গোপনে বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রি করে দিলেন প্রধান শিক্ষক-সভাপতি
নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইলঃ জেলার মির্জাপুরের মহেড়া আনন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচটি গাছ গোপনে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহিনুল ইসলাম ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বিভাস সরকার নুপুরের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এক সপ্তাহ আগে বিদ্যালয়ের বড় দুটি কড়ই গাছ ও তিনটি মেহগনি গাছ বিক্রি করেন তারা। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক শাহিনুল ইসলাম ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মহেড়া ইউপি চেয়ারম্যান বিভাস সরকার নুপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রতন উদ্দিনকে দিয়ে ওই গাছ বিক্রি করেন বলে অভিযোগে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৮৯০ সালে মির্জাপুর উপজেলার মহেড়া ইউনিয়নের মহেড়া গ্রামে মহেড়া আনন্দ উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিদ্যালয়ের ভেতর ও বাইরের চারপাশে কড়ই ও মেহগনিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করা হয়। গত ২৩ মার্চ থেকে বিদ্যালয় রমজানের বন্ধ দেওয়া হয়। এ সুযোগে বিদ্যালয়ের বড় দুটি কড়ই ও তিনটি মাঝারি মেহগনি গাছ মহেড়া ইউপির সদস্য রতন উদ্দিনের মাধ্যমে বিক্রি করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি। গাছগুলো বাসাইল উপজেলার আদাজান গ্রামের এক ব্যাপারী ৩২ হাজার টাকায় কিনে নেন। এক সপ্তাহ আগে গাছগুলো কাটা শুরু করেন ব্যাপারী। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
খবর পেয়ে সরেজমিন দেখা যায়, গাছগুলোর বেশিরভাগ অংশ কেটে অন্যত্র নেওয়া হয়েছে। কিছু অংশ বিদ্যালয়ের পাশে ফেলে রাখা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, বিদ্যালয়ের পুরোনো পাঁচটি গাছ নামমাত্র দামে বিক্রি করা হয়েছে।
মহেড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রতন উদ্দিন জানান, তার আত্মীয়রা গাছের ব্যবসা করেন। এজন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহিনুল ইসলাম ও ইউপি চেয়ারম্যান বিভাস সরকার নুপুর গাছগুলো বিক্রি করে দিতে বলেছিলেন। তাই তিনি গাছগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া বলেন, বিদ্যালয়ের কয়েকটি বড় গাছ বিক্রি করা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহিনুল ইসলাম বলেন, রমজানে বিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার পর তিনি বিদ্যালয়ে যাননি। ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মহেড়া ইউপি চেয়ারম্যান বিভাস সরকার নুপুর বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের কয়েকটি গাছ বিক্রি করেছেন বলে তিনি শুনেছেন।
গাছ বিক্রির টাকা কার কাছে জমা আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমার কাছে টাকা জমা করা হয়নি। কার কাছে গাছ বিক্রি করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মহেড়া ইউপি চেয়ারম্যান বিভাস সরকার নুপুর বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তার কাছে গাছ বিক্রির বিষয়ে জানালে তিনি বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। গাছ বিক্রির ৩২ হাজার টাকাও প্রধান শিক্ষক নিয়েছেন বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
মির্জাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার হায়দার বলেন, বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রির বিষয়টি তার জানা নেই।
এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, গাছ বিক্রির বিষয়টি তার জানা নেই। তবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৩/০৪/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়