ঢাবি শিক্ষক সমিতি: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পথে আওয়ামীপন্থি প্যানেল
ঢাকাঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ২০২৪ সালের কার্যকরী পরিষদের নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। তারা অংশগ্রহণ না করায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের প্রার্থীরা।
আগামী ১২ ডিসেম্বর ভোটের তারিখ নির্ধারণ করেছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। গত বুধবার রাত ৮টা পর্যন্ত ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ সময়। আগামী শুক্রবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন।
তবে নীল দলের বাইরে কোনো প্যানেল কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেননি বলে নিশ্চিত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল রউফ মামুন। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, নীল দলের প্যানেলের ১৫ জন প্রার্থী ব্যতীত অন্য কোনো প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেননি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১২ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে।
এবারের নির্বাচনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নীল দল থেকে পুনরায় মনোনয়ন পেয়েছেন শিক্ষক সমিতির বর্তমান সভাপতি পুষ্টি ও খাদ্য-বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা।
এছাড়াও নীল দলের প্যানেলে আছেন- সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস ছামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. মো. মিজানুর রহমান। সদস্য হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন- অধ্যাপক ড. জিয়াউর রহমান, অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির, অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভূইয়া, অধ্যাপক ড. নেসার হোসাইন, অধ্যাপক ড. সীমা জামান, অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান, অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল, অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ, অধ্যাপক ড. সিকদার মনোয়ার মোর্শেদ। সব ঠিক থাকলে তারাই আগামী এক বছর শিক্ষক সমিতির দায়িত্ব পালন করবেন।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। দলটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, সাদা দল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী একটি পেশাজীবী সংগঠন। নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনে বিশ্বাসী বলে দলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ফোরামের নির্বাচনে সবসময় অংশ নিয়ে আসছে। এরই ধাবরাবাহিকতায় ফলাফল যাই হোক না কেন, সবসময় এ দলটি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনেও অংশ গ্রহণ করে। কিন্তু এবার বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আসন্ন নির্বাচনে অংশ গ্রহণের পরিবেশ অনুকূল বলে আমরা মনে করি না। দেশে একটি একতরফা জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বর্তমান সরকার এবং তাদের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন। এর প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহের পরিচালিত আন্দোলনে আমরাও সমর্থন জানিয়ে আসছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে আসন্ন শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার চেয়ে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে পরিচালিত আন্দোলনের গুরুত্ব অনেক বেশি। আমরা চাই না, শিক্ষক সমিতি নির্বাচিত হোক যেটি ভোটাধিকার হরণকারী অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিস্ট সরকারের হাতকে শক্তিশালী করবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, সাদা দলের যুগ্ম-আহবায়ক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান প্রমুখ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ২০২২ সেশনের কার্যকরী পরিষদ নির্বাচনেও জয় লাভ করেছিল নীল দল। ১৫টি পদের ১৪টিতে জয় লাভ করেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত নীল দলের প্রার্থীরা। এতে সভাপতি হন আইন বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. মো রহমত উল্লাহ এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন পুষ্টি ও খাদ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০২/১২/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়