জাতীয়করণ ও শতভাগ ঈদ বোনাস প্রদানের দাবি করলো বাশিস
নিউজ ডেস্ক।।
মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ ও ২৫% এর পরিবর্তে শতভাগ ঈদ বোনাস প্রদানের দাবি করে শিক্ষামন্ত্রীর নিকট আবেদন জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। গতকাল সমিতির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম রনি মহাসচিব মো. মেজবাহুল ইসলাম প্রিন্স স্বাক্ষরিত এডুকেশন বাংলায় পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন, শিক্ষায় অবকাঠামোগত প্রভূত উন্নয়ন ঘটেছে কিন্তু বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এখনো চরম বৈষম্যমূলক, গতানুগতিক নানা ধারায় বিভাজিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে হয়তো আরো অনেক আগেই মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ হতো। বর্তমানে আপনার সরকার হাজার হাজার রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়েও কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ বা সরকারীকরণ করেছেন। কিন্তু একসাথে জাতীয়করণ না করার কারণে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক তথা পুরো দেশবাসী।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস) “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের” আদর্শে অনুপ্রাণিত দেশ প্রেমিক একটি শিক্ষক সংগঠন। এ সংগঠন বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও বহন করে। “বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শনকে” বুকে ধারণ করে শিক্ষা ক্ষেত্রে লড়াকু সৈনিক হিসেবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আপনার অবগতির জন্য আরো জানাচ্ছি যে, ১৯৭২ এর সংবিধানের ১৭(ক) ধারায় “বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শন অবৈতনিক শিক্ষার” কথা তথা জাতীয়করণের কথা উল্লেখ থাকলেও স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বরং এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী এবং সরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য আকাশ ছোঁয়া।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারিদের প্রাপ্তি
১। বর্তমানে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী শুধুমাত্র মূল বেতনের শতভাগ বেতন প্রদান করা হয়।
২। বাড়ী বাড়া নির্ধারিত ১০০০ টাকা
৩। চিকিৎসা ভাতা নির্ধারিত ৫০০ টাকা
৪। উৎসব বোনাস শিক্ষক ২৫%; কর্মচারি ৫০%।
৫। ১২,৫০০ টাকা এবং ১৬,০০০ টাকা স্কেলে নিয়োগকৃত সহকারি শিক্ষকদের পরবর্তী বেতন স্কেল নির্ধারণ নাই।
৬। সরাসরি প্রমোশন নাই এবং বদলিও নাই।
৭। প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল ২৯,০০০ টাকা (৭ম গ্রেড) ।
৮। বিভাগীয় ভাতাদি নাই।
৯। এককালীন সামান্য অবসর ভাতার ব্যবস্থা আছে, কিন্তু মাসিক পেনশন নাই।
১০। অভিভাবকগণকে তাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য অনিয়ন্ত্রিত ও ব্যাপক ব্যয় করতে হয়।
১১। শিক্ষকের সন্তানদের জন্য শিক্ষা ভাতা নেই।
সরকারি শিক্ষক ও কর্মচারিদের প্রাপ্তি
১। ২০১৫ এর জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী সকল সুযোগ সুবিধাসহ বেতন প্রদান করা হয়।
২। স্কেল ভিত্তিক পূর্ণ বাড়ি ভাড়া প্রদান করা হয়।
৩। চিকিৎসা ভাতা ১৫০০ টাকা।
৪। উৎসব বোনাস স্কেল ভিত্তিক প্রদান করা হয়।
৫। পরবর্তী স্কেল নির্ধারণকৃত ও চলমান আছে।
৬। ধারাবাহিক প্রমোশন আছে ও বদলির ব্যবস্থা চলমান।
৭। প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল ৩৫,৫০০ টাকা (৬ষ্ঠ গ্রেড)
৮। বিভাগীয় ভাতার ব্যবস্থা আছে।
৯। পরিপূর্ন অবসর ভাতাসহ মাসিক পেনশন আছে।
১০। অভিভাবকগণকে তাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য স্বল্প ও নির্ধারিত ব্যয় করতে হয়।
১১। শিক্ষকের সন্তানদের জন্য শিক্ষা ভাতা আছে।
এছাড়াও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ২৫% ঈদ বোনাস দীর্ঘ ১৭ বছরেও পরিবর্তন হয়নি। অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকগণ দীর্ঘ ২৮ বছরেও এমপিওভুক্ত হতে না পেরে চরম অর্থসংকটে দিনযাপন করছেন।
বেতন বৈষম্য থাকায় শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন হচ্ছে না। শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নসহ বিশ্ব মানের শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়নে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ ঘোষণা অতীব জরুরী।