অনলাইন ডেস্ক।।
গত দুই মাসে চট্টগ্রামের ১২ থেকে ১৮ বছরের ৯৩ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী টিকার আওতায় এসেছে। এরমধ্যে শুধুমাত্র গত দুই সপ্তাহে টিকার আওতায় এসেছে ৫০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী। নগরীর শিক্ষার্থীদের টিকাদানের ক্ষেত্রে এমন সাফল্যের ঠিক উল্টো চিত্র উপজেলার শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে। যদিও খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে টিকার আওতায় আনতে কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর বাইরেও যদি কোন শিক্ষার্থী টিকার বাইরে থাকে, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় টিকা প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিভাগের সংশ্লিষ্টরা।
তথ্য অনুসারে, চট্টগ্রামে গত বছরের ১৬ নভেম্বর থেকে শুরু হয় ১২ থেকে ১৮ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম। প্রথম দিকে কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনার কর্মযজ্ঞ শুরু করা হলেও পরবর্তীতে ১২ থেকে ১৮ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু করে। সর্বশেষ গত ৮ জানুয়ারি থেকে বিশেষ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে নগরী ও উপজেলা পর্যায়ে নিবন্ধন ছাড়াই গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু করা হয়। তাতেই সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনা হয়। শিক্ষা বিভাগের তথ্য অনুসারে, নগরীসহ চট্টগ্রাম জেলায় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা মিলে প্রায় ১১শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। যাতে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থী রয়েছে ৮ লাখ ৬৪ হাজার ৭২ জন। এরমধ্যে মহানগরে ২ লাখ ৭০ হাজার ৮৯৮ জন এবং উপজেলায় ৫ লাখ ৯৩ হাজার ১৭৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে গতকাল (রবিবার) পর্যন্ত ৮ লাখ ৫ হাজার ৭২ শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ টিকার আওতায় এসেছে ৯৩ দশমিক ১৭ শতাংশ শিক্ষার্থী। বাকি ৫৯ হাজার শিক্ষার্থী এখনো টিকা নেয়নি।
চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার ফরিদুল আলম হোসাইনী বলেন, সরকারি ছাড়াও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও টিকার আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরও টিকার বিশেষ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে টিকা প্রদান করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে এখনও কিছু বাকি আছে, তবে সোমবার সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনা হবে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘উপজেলা পর্যায় থেকে প্রায় দেড় শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মীকে এনে নগরীর শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি টিকা দেয়া হয়েছে এ ক্যাম্পেইনে। তবে আপাতত তা বন্ধ রাখা হয়েছে। এসব কর্মীদের আবার উপজেলায় পাঠানো হয়েছে, সেখানেও তারা শিক্ষার্থীদের টিকাদানে কাজ করবে। পরবর্তীতে দ্বিতীয় ডোজ প্রদানে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে আবারও তাদের নগরীতে আনা হবে।’
টিকা দেয়া হবে বাদ পড়াদেরও :
এদিকে, ক্যাম্পেইন অথবা নিয়মিত টিকাদান কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান করার পরও যারা টিকা গ্রহণ করেনি কিংবা বাদ পড়াদের টিকা প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিভাগ। তাছাড়া যদি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বাদ পড়ে থাকে, তাদের টিকা প্রদানের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় টিকা দেয়া হবে। এজন্য শিক্ষা বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এমন তথ্যই নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার ফরিদুল আলম হোসাইনী।
তিনি বলেন, ‘ভুলবশত তালিকার বাইরে থাকায় টিকা পায়নি, এমন কোন শিক্ষার্থী থাকলে তাদের জন্যও টিকার ব্যবস্থা করা হবে। এজন্য অবশ্যই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষা বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ কিংবা অনলাইনে নিবন্ধন করেও নিকটস্থ কেন্দ্র থেকে সহজে টিকা গ্রহণ করতে পারবে। তবে সরাসরি যোগাযোগ করলে আমরাও তাদের সহযোগিতা করব। আমাদের নিকট যথেষ্ট ভ্যাকসিন মজুদ আছে। এর বাইরে একটু অপেক্ষা করলে দ্বিতীয় ডোজ প্রদানের সময় তাদের প্রথম ডোজ দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে পেজে লাইক দিয়ে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়।