নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে নিজেরাই নিজেদের মূল্যায়ন করবে
২০২২ শিক্ষাবর্ষে ২০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষাক্রমের ‘পাইলটিং’ শুরু হচ্ছে। ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সব প্রতিষ্ঠানেই নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান হবে। নতুন শিক্ষাক্রমে লেখাপড়ার বিষয়বস্তু (কনটেন্ট), বিষয় ও পরীক্ষা-সবই কমছে। এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হলে ‘আপাতত’ প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত কোন বার্ষিক পরীক্ষা থাকছে না। ২০২৩ সাল থেকে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর পরীক্ষাও থাকছে না। শ্রেণী শিক্ষকরাই ক্লাস রুমে শিশু শিক্ষার্থীদের ‘শিখন দক্ষতা’ মূল্যায়ন করবেন।
পরীক্ষা উঠে গেলে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষাক্রমের ‘ধারাবাহিক মূল্যায়ন’ এবং ‘প্রজেক্টবেইজড শিখন’ অর্থাৎ নির্দিষ্ট ‘টপিক্স’ ও ‘বিষয়ের’ ওপর শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক দক্ষতা মূল্যায়ন করবেন শিক্ষকরা। তারা শিক্ষার্থীদের দলভিত্তিক মূল্যায়ন করবেন। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকের পাশাপাশি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা নিজেরা নিজেদের মূল্যায়ন করবে বলে এনসিটিবির শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
পরীক্ষা উঠে গেলে ‘নোট-গাইড ও সহায়ক বই’ ও বাণিজ্যনির্ভর কোচিং সেন্টারের ওপর শিক্ষার্থীদের নির্ভরতা কমতে পারে বলে ধারণা করছেন শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকতারা। তবে ক্লাসরুমে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শ্রেণী শিক্ষকরা যাতে শিশুদের জিম্মি করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবিদ ও কর্মকর্তারা।
জানতে চাইলে ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন কোর কমিটির’ সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক ড. এম তারিক আহসান সংবাদকে বলেছেন, ‘দুটি বিষয়; অর্থাৎ রূপরেখায় দুটি জায়গায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে। শিখন শেখানো প্রক্রিয়া, আরেকটি হলো মূল্যায়ন। শিখন শেখানো প্রক্রিয়াটা এখন কিন্তু আর বই নির্ভর থাকছে না; আমরা সেটিকে বলছি, অভিজ্ঞতার শিখন।’
সারা পৃথিবী ও আশপাশের দেশগুলোতেও হচ্ছে এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এর ফলে এখন শিক্ষার্থীর জ্ঞান অর্জন করার বিষয়টিই একমাত্র কাজ নয়। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা এটাকে প্রয়োগ করে তার দৈন্দিন জীবনে যেসব সমস্যা আছে সেগুলো সমাধান করতে পারে কি না এবং সেই সমাধান করতে গিয়ে তার নতুন কী অভিজ্ঞতা হলো সেই ধরনের একটি চর্চার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীকে যেতে হবে। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যদি যাই, তাহলে মুখস্থ করার কিছু কিন্তু নেই।’
মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার বিষয়ে ঢাবি অধ্যাপক বলেন, ‘এখানে যে জিনিসটি দেখা হবে, সেটি হলো শিক্ষার্থীরা শিখন প্রয়োগ করতে পারছে কি না, করতে গিয়ে তার সহপাঠী ও এলাকার লোকজন, তাদের সঙ্গে কিন্তু শিক্ষার্থীর ইন্টারেকশন (মিথস্কিয়া) করতে হবে। এটি করতে গেলে মানুষ কিন্তু শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করবে। এর ফলে শিক্ষক যে একা মূল্যায়ন করবেন সেই উপায়ও নেই। এতে একজন শিশু আরেকজনকে মূল্যায়ন করবে, অভিভাবকরাও মূল্যায়ন করবেন এবং এলাকার মানুষের সঙ্গে মিথস্কিয়া থাকবে তারাও মূল্যায়ন করবেন।’
সবগুলো বিষয় মিলিয়েই শিক্ষার্থীর ‘লার্নিং প্রফেসের’ মূল্যায়ন করা হবে জানিয়ে ড. এম তারিক আহসান বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ার মধ্যে মুখস্থ করার কিছু নেই এবং একটি নির্দিষ্ট ছকের মধ্যে প্রমাণ করারও কিছু নেই যে আমি পুরোটা লিখে দিয়ে এলাম। এর ফলে গাইড ও কোচিং-দুটিরই আর কোন প্রয়োজন পড়বে না।’
শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের বিষয়ে শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ ড. তারিক আহসান বলেন, ‘যুগের প্রয়োজনে নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রমকে যুগোপযোগী করা হচ্ছে। এটি বাস্তবায়নের জন্য দক্ষ শিক্ষক ও স্থানীয় পর্যায়ের প্রশিক্ষণের বিষয়ে জোরোলো সুপারিশ করা হয়েছে। নবম-দশম শ্রেণীতে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের যথাযথ মৌলিক জ্ঞানের পাশাপাশি উদ্ভাবনী ও বাস্তবসম্মত জ্ঞান অর্জনের পথ তৈরি করা হয়েছে শিক্ষাক্রমে। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কারিকুলামও আধুনিকায়ন করা হবে। পাঠ্যবই তৈরি হবে সেভাবেই।’
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সম্প্রতি জানিয়েছেন, ২০২৩ সাল থেকে পঞ্চম শ্রেণীর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী এবং অষ্টম শ্রেণীর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষাও থাকবে না। সাময়িক পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ এবং অষ্টম থেকে নবম শ্রেণীতে উন্নীত করা হবে।’
নতুন শিক্ষাক্রমে নবম ও দশম শ্রেণীতে কোনো বিভাজন থাকবে না। সবাইকেই সরকারি নির্ধারিত ১০টি ‘বিষয়বস্তু’র (কনটেন্ট) ওপর ‘শিখন লাভ’ অর্থাৎ লেখাপড়া করতে হবে। এতদিন নবম-দশম মিলে পাবলিক পরীক্ষা হতো; নতুন শিক্ষাক্রমে দশম শ্রেণী শেষে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর একাদ্বশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর মূল্যায়নের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে।
প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ১০ ধরনের শেখার ক্ষেত্র :
নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ১০ ধরনের শেখার ক্ষেত্র নির্ধারণ করেছে সরকার। এগুলো হলো ভাষা ও যোগাযোগ, গণিত ও যুক্তি, জীবন ও জীবিকা, সমাজ ও বিশ্ব নাগরিকত্ব, পরিবেশ ও জলবায়ু, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, তথ্য ও শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা, মূল্যবোধ ও নৈতিকতা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি প্রাক-প্রাথমিকের শিশুদের জন্য আলাদা বই থাকবে না, শিক্ষকরা শেখাবেন।
প্রাথমিকের জন্য আটটি বিষয় নির্বাচন করা হয়েছে। বিষয়গুলো হলো-বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, ধর্মশিক্ষা, ভালো থাকা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি। এর মধ্যে ‘ভালো থাকা’ এবং ‘শিল্প ও সংস্কৃতি’ বিষয়ে আলাদা বই থাকবে না। এগুলো শিক্ষকরা শেখাবেন, যার জন্য ‘টিচার্স গাইড’ বই দেয়া হবে।
শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়ন ধারাবাহিকভাবে
নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের’ (এনসিটিবি) সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান।
নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের ‘চ্যালেঞ্জের’ তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আমরা সবগুলো বিষয় তৈরি করিনি। যখন বাস্তবায়ন হবে তখন ধারাবাহিকভাবে তা করা হবে। আমরা প্রথমে শুধু ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষাক্রম তৈরি করব। এর পাইলটিং শুরু হবে ২০২২ সালে। ২০২৩ সালে সারাদেশে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীরটি বাস্তবায়ন হবে। এরপর অষ্টম ও নবম শ্রেণীরটা হবে। এরপর ২০২৪ সালে গিয়ে সারাদেশে মাঠে যাবে অষ্টম ও নবম শ্রেণীর শিক্ষাক্রম। ২০২৪ সালে দশম শ্রেণীর শিক্ষাক্রম তৈরি হবে। ২০২৫ সাল থেকে সারাদেশে পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে। এরপর ২০২৭ সালের মধ্যে একাদ্বশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হবে।’
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীকে ১০টি অভিন্ন বই পড়ানো হবে। এগুলো হলো- বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, ধর্ম শিক্ষা, ভালো থাকা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি।
বর্তমানে মাধ্যমিক স্তরে ১২ থেকে ১৪টি বই পড়ানো হয়। অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত কিছু অভিন্ন বই পড়তে হয় এবং নবম শ্রেণীতে শাখা বিভাজন হয়। নতুন শিক্ষাক্রমে একাদশ শ্রেণীতে গিয়ে শাখা পরিবর্তন হবে।
এনসিটিবি কর্মকর্তারা মনে করছেন, নবম শ্রেণী থেকে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগ উঠে যাওয়ায় এই স্তরে সবাইকে একই শিক্ষাক্রমে একই পাঠ্যবই পড়তে হবে। এতে একজন শিক্ষার্থী মাধ্যমিক স্তরে সব বিষয়ে জ্ঞান লাভ করবে।
নবম ও দশম শ্রেণীতে সব শিক্ষার্থী একই বিষয়ে লেখাপড়া করবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘এ পর্যায়ের কোন শিক্ষার্থী বিশেষ কোন বিষয়ে পারদর্শী থাকলে, তাকে সে বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। তবে উচ্চমাধ্যমিক অর্থাৎ এইচএসসি থেকে শিক্ষার্থীদের আগের মতো বিভাগ বিভাজন করতে হবে।’
‘নোট-গাইড’ ও ‘কোচিং নির্ভরতা’ কমবে-দাবি এনসিটিবির :
নতুন শিক্ষাক্রমে ‘নোট-গাইড’ ও ‘কোচিং নির্ভরতা’ কমবে জানিয়ে শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ ড. মশিউজ্জামান বলেন, ‘কোচিংয়ে জড়ায় তখন, যখন কী প্রশ্ন করব, কী উত্তর হবে-তখনই। আমরা এই জায়গাটাতেই পরিবর্তন করে ফেলছি। ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ৬০ শতাংশ নম্বরই থাকছে কন্টিনিউয়াস অ্যাসেসমেন্টের (ধারাবাহিক মূল্যায়ন) ওপর। বাকি ৪০ ভাগ নম্বর থাকছে ক্লাস পরীক্ষায়।’
ধারাবাহিক মূল্যায়ন কীভাবে হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে অ্যাসাইনমেন্ট থাকবে, প্রজেক্টবেইজড লার্নিং থাকবে; এখানে হয়তো ছয়জন শিক্ষার্থী মিলিয়ে একটি দল থাকবে, ক্লাসের সব শিক্ষার্থীকে এভাবে গ্রুপে ভাগ করে দেয়া হবে। গ্রুপভিত্তিক শিক্ষার্থীরা প্রজেক্ট জমা দেবে। এ ক্ষেত্রে একটি প্রজেক্টে যদি ১৫ নম্বর থাকে, শিক্ষক পুরো ১৫ নম্বর দেবেন না, কোনো শিক্ষার্থীকে এককভাবে এই নম্বর দেয়া যাবে না। এখানে প্রজেক্টভিত্তিক শিক্ষার্থীরা একে অন্যকে ‘মূল্যায়ন’ করবে।’
ধারাবাহিক মূল্যায়নের বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরসহ (ডিপিই) শিক্ষা প্রশাসনের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা নিয়মিত ‘মনিটরিং’ করবেন বলে জানিয়েছেন এনসিটিবি সদস্য (শিক্ষাক্রম)।
এনসিটিবি জানিয়েছে, ২০১২ সালে সর্বশেষ জাতীয় শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনা হয়; ২০১৩ সালে পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়। তবে প্রাথমিকের শিক্ষাক্রমে সর্বশেষ পরিবর্তন আসে ২০১০ সালে। এর আগে ১৯৯৫ ও ১৯৭৬ সালে শিক্ষাক্রম পরিমার্জন করা হয়। সরকার ২০১০ সালে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ প্রণয়ন করলেও এর অনেক কিছুই বাস্তবায়নের বাকি রয়েছে।
কমবে বইয়ের বোঝা
বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে তিনটি করে পাঠ্যবই এবং তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ছয়টি করে পাঠ্যবই পড়তে হয়। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ১৩টি পাঠ্যবই পড়তে হয়। নবম ও দশম শ্রেণীতে ২৭টি এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে ৩৯টি পাঠ্যবই রয়েছে। তবে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ আলাদা থাকায় নবম, দশম ও একাদশ শ্রেণীতে সব শিক্ষার্থীকে সব বিষয়ের বই পড়তে হয় না।
এ ছাড়াও মাদ্রাসায় ধর্মীয় চারটি বিষয় অর্থাৎ কোরআন, হাদিস, আকাইদ ও ফিকাহ এবং আরবির পাঠক্রমে পরিবর্তন আসছে।
প্রাথমিকের পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা সংবাদকে বলেন, ‘প্রাথমিকের ১০টি লার্নিং এরিয়া ঠিক রেখে কিছু বিষয় একত্রিত করে পাঠ্যবই কমিয়ে দেয়া হবে। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীতে বই কমতে পারে। যদিও বিষয়গুলি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে কর্মশালার আয়োজর করা হবে সেখানে সবকিছু চূড়ান্ত করবেন বিশেষজ্ঞরা।’
ধর্মীয় বিষয়ের কিছু বিষয় বিচ্ছিন্নভাবে অন্যান্য বইয়েও রয়েছে জানিয়ে এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, ‘এগুলো সমন্বয় করা হবে। এ ক্ষেত্রে নৈতিক শিক্ষা ও ধর্ম, শারীরিক শিক্ষা ও চারুকলা এ রকম একই বিষয়গুলোকে একত্রিত করে বই কমিয়ে দেওয়া হবে। এতে শিশুদের কাছে বই যেন বোঝা না হয়, পাঠে যেন তারা আনন্দ পায়, সেদিকে গুরুত্ব দিয়েই পরিমার্জনের কাজ চলছে।’
অটিস্টিক ও তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষা নিশ্চিতে ব্যবস্থা থাকছে
এনসিটিবি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে তৃতীয় লিঙ্গ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে প্রতিবন্ধকতা না থাকলেও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ছিল না। এর ফলে শিক্ষার্থী যখন বুঝতে পারে সে হিজড়া তখন সামাজিক প্রতিবন্ধকতা ও কুসংস্কারের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই তাকে স্কুল ভর্তি নেয়া হয় না। এতে এই ধরণের শিশুরা শিক্ষা ঝরে পড়তো। এদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ কোন ব্যবস্থাও ছিল না।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান জানান, অটিস্টিক শিশু ও হিজড়াদের শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষাক্রমে ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। হিজড়াদের শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে সবার আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তার প্রতি সহপাঠীদের সহনশীল আচরণ প্রয়োজন।
হিজড়াদের নিয়ে শিক্ষাক্রমে স্বচ্ছ ধারণা তৈরির ব্যবস্থা থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে তাদের বিষয় যুক্ত করা হবে। এ ছাড়া প্রকল্পভিত্তিক শিখন ব্যবস্থা হাতে নেয়া হবে।