নতুন শিক্ষাক্রম:যেভাবে শ্রেণিতে মূল্যায়ন
নিউজ ডেস্ক।।
নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা থাকছে না। তাদের শতভাগ শিখনকালীন মূল্যায়ন করা হবে। চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে ৬০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং ৪০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে। বাকি বিষয়গুলোতে শিখনকালীন শতভাগ মূল্যায়ন করা হবে। এই শ্রেণিগুলোতে ষান্মাসিক ও বার্ষিক পরীক্ষার মাধ্যমে হবে সামষ্টিক মূল্যায়ন।
নবম ও দশম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে ৫০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং বাকি ৫০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে।
এ ছাড়া জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ে শতভাগ মূল্যায়ন করা হবে। দশম শ্রেণি শেষে দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ওপর পাবলিক পরীক্ষা হবে।
নতুন শিক্ষাক্রমে একজন শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন নম্বর বা গ্রেডের পরিবর্তে ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ ও বৃত্ত ব্যবহার করে করা হবে। ত্রিভুজ হচ্ছে সবচেয়ে ভালো, বৃত্ত হচ্ছে মোটামুটি ভালো এবং চতুর্ভুজ অর্থ উন্নতি প্রয়োজন। এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, নৈপুণ্য অ্যাপের মাধ্যমে হবে মূল্যায়ন।
তিনি বলেন, সারা বছরে যে ফলাফল হবে, বোর্ডের পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলটাও যুক্ত হয়ে মূল রেজাল্ট হবে। শিক্ষার্থীদের ফলাফলে আইকনগুলোর নিচে একটি মন্তব্য লেখা থাকবে। যেটা থেকে ওই বাচ্চার অগ্রগতি বা অবনতি বোঝা যাবে। কিন্তু অ্যাপে এতকিছু লেখার সুযোগ নেই। অ্যাপে আইকনগুলোই থাকবে।
তবে অভিভাবকদের এমন প্রতীকী মূল্যায়ন নিয়েও আপত্তি ছিল। এ বিষয়ে কমিটির একজন সদস্য জানান, এর বিকল্প তারা খুঁজে পাচ্ছেন না। অভিভাবকদের মনস্তাত্ত্বিক প্রতিযোগিতা থেকে বের হতে হবে- এ জন্য আক্ষরিক নম্বরভিত্তিক ফল থেকে মুক্তি মিলবে। অসুস্থ প্রতিযোগিতার জন্য কোচিং প্রাইভেট নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করছেন অভিভাবকরা।
নতুন কমিটির সুপারিশে এখনো পরীক্ষা সময় নির্ধারণ নিয়ে মতৈক্য রয়েছে বলে জানা গেছে। কেউ বলছেন পাঁচ ঘণ্টার পরীক্ষা। কেউ চাচ্ছেন তিন ঘণ্টার পরীক্ষা হবে কেন্দ্রে।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, বলা হচ্ছে পাঁচ ঘণ্টায় এসএসসি পরীক্ষা হবে। কিন্তু সেটা আসলে চাহিদার ওপর নির্ভর করে। কোনো বিষয়ের পরীক্ষা দুই ঘণ্টায়ও হয়ে যেতে পারে। সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টার কথা বলা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, নতুন কারিকুলামের উল্লেখযোগ্য বিষয়সমূহ- বাতিল হচ্ছে সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতি। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা থাকছে না। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা থাকছে না। প্রাথমিক শ্রেণিতে সবার জন্য ৮টি বই এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ১০টি বই পড়তে হবে। শুধু এসএসসিতে গিয়ে প্রথম পাবলিক পরীক্ষা হবে। এসএসসি পর্যায়ে কোনো বিভাগ থাকবে না। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির দুইটি পাবলিক পরীক্ষার সমন্বয়ে ফলাফল হ্ওয়ার কথা রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে দুইদিন (শুক্র ও শনিবার)।