ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনা দরকার
ঢাকাঃ শিক্ষা একটি দেশের উন্নয়নের মূল বুনিয়াদ। বিশেষত প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। প্রাথমিক শিক্ষার মধ্য দিয়ে একটি শিশুর শিক্ষার ভিত তৈরি হয়। সারাবিশ্বে শিশু শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ সবাই বিশ্বাস করে আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। সেদিক থেকে বাংলাদেশ কতটা পিছিয়ে সেটা বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষার কাঠামো দেখলেই বোঝা যায়।
সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার হাল আগের থেকে বদল হলেও মফস্বলে গেলে বাস্তব চিত্রটা ফুটে ওঠে। ছাত্রদের স্বপ্নবান করে তোলার এবং তাকে পথ দেখানোর শিক্ষা দেয়ার মানের শিক্ষক খুবই কম। শিক্ষার উন্নয়ন মানে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন আগে- এটাই ভাবার কেউ নেই।
এক বছরের ব্যবধানে দেশে প্রাথমিক স্তরের প্রায় আট হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এগুলো সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি করোনাকালীন প্রাথমিক স্তরের ১৪ লাখ শিক্ষার্থী কমে গেছে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের করা বার্ষিক প্রাথমিক বিদ্যালয় শুমারিতে (এপিএসসি) উঠে এসেছে।
করোনাকালে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পঠনপাঠনের ক্ষতি নিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের এই তথ্য জানান। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, এটা আসলে করোনাকালীন সময়ের চিত্র। সে সময় কিন্ডারগার্টেন টাইপের স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী ছিল না, স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় কিছু কিছু চালু হচ্ছে। করোনাকালীন যে ১৪ লাখ শিক্ষার্থী চলে গিয়েছিল তারা কি আবার ফিরতে শুরু করেছে?
জানতে চাইলে ফরিদ আহাম্মদ বলেন, করোনাকালীন দুই বছর তো শিক্ষা উপবৃত্তি দেয়া বন্ধ ছিল। পাশাপাশি ‘মিড ডে মিল’ কর্মসূচিও বন্ধ ছিল। এগুলো আবার চালু হয়েছে। কিন্তু একবার পড়াশুনা ছেড়ে দেয়া কিশোরদেও ফিরিয়ে আনা কতটা কষ্টসাধ্য তা ভুক্তভোগীরা জানে। শৈশব চায় স্বাধীনতার সাধ। কাজে ঢুকে গেলে সেখান থেকে বেরিয়ে পড়াশুনায় মনোযোগ অনেক কষ্টের কাজ।
২০২২ সালের শুমারিতে এই সংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজারের নিচে নেমে এসেছে, মানে ৮ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর নেই। ২০২১ সালের বার্ষিক প্রাথমিক বিদ্যালয় শুমারির তথ্যে দেখা গিয়েছিল, সে বছর কিন্ডারগার্টেনসহ সব মিলিয়ে দেশে মোট ১৪ হাজার ১১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় কমেছিল। যেসব শিক্ষার্থী অভাবে পড়েছে তাদের কওমি মাদরাসাগুলো থাকা-খাওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে সেখানে নিয়ে গেছে। এখন সেখান থেকে কিছু কিছু ফিরে আসছে। তবে সবাই আসছে না। তবে গ্রামাঞ্চলে অজস্র পড়ুয়া ঝরে পড়েছে।
এছাড়া করোনার পরে জীবন-যাপনের যে ব্যয় বেড়েছে তাদের ঝরে পড়া বড় একটি অংশের শিক্ষার্থী কাজে ঢুকে গেছে পরিবারে জোগান দিতে। করোনার পর থেকে বাল্য বিয়ে বেড়েছে । এসবচিত্র গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। তারপরও ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে সরকার কাজ করছে। তাদের যতটা ফিরিয়ে আনা যাবে ততটাই দেশ ও দশের জন্য মঙ্গলের।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৯/০৫/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়