দুর্নীতি হচ্ছে বলেই দেশে উন্নতি হচ্ছে: কুবি উপাচার্য
কুমিল্লাঃ দেশে দুর্নীতি হচ্ছে বলেই উন্নয়ন হচ্ছে মন্তব্য করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, দুর্নীতি কখনোই উন্নয়নের জন্য বাধা নয়।
তিনি বলেন, ‘আমাকে একলোক এসে বলে স্যার, এ দেশে দুর্নীতির কারণে উন্নতি হচ্ছে না। আমি বলি, উল্টোটা করে বলো না কেনো। দেশে দুর্নীতির হচ্ছে দেখেই তো উন্নতি হচ্ছে। এটা নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন কথা বলতে পারে। কিন্তু এই যে ঘুষ খায়, এজন্য মানুষ পদ্মার পাড়ে যায় ইলিশ খেতে। এতে পদ্মার পাড়ের গরিব মানুষরা ধনী হচ্ছে।’
সোমবার (৩১ জুলাই) দুপুরে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের কনফারেন্স রুমে মার্কেটিং বিভাগের নবীনবরণ ও প্রবীণ বিদায় অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকালীন অবস্থান, ভবিষ্যৎ ও শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।
তিনি আরও বলেন, ‘অর্থনীতির সক্ল মেশিনারিজগুলো তখন কাজ করে। কারণ আমাদের হাতে এখন পয়সা আছে। পয়সা আসছে কোথায় থেকে, ঘুস থেকে। এই বিষয় নিয়ে অর্থনীতিবিদরা কখনো কোনো বিরূপ মন্তব্য করবে না। তবে যারা পলিটিক্যাল ইকোনমি নিয়ে কাজ করে, তারা দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে থাকে। যারা নৈতিকতা নিয়ে কাজ করে তাদের কাছে খারাপ। তবে অর্থনীতির জায়গা থেকে যদি বলো, দুর্নীতি কখনোই উন্নয়নের জন্য বাধা নয়। তাহলে চায়না কেনো এত উন্নত। চায়নাতে সবাই দুর্নীতি করে।’
অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘ইতিবাচক চিন্তা ও সৃজনশীলতা শিক্ষার্থীদের প্রতিভাকে বিকশিত করে তোলে। নবীন শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় মেধার স্বাক্ষর রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। তাদের সৃজনশীলতা বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যাবে। যারা বিদায় নিবে তারাও বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ হয়ে থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা একবার ভর্তি হয়, আজীবন তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় বহন করে। নবীন ও বিদায়ী শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মেধার স্বাক্ষর রেখে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যান্ডিং করবে।’
‘মনে রাখবা বস অলওয়েজ রাইট। চাকরির বাজারে কখনো বিপ্লব করতে যেও না। সেখানে বিপ্লব করতে গেলে পরিবার নিয়ে সমস্যায় পড়তে পারো। আর শিক্ষার ক্ষেত্রে নিজেরা ক্লাসে সমস্যা নিয়ে আসবে। সেখানে শিক্ষকদের সমন্বয়ে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করবে। আর সবসময় অথেনটিক লার্নিং শিখতে হবে। অ্যাকাডেমিক যে পড়াশোনা সেটা শুধু একটি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করে দিবে। সেজন্য নিজেদের অথেনটিক লার্নিংয়ের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।’
গবেষণা ও বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকেই গবেষণা নিয়ে মজা করে থাকে। বলে থাকে গবেষণার আমল। কিন্তু গবেষণা কি খারাপ জিনিস। তোমরা যাদের পাঠ্যবই পড়, তারা প্রত্যেকেই অ্যাকটিভ রিসার্চার। গবেষণার মাধ্যমেই বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিংয়ে এগিয়ে যাবে। আমি আসার পর থেকেই এটি নিয়ে কাজ করছি। আশা করি আগামী কয়েক বছর পরে দেশের একটি লিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। এজন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়ের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন সরকার, মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজুর রহমানসহ অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০২/০৮/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়