দুই জন করে শিক্ষক দিয়ে চলছে এক উপজেলার ২৭টি সরকারি বিদ্যালয়ে
খাগড়াছড়িঃ জেলার মানিকছড়ি উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। দুই জন করে শিক্ষক দিয়ে চলছে উপজেলার ২৭টি বিদ্যালয়ের পাঠদান। জেলা বা উপজেলা সদরের আশপাশের বিদ্যালয়ে শিক্ষক থাকলেও দুর্গম এলাকার বিদ্যালয়গুলো প্রায় শিক্ষকশূন্য। তবে শিক্ষক সংকট নিরসনে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে ৭২ কিলোমিটার দূরের ভূদং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১১০ জন। মানিকছড়ি উপজেলার দুর্গম এই বিদ্যালয়ে রয়েছে মাত্র দুই জন শিক্ষক। শিক্ষক স্বল্পতা কারণে দুটি করে শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একটি কক্ষে পাঠদান করা হচ্ছে। প্রাক প্রাথমিকসহ ছয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদানের হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষকরা। দাফতারিক কাজে একজন শিক্ষক উপজেলা সদরে বলতে গেলে একজন শিক্ষকই পুরো বিদ্যালয়ে পাঠদান করেন।
শিক্ষক আবুল কালাম ও অংগ্য মারমা বলেন, ‘আমরা কেবল দুইজন শিক্ষকই আছি। দেখা যাচ্ছে ক্লাস ওয়ানে পড়ালে শিশু শ্রেণি গ্যাপ যাচ্ছে। আমরা বাধ্য হয়ে দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একসঙ্গে পাঠদান করাচ্ছি। এভাবে তো শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা যায় না।’
কেবল ভূদং পাড়ায় নয়, জেলার অধিকাংশ বিদ্যালয়ের চিত্র প্রায় একই রকম। এর মধ্যে ২৭টি বিদ্যালয়ে দুই জন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান চলছে। জেলা বা উপজেলা সদরের আশপাশে বিদ্যালয়ে শিক্ষক পর্যাপ্ত থাকলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় দুর্গম এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট আরও তীব্র। বর্তমানে ৪৫৭টি সহকারী ও ২৯৪টি প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।
আরও পড়ুন: জাতীয় শিক্ষার্থী মূল্যায়ন ২০২২ /প্রাথমিক শিক্ষায় ঢাকা-ময়মনসিংহ এগিয়ে, পিছিয়ে সিলেট বিভাগ
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি খাগড়াছড়ির সাধারণ সম্পাদক কার্তিক ত্রিপুরা বলেন, ‘৫৯৩টি বিদ্যালয়ে ৪৫৭টি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়া ২৯৪টি প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।’
খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাহাব উদ্দিন জানান, শিক্ষক সংকট নিরসনে শূন্য পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান। মামলা হওয়ায় বর্তমানে ২৫৮ জন শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পর নতুন শিক্ষক নিয়োগ হলে সংকট অনেকটা দূর হবে। এছাড়া প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে যেসব সহকারী শিক্ষক রয়েছেন তাদের পদোন্নতি হলে প্রধান শিক্ষকের সংকটও কিছুটা কমে আসবে।
এদিকে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতে যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
খাগড়াছড়ি জেলায় ৫৯৩টি সহকারী শিক্ষক ও ৩ হাজার ১৬টি সহকারী শিক্ষকের পদ রয়েছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২০/০৮/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়