কেয়ামতের দিন রোজাদার যা পাবেন
রোজা আল্লাহ তাআলার প্রিয় ও পছন্দের আমল। রোজার প্রতিদান আল্লাহ নিজেই দেন। প্রিয়নবী (স.)-এর কণ্ঠে ঘোষিত হয়েছে- الصِّيَامُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ وَالْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا ‘সিয়াম আমারই জন্য। তাই এর পুরস্কার আমি নিজেই দান করব। আর প্রত্যেক নেক কাজের বিনিময় ১০ গুণ।’ (বুখারি: ১৮৯৪)
রোজা এমন এক আমল, যার মর্যাদা অনন্য। আল্লাহ তাআলা বিশেষ ব্যবস্থা রেখেছেন রোজাদারের জন্য। হাদিসে এসেছে- রাসুল (স.) বলেন, ‘জান্নাতের রাইয়ান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কেয়ামতের দিন সওম পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তারা ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেওয়া হবে, রোজা পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে। তারা ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাতে করে এ দরজাটি দিয়ে অন্য কেউ প্রবেশ না করে।’ (বুখারি: ১৮৯৬)
রোজা এমন এক ইবাদত, যা মানুষের গুনাহকে ধুয়ে মুছে দেয়। জাহান্নামে যেতে বাধা দেয় এবং জান্নাতের পথ সুগম করে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমজানে সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।’ (বুখারি: ১৯০১) রাসুলুল্লাহ (স.) আরও বলেন, ‘যুদ্ধের মাঠে ঢাল যেমন তোমাদের রক্ষাকারী, সিয়ামও তদ্রুপ জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়ার ঢাল।’ (ইবনে মাজাহ: ১৬৩৯; বায়হাকি: ৪/২১০)
অপর একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় এক দিন রোজা রাখে, আল্লাহ তার বিনিময়ে জাহান্নাম থেকে তার মুখমণ্ডলকে ৭০ বছরের দূরত্বে রাখেন। (ইবনে মাজাহ: ১৭১৮)
হাশরের ময়দানে বান্দার মুক্তির জন্য রোজা আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে এবং সেই সুপারিশ গ্রহণ করা হবে। আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (স.) বলেন, কেয়ামতের দিন রোজা ও কোরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, হে আমার প্রতিপালক, আমি ওকে পানাহার ও যৌনকর্ম থেকে বিরত রেখেছিলাম। সুতরাং ওর ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কোরআন বলবে, আমি তাকে রাতে ঘুম থেকে বিরত রেখেছিলাম। সুতরাং তাঁর ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। নবী (স.) বলেন, অতএব ওদের উভয়ের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে। (মুসনাদে আহমদ: ৬৬২৬)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে রমজানের গুরুত্ব উপলব্ধি করার তাওফিক দান করুন। তাকওয়াবানা হওয়ার তাওফিক দান করুন। রমজানের রোজাসহ প্রত্যেকটি ইবাদত কবুল করুন। আমিন।