জাতীয় শিক্ষাক্রমে যেসব পরিবর্তন আসছে
নিউজ ডেস্ক।।
২০২৩ সাল থেকে শুরু হতে যাওয়া নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রমে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। ২০২৩ সালে প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে এই শিক্ষাক্রম শুরু হবে। এরপর ২০২৪ সালে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণি, ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণি, ২০২৬ সালে একাদশ শ্রেণি এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে।
২০২৩ সাল থেকে শুরু হতে যাওয়া নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরখো সোমবার (৩০ মে) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) যৌথ সভায় রূপরেখাটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘সংবেদনশীল, জবাবদিহিমূলক একীভূত ও অংশগ্রহণমূলক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নতুন শিক্ষাক্রমের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। শিক্ষার্থীর দৃষ্টিভঙ্গি, জ্ঞান যোগ্যতা মূল্যবোধ ও দক্ষতা বাড়াতে জাতীয় শিক্ষাক্রমের মূল ভিত্তি তৈরি করা হয়েছে। যোগ্যতা নির্ধারণে শিক্ষার্থীদের প্রেরণা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।’
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘কোনও কিছু খুব সহজে হয় না। এটাও (শিক্ষাক্রম পরিবর্তন) বড় পরিবর্তন। সেই পরিবর্তন সহজ হবে না। এতে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থী সবার সহযোগিতা লাগবে। দিন-রাত অনেক বিশেষজ্ঞ কাজ করছেন, তাদের উৎসাহিত করবেন। নতুন কারিকুলামে কোনও শিক্ষার্থীর না পারার কথা নয়। যত্নের সঙ্গে টিচার গাইড তৈরি হচ্ছে। তারা ‘টিচার গাইড’ অনুসরণ করে পড়াবেন। আসলে অনেক বেশি পড়ানোর চেয়ে শিক্ষকরা অনেক বেশি গাইড করবেন। শিক্ষার্থীরা নিজেরা নিজেরাই তাদের সমস্যার সমাধান করতে পারবে। সেভাবেই বই লেখা হবে।’’
উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বরে নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যেসব ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন
১. জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন।
২. জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা অনুযায়ী ২০২৩ সাল থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা থাকবে না।
৩. এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়া হবে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে।
৪. একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে দুটি পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া হবে।
৫. বোর্ডের অধীনে নেওয়া হবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির দুই পরীক্ষা। এই দুই পরীক্ষার ফলের সমন্বয়ে এইচএসসির ফল চূড়ান্ত করে প্রকাশ করা হবে।
৬. ২০২৩ সাল থেকে শিক্ষার্থীরা দশম শ্রেণি পর্যন্ত অভিন্ন সিলেবাসে পড়বে। থাকবে না বিজ্ঞান, মানবিক বা বাণিজ্য বিভাগ বিভাজন।
৭. নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার ক্ষেত্র হচ্ছে— প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ভাষা ও যোগাযোগ, গণিত ও যুক্তি, জীবন ও জীবিকা, সমাজ ও বিশ্ব নাগরিকত্ব, পরিবেশ ও জলবায়ু, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা, মূল্যবোধ ও নৈতিকতা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি।
৮. প্রাক-প্রাথমিকে শিশুদের জন্য আলাদা বই থাকবে না।