চাকরির লোভ দেখিয়ে কোটি কোটি টাকার প্রতারণা
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরে সরকারি চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে প্রতারক চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতদের নাম- মো. জহিরুল ইসলাম ওরফে বাপ্পী ও এ এস এম জোবায়ের।
শনিবার রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম। তাদের কাছ থেকে ২টি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ৩টি ফ্যাক্সো সিল, ৩টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়রে এডমিনের সিল, মন্ত্রণালয়রে লোগো সম্বলিত আইডি কার্ড, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ৬টি নিয়োগপত্র, ভিজিটিং কার্ড, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গাড়ির স্টিকার ও উত্তরা ব্যাংক যশোর শাখার ১টি চেক বই, মন্ত্রণালয়ের সার্ভিস আইডি কার্ড, ভিজিটিং কার্ড, স্টিকার, সিল উদ্ধার করা হয়েছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ডিবি লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাস জানান, এম এম নিজাম উদ্দিন নামের একজন ভুক্তভোগীর বাড়ি ও গ্রেপ্তার জহিরুল ইসলামের শ্বশুরবাড়ি একই এলাকায়। ৫-৬ মাস আগে বাপ্পী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পার্সোনাল কাউন্সিলর পদে চাকরি পেয়েছে বলে তার শ্বশুরবাড়ির এলাকায় প্রচার করে। বাপ্পী তার শ্বশুরবাড়ির এলাকার মসজিদে এজন্য দোয়া মাহফিল ও মিষ্টি বিতরণ করেন। তাছাড়া তার শ্বশুরবাড়ি এলাকার এতিমখানায় দান-খয়রাত করেও সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
পরে বাপ্পী পদোন্নতি পেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিফ অডিট অফিসার হয়েছেন বলেও এলাকার প্রচার করেন।
এর কিছুদিন পর নিজাম উদ্দিন তার ছেলে ও ভাগ্নের চাকরির জন্য বাপ্পীর সাথে আলোচনা করেন। বাপ্পী নিজাম উদ্দিনের ছেলেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অডিট অফিসার এবং তার ভাগ্নেকে খাদ্য অধিদপ্তরের স্টোর কিপার পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে ১৬ লাখ টাকা দাবি করেন। নিজাম উদ্দিন বিভিন্ন সময়ে বাপ্পীকে ১১ লাখ টাকা দেন।
গত ৪ সেপ্টেম্বর নিজাম উদ্দিনের ছেলেকে সচিবালয়ের গেটে বাপ্পী এবং জোবায়ের অডিট অফিসার ও তার ভাগ্নেকে খাদ্য অধিদপ্তরের স্টোর কিপার পদে চাকরির ২টি নিয়োগ পত্র দেন। কিন্তু নিজাম উদ্দিন নিয়োগ পত্রগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখেন সেগুলো ভুয়া। নিজাম উদ্দিন আরও যাচাই-বাছাই করে দেখেন যে, বাপ্পী ও জোবায়ের কেউই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন না। পরে তিনি তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এরপর তিনি পল্লবী থানায় একটি প্রতারণার মামলা করেন। মামলাটি তদন্তকালে চক্রের দুই সদস্যকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়।
মধুসূদন দাস বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা নিজেদের বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে চাকরি ও বিভিন্ন তদবিরের প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।