দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি!
শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ মেহেরপুরের গাংনীতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, টাকা ফেরতের দাবিতে বুধবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল পর্যন্ত গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে বিদ্যালয়ের সভাপতি শেখ আনিসুজ্জামান লুইসকে আটকে রাখেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। পরে গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ খালেকের কাছে বিচার চেয়ে তার সিদ্ধান্তে ছেড়ে দেন লুইসকে।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জুলেখা খাতুনের ভাষ্য, প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্তির কথা বলে এবং বিদ্যালয়ের জমির ভুয়া দলিল দেখিয়ে ২৪ জন শিক্ষক-কর্মচারীর কাছ থেকে লুইস কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত এমপিওভুক্তি দূরের কথা, বিদ্যালয়ের জন্য জমি কেনাই হয়নি। একটি ভাড়া বাড়িতে কিছুদিন স্কুলের কার্যক্রম চললেও সেটি বন্ধ রয়েছে। বাধ্য হয়ে শিক্ষক-কর্মচারীরা টাকা ফেরত চাইছেন।
বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী বাবুল হোসেন জনি বলেন, তারা ক্ষুব্ধ হয়ে বুধবার সকালে গাংনী হাসপাতাল বাজার থেকে লুইসকে ধরে এনে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে আটকে রাখেন। তিনি তাদের টাকা ফেরত দিতে টালবাহনা করছেন। টাকা ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি তার শাস্তির দাবি করেন তিনি।
তেরাইল গ্রামের বাসিন্দা সহকারী শিক্ষক লাবণী খাতুন বলেন, লুইসকে তিনি জমি বিক্রিসহ ধারদেনা করে ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। স্কুলের নাম ভাঙিয়ে টাকা লুটপাট করেছেন তিনি।
সহকারী শিক্ষক শারমিন আক্তার শীলা বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে লুইস তার কাছ থেকে ৪ লাখ ৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এখন টাকাও ফেরত পাচ্ছেন না, চাকরিও হচ্ছে না। বয়স শেষ হয়ে গেছে, অন্য কোথাও আবেদনের সুযোগও নেই। মহাবিপদে পড়েছেন বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ধারদেনা ও সমিতি থেকে ঋণ করে লুইসের হাতে তিন লাখ টাকা তুলে দিয়েছেন বলে জানান সহকারী শিক্ষক ক্যামেলি খাতুন। এখন টাকা ফেরত না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সহকারী শিক্ষক সেলিনা আক্তার বলেন, ২০১৫ সালে বাঁশবাড়িয়া গ্রামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেই জমির সমস্যা দেখিয়ে ২০২০ সালের দিকে ফতাইপুর তেলপাম্পের পেছনে ঘর ভাড়া করে কিছুদিন স্কুলের কার্যক্রম চলে। এখন সেটি বন্ধ রয়েছে। বঙ্গবন্ধু পরিবার ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের নাম ভাঙিয়ে শুধু সাইনবোর্ড ব্যবহার করে তার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন লুইস। এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি করেন তিনি।
অভিযুক্ত শেখ আনিসুজ্জামান লুইস নিজেকে জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন, শিক্ষক-কর্মচারীর কাছ থেকে কোটি টাকা নয়, ৪৬ লাখ টাকা নিয়েছেন। সেই টাকাতে বাঁশবাড়িয়াতে ঘর নির্মাণসহ বিভিন্ন কাজ করেছেন। স্কুলের জন্য টাকা খরচ করেছেন, এখন কোথা থেকে তাদের টাকা ফেরত দেবেন- এই বলে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ খালেক বলেন, তিনি শুনেছেন লুইস শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি দেবেন বলে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এর সঙ্গে রাঘববোয়ালরাও জড়িত বলে তার ধারণা। তিনি দু'এক দিনের মধ্যে শিক্ষকদের অভিযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে চেষ্টা করবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) লিউজা-উল-জান্নাহ।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৫/০২/২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে পেজে লাইক দিয়ে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়।
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
এই বিভাগের আরও খবর