নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে তিনটি চ্যালেঞ্জ দেখছেন শিক্ষাবিদরা
নিউজ ডেস্ক।।
প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণির নতুন কারিকুলাম রূপরেখাকে সাধুবাদ জানালেও এটি বাস্তবায়নে তিনটি চ্যালেঞ্জ দেখছেন শিক্ষাবিদরা। জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা অনুযায়ী, তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে পরীক্ষা পদ্ধতি থাকছে না। বিদ্যমান পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষাও বাতিল হবে। নবম শ্রেণিতে থাকবে না বিভাগ বিভাজন- বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা।
দশম শ্রেণি পর্যন্ত অভিন্ন বিষয়গুলো পড়তে হবে। এমনকি দশম শ্রেণির পাঠ্য বিষয়ের ওপর হবে মাধ্যমিকের পাবলিক পরীক্ষা। এইচএসসির মূল্যায়ন হবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির দুই পরীক্ষায়। ২০২৩ সাল থেকে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন হবে এ কারিকুলাম। কারিকুলামের উল্লিখিত পরিবর্তন পদ্ধতি সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এটি ভালো সিদ্ধান্ত। আসলে নবম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন না থাকাই ভালো ছিল।
এখন তুলে দিচ্ছে এবং সেটি ভালো পদক্ষেপ বলে আমি মনে করি। মাধ্যমিকে এই বিভাজন খুব কার্যকর হয় না। ওই লেভেলে শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না যে, কোন স্ট্রিমে তারা যাবে। অনেক সময় অভিভাবকদের চাপে চলে যায়। কিন্তু পরে বুঝতে পারে যে, সেটি তার জন্য যথার্থ নয়। কিন্তু তখন আর তার ফেরার কোনো পথ থাকে না। তাই আমার মনে হয়,
ইন্টারমিডিয়েটে গিয়ে শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নেবে যে কোন বিভাগে যাবে। এর আগে একটা জেনারেল এডুকেশন থাকা দরকার। যার মাধ্যমে তারা সব কিছু সম্পর্কে জানবে এবং অন্য বিষয়গুলোর সঙ্গে ইন্টারেকশন করতে পারবে। তবে আমি মনে করি, শিক্ষার্থী তার আগ্রহের ওপর ভিত্তি করে সাবজেক্ট নেবে। এ অপশনটা থাকা দরকার।
শিক্ষার কারিকুলাম সময়ে সময়ে পরিবর্তন-পরিমার্জন করতে হয় উল্লেখ করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কায়কোবাদ বলেন, একই বিষয় দীর্ঘদিন পড়ানো হয় না। সময়ের প্রয়োজনে বৈশ্বিক চাহিদার ভিত্তিকে এটি পরিমার্জনের প্রয়োজন পড়ে। আমাদের যে কারিকুলাম এতদিন চর্চা করছি, এটি নিয়ে সরকারের নিশ্চয় কোনো গবেষণা থাকতে পারে যে, এ মুহূর্তে এর চেয়ে আরও উন্নত দক্ষতা অর্জন করতে হবে আমাদের। সেই পথে যেতেই নতুন কারিকুলামের প্রয়োজন।
এটি ইতিবাচক উদ্যোগ। এখন দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থী পাঠ্যক্রম একই থাকবে। এতে তাদের শেখার ভিত্তি শক্ত হবে। একাদশ শ্রেণিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা বিভাগ বা শাখায় ভাগ হয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবে। একটি নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের পর ফল পেতে দীর্ঘ সময় লাগে, এর বড় চ্যালেঞ্জ থাকবে। শুধু কারিকুলাম পরিবর্তন নয়, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো, শিক্ষায় বরাদ্দ এসবেও নজর দিতে হবে।