চাকরি ছেড়ে সফল ইউটিউবার ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী
শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ ইউটিউব নামটির সাথে পরিচিত নয় এমন মানুষ নেই বললেই চলে । বলা হয়ে থাকে ইউটিউবে এমন কোনো ভিডিও নেই যে পাওয়া যায় না । এসব ভিডিও যারা তৈরি করেন, তাদেরকে বলা হয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। সরকারী বাঙলা কলেজ থেকে স্নাতক এবং ঢাকা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরি ছেড়ে সফল একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের গল্প কথা তুলে ধরব আজ আপনাদের সামনে। প্রতিটি সফল মানুষের জীবন সংগ্রামে কিছু আত্মগল্প লুকিয়ে থাকে’। তেমনি একজন "জয় চৌধুরী" তিনি বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় স্যোসাল মিডিয়া ইউটিউবে "𝐉𝐎𝐘 𝐕𝐋𝐎𝐆𝐒 𝐁𝐃" এবং ফেসবুকে "𝐉𝐎𝐘 𝐕𝐋𝐎𝐆𝐒 𝐁𝐃" নামে স্যোসাল মিডিয়া প্লাটফর্মে ব্র্যান্ড প্রমোশনাল ভিডিও তৈরি করে নিজের আত্মকর্মসংস্থান করেছেন।
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের একটা সাধারণ পরিবার থেকে বেড়ে ওঠা জয় চৌধুরী গ্রামের স্কুল-কলেজ থেকেই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে রাজধানীর মিরপুর বাঙলা কলেজ থেকে স্নাতক এবং ঢাকা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন।
চাকুরি জীবন
চাকুরি জীবন শুরু করেন দেশের স্বনামধন্য এনজিও ব্র্যাকের মাধ্যমে। এছাড়াও বসুন্ধরা গ্রুপ, আকিজ গ্রুপ ছাড়াও বেশ কিছু নামিদামি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন।
চাকুরি ছেড়ে ইউটিউবে আসার কারণ
জয় বলেন, দেশে সর্ব প্রথম যখন করোনা মহামারী শুরু হয়। ছোট বড় অনেক বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চাকুরীজীবিদের ছাটাই করা হয়। ঠিক আমিও সেই তাদের দলে পড়ে যাই। আমিও আমার চাকরি টা না হারালেও ঠিক মত বেতন ভাতা পেতাম না। সেই থেকে মাথায় ঘুরতে থাকে নিজে কিছু একটা করতে হবে। ঘরে বসে কি করা যায় সেটা চিন্তা করতে করতে, অবশেষে ইউটিউব কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করতে শুরু করি।
ইউটিউব নিয়ে হতাশা হয়নি?
তিনি বলেন, দীর্ঘ একটি বছর কাজ করেও যখন কোন সফলতা আসেনি, খুব ভেঙে পড়েছিলাম। এই দীর্ঘ সময় আমাকে সকল প্রকার মানসিক সাপোর্ট দিয়েছে আমার স্ত্রী। সাহস যুগিয়েছে, শক্তি যুগিয়েছে। দীর্ঘ দেড় বছরের অধিক সময় কাজ করার পর এখন আমি একটা পর্যায়ে আসতে পেরেছি।
ইউটিউবে সফলতাঃ
সফলতা প্রতিটি মানুষেরই ভিন্ন হয়। তাই সফলতার সঙ্গা টাও হয়তো ভিন্ন। তবে যদি খুব সহজ ভাবে বলি, আমরা সফল মানুষ তাদেরকেই বলি, যারা নিজেদের জীবনের চূড়ান্ত ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তারাই সফল। হয়তো সব সফল মানুষের গল্প সবাই জানে না। কিছু সফল মানুষের গল্প হয়তো অজানাই রয়ে যায়। তেমনি আমিও একজন। একজন ইউটিউবার হিসেবে আমি মনে কর সবসময় নিজের ইচ্ছাশক্তি এবং দৃঢ় মনো বল নিয়ে এগিয়ে গেলেই সফলতার পথ খুঁজে পাওয়া যায়। নিজের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে কখনো ধৈর্যহারা হওয়া যাবে না। সফলতা অবশ্যই ধরা দেবে।
যুব সমাজের উদেশ্যে কিছু কথাঃ
আমি একটা কথাই বলব কোন কাজই ছোট নয়। উদ্দেশ্য যদি সৎ হয় এবং নিজের প্রচেষ্টা যদি দৃঢ় হয় সফলতা আসবেই। যারা কন্টেন্ট ক্রিয়েট করেন তারা জানেন একটা কন্টেন্ট ক্রিয়েট করতে কতোটা কষ্ট হয়। কত রাত জাগা, কত নির্ঘুম রাত, কতোটা সময় দিতে হয় একটা ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করতে। শুরুতে হয়তো আপনি অনেক বেশি হতাশায় ভুগবেন, কিন্তু লেগে থাকুন সফলতা একদিন না একদিন আসবেই। আর অবশ্যই ভিডিওতে নতুন নতুন আইডিয়া দেওয়ার চেষ্টা করবেন তাহলে আপনি সফল হবেন। অন্যের কোনো কিছু কপি করবেন না। নিজেই নিজের কন্টেন্ট তৈরি করুন, দেখবেন একদিন সফল হয়ে যাবেন। নতুনদের জন্য সবসময় পরামর্শ থাকবে আপনারা নতুন নতুন টপিক নিয়ে ভিডিও বানান । দর্শকরা কি চায় সেটা উপর ফোকাস দিন। তাহলে সফলতা সহজে ধরা দিবে।
ইউটিউবে কেমন আয় হয়?
দেখুন, উত্তরটা স্পষ্টভাবে আমি দিতে পারবো না। সর্ব প্রথম কারণ, ইউটিউব থেকে ফিক্সড ইনকাম হয় না। কখনো বেশি কখনো কম। যারা ইউটিউবে কাজ করেন তারা জানেন কেমন ইনকাম হয়। তবে এই টুকু বলতে পারি, একটা চাকুরিজীবী মানুষ যেমনটা আয় করেন, তাদের থেকে আমাদের আয় কম নয়। পরিবার নিয়ে চলতে পারি।
ইউটিউবে মনেটাইজেশন বা আয় করতে হলে কি করণীয়?
একটা ইউটিউব চ্যানেল মনেটাইজেশন পেতে হলে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ১২ মাসের মধ্যে আপনাকে ৪০০০ হাজার ঘণ্টা ওয়াচ টাইম এবং অর্জন করতে হবে। তাহলে আপনি মনেটাইজেশনের বা আয় এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২১/০৩/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়