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলার সকল জনগনের আর্থিক সচ্ছলতা এসেছে।
সবাই পেটপুরে তিনবেলা খেয়ে পরে বেঁচে আছে। কিন্তু নন.এমপিও শিক্ষক নামক এক শ্রেণির মানুষের ভাগ্যাকাশ আজ অন্ধকারাচ্ছন্ন। তাদের ভাগ্যে মনে হয় সুখের আলোর দেখা মিলবে না। পরিবার পরিজন নিয়ে দুঃসহ জীবন আর কতদিন বয়ে বেড়াতে হবে ? বাবা-মা স্ত্রী সন্তান আজ ও নন.এমপিও শিক্ষকের দিকে চেয়ে আছে। তাদের অধীর আগ্রহে চেয়ে থাকার দিন শেষ হবে কি ? বছরের পর বছর শিক্ষার আলো বিলিয়ে দেওয়ার পরও আজ তারা অবহেলিত। সমাজে ও পরিবার পরিজনের কাছে তারা আজ মূল্যহীন।
রাষ্ট্রীয় শিক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করার পরও তারা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে কিছুই পাইনা। শিক্ষার আলো বিলিয়ে দিয়ে দেশের প্রতিটি ঘর আজ আলোকিত করেছে বে-সরকারি শিক্ষক সমাজ। রাষ্ট্রের এত বড় দায়িত্ব পালন করার পর ও দেশের কর্ণধারদের সুনজর পাচ্ছে না। মুজিববর্ষে সবার প্রত্যশা পূরণ হতে চলেছে। কিন্তু নন.এমপিও শিক্ষক সমাজের চাওয়া আজ অপূর্ণ থেকে যাচ্ছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন করতে হচ্ছে খালি হাতে। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সামান্য আনন্দটুকুও আজ বিষাদে পরিণত হতে চলেছে।
৪০-৫০ হাজার নন.এমপিও শিক্ষক ও কর্মচারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখপানে আজ চেয়ে আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এক ঘোষণায় তাদের অন্তরে স্বস্তি ফিরে আসতে পারে। নন.এমপিও শিক্ষক কর্মচারিদের কান্ডারী হবে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। এটাই মুজিববর্ষে নন.এমপিও শিক্ষক সমাজের প্রত্যাশা। লেখক- প্রভাষক,হিসাব বিজ্ঞান লাউর ফতেহপুর ব্যারিস্টার জাকির আহাম্মদ কলেজ নবীনগর,ব্রাহ্মণবাড়িয়া।