করোনায় কেড়ে নিল ঢাবি ছাত্রের প্রাণ
নিউজ ডেস্ক।।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুমন হোসেন নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্র মারা গেছেন। শুক্রবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে যশোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
ফেসবুকের এক পোস্টে মোহাম্মদ তানভীন নামে তার এক সহপাঠী বিষয়টি নিশ্চিত করে লেখেন, করোনা আক্রান্ত হয়ে সুমনের ফুসফুসে ৭০ শতাংশ ড্যামেজ হয়ে গেছে। তিনি আর নেই, আজ সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেছেন।
জানা গেছে, মহামারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় তিনি গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে ছিলেন সুমন। কয়েকদিন আগে করোনার উপসর্গ নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর তার বিভাগের চেয়ারপার্সন খবর পেয়ে সুমনকে বাঁচাতে সহায়তার জন্য অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন সুমন। মানবাধিকার বিষয়ে সচেতনতা বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ভয়েস এন্ড হিউম্যানিটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন তিনি।
দুইদিন আগে গত বুধবার (১৪ জুলাই) সংগঠনটির ফেসবুক পেজে সুমনের জন্য আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানিয়ে এক স্ট্যাটাস দেওয়া হয়। তাতে উল্লেখ ছিল, সুমন হোসেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। প্রথমে আইসিইউতে নেয়ার পর অবস্থা আরও সংকটাপন্ন হওয়ায় এখন তাকে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ)-তে স্থানান্তর করা হয়েছে। তার ফুসফুসের ৭৫% ড্যামেজ হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে তার ফুসফুসের সংক্রমণ রোধে ব্যয়বহুল চিকিৎসা বা ঔষুধ প্রদান করতে হচ্ছে ডাক্তারদের। যা সুমনের আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল পরিবারের পক্ষে এই ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়।
“সুমনের চিকিৎসায় শুধু ঔষধ বাবদ প্রতিদিন ব্যয় হচ্ছে ৮-১০ হাজার টাকা। ব্যয়বহুল করোনার চিকিৎসা কতদিন চালাতে হবে তা নিশ্চিত নয়। তাই সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত এই ব্যয় বহন করতে হবে পরিবারকে। অল্প কয়েকদিনে এরই মধ্যে ঋণ করে লক্ষাধিক টাকা খরচ করেছে সুমনের দরিদ্র পরিবারটি। কিন্তু এখন আর পেরে উঠছেন না এই বিশাল অঙ্কের টাকা ম্যানেজ করে মেধাবী এই শিক্ষার্থীর চিকিৎসা করাতে। তাই আসুন ছেলেটিকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করি।”
আর্থিক সাহায্য আবেদনের দুইদিন পর আজ সন্ধ্যায় মারা গেলেন সুমন। এদিকে, তার মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তার সহপাঠীরা।
নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন ড. ফারজানা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, গত দুদিন আগে সুমনের ছোট ভাই সুজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারি সুমনের ফুসফুসের বেশির ভাগ অংশ আক্রান্ত হয়েছে। এরপর সুমনের বিভাগের এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারি, তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। কিন্তু, আজ সন্ধ্যায় খবর পেলাম সুমন মারা গেছেন।