দপ্তরির থাপ্পড়ে শ্রবণশক্তি হারালো স্কুল ছাত্র
মাদারীপুরের শিবচরের ৭৩ নম্বর বাখরেরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি আব্দুল হান্নান ফরাজীর থাপ্পড়ে ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র। শ্রবণশক্তি হারিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে ওই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ও শিকদারকান্দি গ্রামের মাহবুব আলমের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিবুল ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ছাত্রের বাবা।
আহত শিক্ষার্থী বলেন, ‘গত ২৪ জানুয়ারি দুপুরে দপ্তরি হান্নান কাকা বিদ্যালয়ের সিঁড়ির নিচে ঝাড়ু দিচ্ছিলেন। এসময় একটি ঝুড়িতে ময়লা রাখছিলেন তিনি। শিক্ষার্থীরা সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামার সময় কোনও এক ছাত্রের পায়ে লেগে ঝুড়ি থেকে ময়লা পড়ে যায়। সে সময় সিঁড়ি দিয়ে নামতে গেলে হান্নান কাকা আমার কানে থাপ্পড় দেন। আমি মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে যাই। পরে স্যাররা আমাকে উঠিয়ে পানি ঢেলে অফিস রুমে নিয়ে যান। আর এ ঘটনা আমার পরিবারকে জানাতে নিষেধ করেন।’
এ বিষয়ে ওই ছাত্রের বাবা মাহবুব আলম বলেন, ‘ঘটনার তিন দিন পরে আমার ছেলের কানে ব্যথা হয়। এরপর আমি তার কাছ থেকে সবকিছু শুনি। ওইদিন বিকেলে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয় তাকে। দুই দিন পরে আমি তার বিদ্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি জানতে চাই। ছেলের কানে ব্যথা আরও বাড়লে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যাই। পরে চিকিৎসক জানান, সে ৯৩ শতাংশ শ্রুবণশক্তি হারিয়ে ফেলেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে আগে ঘটনা জানালে সময়মতো চিকিৎসা করালে হয়তো ছেলেটির কানে এ সমস্যা হতো না। পরে বাড়ি ফিরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘটনা জানাই। তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি দেখতে বলেন। আমি এর বিচার চাই।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সামচুল আলম বলেন, ‘ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত। আমি বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে মিটিং করেছি। বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত দপ্তরিকে বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রকে কানে থাপ্পড় দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ইউএনও আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি সংশ্লিষ্ট সহকারী থানা শিক্ষা অফিসারকে (এটিইও) প্রধান করে তিন সদস্যর কমিটি করেছি। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’