তবুও সোহাগের পাশে কাজী সালাউদ্দিন
শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ শুরুটা হয়েছিল ২০১১ সাল থেকে। তারপর বটবৃক্ষ হয়েছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। ছায়া দিয়েছেন আবু নাঈম সোহাগকে। তাকে করেছেন দেশের ফুটবলের সাধারণ সম্পাদক। আজ সেই সোহাগ পড়েছেন ফিফার নিষেধাজ্ঞার কবলে। দুই বছরের জন্য তাকে দূরে থাকতে হবে ফুটবল থেকে। তবুও সালাউদ্দিনের ছায়া তার মাথার ওপর থেকে সরেনি। ঘোর বিপদেও তিনি আছেন তার পাশে।
ফিফা থেকে সোহাগ নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পেরুনোর আগেই বাফুফে ভবনে হাজির হয়েছিলেন সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। শনিবার সকাল থেকেই তার অপেক্ষায় ছিলেন গণমাধ্যমকর্মীরা। অবশেষে দুপুর গড়াতেই তিনি আসেন। এসে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন। তবে সেটা ৫ মিনিটও স্থায়ী হয়নি।
সম্মেলন কক্ষ ছেড়ে যাওয়ার আগে বলেছেন, ‘কালকে আমিও জানতে পেরেছি এটা। কিছু ডকুমেন্ট পড়েছি, পুরোপুরি পড়তে পারিনি। নিষেধাজ্ঞা যখন দেখা হয়েছে, উনাকে বাফুফেতেও নিষিদ্ধ করা হয়ে গেছে। পরে জরুরি সভা ডেকে সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলাম। দুজন সহসভাপতি দেশের বাইরে আছেন, কাল পৌঁছাবেন। পরের পদক্ষেপ কি নেবো, পরশু মিটিং করে সবাইকে জানিয়ে দিব।’
তদন্তের জন্য ফেব্রুয়ারিতে সোহাগসহ চারজন বেতনভুক্ত কর্মকর্তা জুরিখে গিয়েছিলেন। সালাউদ্দিন তখনই এমন কিছুর ইঙ্গিত পেয়েছিলেন বলে জানান, ‘ওরা যখন জুরিখে গেছে, তখনই শুনেছি কিছু চলছে। নৈতিক কমিটি যখন কাজ করছে, তখন কিছু একটা করবে ওরা।’
সোহাগ ইস্যুতে ৫১ পাতার চিঠি নিয়ে এক প্রশ্নে সালাউদ্দিনের জবাব, ‘ওরা কিন্তু আর্থিক বিষয় নিয়ে লেখেনি। আচরণবিধি ও নীতি এবং দায়ের কথা বলেছে। বোর্ড মিটিংয়ে কথা বলে জানাবো আমাদের।’
রাতেই সোহাগের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছেন সালাউদ্দিন, ‘সোহাগের সঙ্গে রাতে কথা হয়েছে। তিনি মনে করছেন, তার ওপর অবিচার করা হয়েছে। আদালতে যাবেন।’
বুয়েট থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে ২০০৬ সালে সোহাগ যোগ দেন বাফুফেতে। ছিলেন ফেডারেশনের ছাপোশা কম্পিটিশন ম্যানেজার। তবে আবু নাঈম সোহাগের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায় ২০১১ সালে। সে বছরই পেয়ে যান বাফুফের নির্বাহী ক্ষমতা। প্রথম বেতনভুক্ত সাধারণ সম্পাদক আল মুসাব্বির সাদীর অকাল মৃত্যুর পর সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন সোহাগকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিয়োগ দেন। পরের বছর থেকে তিনি পুরোদস্তুর সাধারণ সম্পাদক।
সেই থেকেই সালাউদ্দিনের ঘনিষ্ট সহচর হয়ে ধীরে ধীরে মহীরুহ রূপ নেন সোহাগ। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে একচ্ছত্র রাজত্ব কায়েম করে অনিয়ম দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য বানিয়ে ফেলেছিলেন বাফুফেকে।
অতি সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসে ফুটবল প্রশাসন করায়ত্ব করে নামে-বেনামে অসংখ্য সম্পদের মালিক হয়েছেন। সালাউদ্দিনের ব্যাংক চেক পেয়ে বছরের পর বছর ফুটবলের আয়-ব্যায়ে দিয়েছেন নিজের ইচ্ছে মতো। ক্ষমতার জোড়ে তিনি সরকার ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কেও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে ছাড়েননি।
তবে এত সুখ তার সইলো না। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা শুক্রবার বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিনে তাকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে। আর এই নিষেধাজ্ঞার খবর প্রকাশ হতেই জানা গেছে, কি কারণে এত বছর ধরে সোহাগ আঁকড়ে ধরে আছেন বাফুফের এই পদ? সম্প্রতি তাকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তিনি অনিচ্ছুক ছিলেন। কেন তিনি সেটা করতে চাননি, সেটাও এখন পরিষ্কার হয়ে গেছে। যদিও বাফুফে সভাপতির আশীর্বাদের ছায়া এখনও অটুট আছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৫/০৪/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়