নন এমপিওভুক্তদের এমপিওভুক্ত করার সুযোগ নেই
অনলাইন ডেস্ক।।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ননএমপিও শিক্ষক পদে সুপারিশপ্রাপ্তদের এমপিওভুক্ত করার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে ননএমপিও পদে সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীরা তাদের সুপারিশ পরিবর্তনের আবেদন করলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এ বিষয়টি জানানো হয়েছে। আবেদন করা প্রার্থীদের চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছে এনটিআরসিএ।
মঙ্গলবার দুপুরে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার একটি প্রতিষ্ঠানে সুপারিশপ্রাপ্ত একজন প্রার্থী চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অপরদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর কর্মকর্তারাও প্রার্থীদের চিঠি পাঠানোর বিষয়টি জানা গেছে। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ননএমপিও পদে শিক্ষক নিয়োগের চাহিদা দেয়া পদগুলোতে প্রার্থীদের তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে নিয়োগ সুপারিশ করেছে এনটিআরসিএ। এসব পদে সুপারিশপ্রাপ্তরা অনেকে প্রতিষ্ঠানে যোগদান করে দেখতে পান তাদের পদগুলো জনবল কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত বা প্যাটার্নভুক্ত। এ পদগুলোতে প্রার্থীরা এমপিওভুক্তির আবেদন করলে সুপারিশপত্রে ননএমপিও উল্লেখ থাকায় উপজেলা শিক্ষা অফিস, জেলা শিক্ষা অফিস ও আঞ্চলিক অফিস থেকে তাদের এমপিওর আবেদন রিজেক্ট করে দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে নবসৃষ্ট পদ যেমন, স্কুলের সহকারী শিক্ষক ভৌতবিজ্ঞান, সহকারী শিক্ষক হিসাববিজ্ঞান পদে অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে ননএমপিও চাহিদা আসলেও ওইপদগুলো নির্ধারিত অর্থবছরে প্যাটার্নভুক্ত হয়েছে। তাই ননএমপিও পদে সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীরা তাদের সুপারিশ সংশোধন করে ‘এমপিও’ উল্লেখ করে দেয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা বলছেন, ননএমপিও পদে আলাদাভাবে নিয়োগ সুপারিশ প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে। পদটি এমপিও হলে মেধাতালিকায় এগিয়ে থাকা প্রার্থীরা ওই পদে আবেদন করতেন। তাই ননএমপিও সুপারিশপ্রাপ্তদের এমপিওভুক্ত করার সুযোগ নেই।
১০তম নিবন্ধন পরীক্ষা উত্তীর্ণ এক প্রার্থী বলেন, তিনি পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার লক্ষীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ সুপারিশ পেয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানে যোগদান করে তিনি জানতে পারেন তার পদটি প্যাটার্নভুক্ত। কিন্তু সুপারিশপত্রে ননএমপিও উল্লেখ থাকায় তিনি এমপিওভুক্ত হতে পারেননি। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি এনটিআরসিএতে আবেদন করে বিষয়টি জানিয়েছিলেন।
ওই প্রার্থী জানান, সম্প্রতি এনটিআরসিএ থেকে তাকে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছে ননএমপিও পদে সুপারিশপ্রাপ্তদের এমপিওভুক্ত করা বা সুপারিশ সংশোধনের কোনো সুযোগ নেই। এনটিআরসিএর সদস্য কাজী কামরুল আহছান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, লক্ষীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তার বিদ্যালয়ের শূন্যপদের চাহিদা পাঠানোর সময় পদটি নন-এমপিও হিসাবে ই-রিকুইজিশন দিয়েছিলেন। এনটিআরসিএ ওই ই-রিকুইজিশনের প্রেক্ষিতে নিবন্ধনধারী প্রার্থীদের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের জন্য নন-এমপিও পদেই আবেদন গ্রহণ করে। প্রার্থীদের আবেদনপত্র এবং মেধা ও পছন্দের ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচন করা হয় এবং নিয়োগ সুপারিশ করা হয়। শূন্য পদের চাহিদা দেয়ার পর দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পূর্ণ অটোমেশন পদ্ধতিতে প্রার্থী নির্বাচন করা হয়েছে এবং চাহিদা অনুযায়ী পদ পূরণ করা হয়েছে। ননএমপিও পদে চাহিদা দিয়ে ওই পদকে বর্তমানে এমপিও করার কোন সুযোগ নেই। শূন্যপদের চাহিদা দেয়ার সময় প্রতিষ্ঠানে পক্ষ থেকে পদটি ননএমপিও হিসেবে উল্লেখ করায় এবং সে অনুযায়ী দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন এবং নিয়োগ সুপারিশ করার পর ওই পদকে এমপিও হিসেবে পরিবর্তনের কোন বিধিগত সুযোগ না থাকাতে সুপারিশপত্র বিষয়টি পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর সংশ্লিষ্ট শাখার এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান ননএমপিও পদের চাহিদা দিয়েছে তাদের চাহিদাগুলোর ভিত্তিতে ননএমপিও পদে আলাদাভাবে আবেদন নেয়া হয়েছে। সেখানে ননএমপিও পদে নিয়োগ পেতে ইচ্ছুক প্রার্থীরা আবেদন করেছিলেন। সে অনুযায়ী তাদের আটোমেশন পদ্ধতিতে সুপারিশ করা হয়েছে। ওই পদের নিয়োগের এমপিও চাহিদা আসলে ওইপদটিতে আবেদন এমপিওভুক্ত পদগুলোর সঙ্গে নেয়া হতো। সেক্ষেত্রে মেধাতালিকায় এগিয়ে থাকা প্রার্থীরা নিয়োগ সুপারিশ পেতেন। কিন্তু পদটিকে ননএমপিও দেখানোয় ওই পদে প্রার্থীরা ননএমপিও পদের সুপারিশ পেয়েছেন। ওই পদে সুপারিশ প্রাপ্তদের এমপিওভুক্ত করার সুযোগ নেই। বিষয় টি প্রার্থীদের চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। সুপারিশপত্র সংশোধন করার সুযোগ এনটিআরসিএর নেই।