কুয়েটে শিক্ষকের রহস্যজনক মৃত্যু, উত্তপ্ত ক্যাম্পাস
মোঃ মোজাহিদুর রহমান।।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)-এর শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুকে ঘিরে ক্যাম্পাসে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এই মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। কিছু বিপথগামী ছাত্র তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরুর পাশাপাশি কুয়েটকে ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবি উঠেছে। আর এই দাবিতে গতকাল বুধবার কুয়েট ক্যাম্পাস ছিল উত্তপ্ত।
ড. সেলিম হোসেন কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এবং লালন শাহ হলের প্রভোস্ট ছিলেন। গত মঙ্গলবার দুপুরে খাওয়ার জন্য তিনি বাসায় যান। আড়াইটার দিকে তাঁর স্ত্রী লক্ষ করেন, তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। এরপর দরজা ভেঙে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রয়াত শিক্ষককে গতকাল কুষ্টিয়ার কামারখোলায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন হয়েছে।
সিসিটিভিতে দেখা যায়, গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ ক্যাম্পাসের রাস্তা থেকে ড. সেলিম হোসেনকে জেরা শুরু করে। পরে তাঁকে অনুসরণ করে ওই শিক্ষকের ব্যক্তিগত কক্ষে ঢোকে। ছাত্রলীগের ওই গ্রুপটি দীর্ঘ
সময় সেলিম হোসেনের সঙ্গে রুদ্ধদার বৈঠক করে। অভিযোগ উঠেছে, ওই সময় অপদস্থ করার কারণে মৃত্যু হয়েছে। এ কারণে দোষীদের শাস্তির দাবিতে গতকাল সারা দিন কুয়েট ক্যাম্পাস উত্তপ্ত ছিল।
এ ব্যাপারে কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী এহমানুল করিম, তানহা ইসমাইল, রীস্কি খাতুন, মো. ইমতিয়াজের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, সম্প্রতি কুয়েটের লালন শাহ হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য ব্যবস্থাপক নির্বাচন নিয়ে সাদমান নাহিয়ান সেজান সঙ্গে সেলিম হোসেনের মতবিরোধ হয়। তারই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার রুদ্ধদার বৈঠক এবং পরবর্তীতে অপমান সহ্য করতে না তাঁর মৃত্যু হয় বলে তাঁদের অভিযোগ।
গতকাল কুয়েট শিক্ষক পরিষদের সভায় সভাপতি প্রতীক চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, শিক্ষক পরিষদ মনে করছে, এই মৃত্যু কোনো অবস্থায় স্বাভাবিক নয়। কিছু বিপথগামী ছাত্র তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। কুয়েটের রেজিস্ট্রার আনিসুর রহমান রহমান ভূঁইয়া বলেন, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট দেওয়া হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।