খুবির তিন শিক্ষককে অপসারণের সিদ্ধান্ত
নিউজ ডেস্ক।।
ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) তিন শিক্ষককে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কমিটি। সোমবার সিন্ডিকেট কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই তিন শিক্ষক হলেন- বাংলা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক আবুল ফজল, বাংলা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক শাকিলা আলম এবং ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরী।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১ ও ২ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৫ দফা দাবিতে আন্দোলন করেন। ওই ৫ দফা দাবির মধ্যে ছিল- বেতন কমানো, আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত করা, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে অবকাঠামো নির্মাণ ও ছাত্রবিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
সে সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছিলেন ওই তিন শিক্ষক। তাদের গত বছরের ১৩ অক্টোবর কারণ দর্শানো নোটিশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাতে বলা হয়েছিল, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা রকমের মিথ্যা তথ্য প্রদান, কুৎসা রটানো ও উসকানিমূলক তথ্য প্রচার করেছিলেন তারা। এছাড়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সহমত পোষণ করার জন্য অন্যান্য শিক্ষকদের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছিলেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো থাকা সত্ত্বেও তারা নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করেন বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে ওই শিক্ষকরা কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দেন।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই শিক্ষকদের অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে তাদের তা জানিয়ে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে আরও বলা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় কেন তাদেরকে অপসারণ করা হবে না তা আগামী ২১ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘চিঠিতে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অপসারণের কথা জানানো হয়েছে এবং ২১ জানুয়ারির মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। নোটিশের জবাব দেওয়ার জন্য আমাদের কমপক্ষে ১০ দিন সময় দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি।’
খুবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের সময়ে তারা যা করেছিল তা উল্লেখ করেই ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। তাদের ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হওয়ায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তারা তদন্ত কমিটিকে বক্তব্য দিতে হাজির হননি। সিন্ডিকেটের সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনেই যথাযথ প্রক্রিয়ায় ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
এদিকে সম্প্রতি দুই শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণ, তদন্ত ও একাডেমিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তারা হলেন বাংলা ডিসিপ্লিনের মোহাম্মদ মোবারক হোসেন নোমান এবং ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের ইমামুল ইসলাম। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন।