করোনার মধ্যেও এসএসসিতে পরীক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠান বেড়েছে
নিউজ ডেস্ক।।
করোনার মধ্যেও চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। একই সাথে বেড়েছে পরীক্ষায় অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও। গত বছরের তুলনায় ২০২১ সালের মাধ্যমিক পর্যায়ের এই পরীক্ষায় পৌনে দুই লাখেরও বেশি পরীক্ষার্থী বেড়েছে। শতকরা হিসাবে এই বৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য মতে, ২০২০ সালের তুলনায় চলতি বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং এসএসসির কেন্দ্র সংখ্যাও বেড়েছে। আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় মোট ২৯ হাজার ৩৫টি প্রতিষ্ঠান থেকে ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবে। করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি অনুসারে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সারা দেশে এই পরীক্ষার জন্য মোট কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৬৭৯টি। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা আয়োজনের লক্ষ্যে পরীক্ষা শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকেই অর্থাৎ ৮ নভেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এসএসসি পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি এসব ঘোষণা দেন। শিক্ষামন্ত্রী জানান, ২০২১ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় বসছে ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন শিক্ষার্থী। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯ জন। সে হিসাবে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে এক লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন। বৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
শিক্ষামন্ত্রী আরো জানান, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুধুমাত্র গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে নেয়া হবে। সব বিষয়ে পরীক্ষা না হওয়ায় পরীক্ষা ব্যয় কমেছে। তাই পরীক্ষার্থীদের ফরমপূরণে আদায় করা টাকার অব্যয়িত অংশও ফেরত দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীদের এক হাজার ৯৭০ টাকা, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থীরা এক হাজার ৮৫০ টাকা ফি দিয়ে ফরম পূরণ করেছেন। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, সব বিষয়ে পরীক্ষা না হওয়ার কারণে পরীক্ষা ব্যয় কমে যাওয়ায় পরীক্ষার্থীদের ফরমপূরণে আদায় করা টাকার অব্যয়িত অংশ ফেরত দেয়া হবে। পরীক্ষার প্রস্তুতি ও করণীয় বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। যদি যৌক্তিক কারণে কারো দেরি হয় সে ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীর নাম, রোল নম্বর, হলে প্রবেশের সময় ও বিলম্ব হওয়ার কারণ রেজিস্টার খাতায় লিখে প্রবেশ করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা শ্রুতিলেখকের সহায়তায় পরীক্ষা দিতে পারবে। তাদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এসএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে ও নকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আগামী ৮ থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হবে।
মন্ত্রী জানান, এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় ১৮ লাখ ৯৯৮ জন, দাখিলে তিন লাখ এক হাজার ৮৮৭ জন, এসএসসি (ভোকেশনাল) এক লাখ ২৪ হাজার ২২৮ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। পাশাপাশি বিদেশের আটটি দেশে ৪২৯ জন পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। সারা দেশে এসএসসির জন্য কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে তিন হাজার ৬৭৯টি, দাখিলের জন্য ৭১০টি, ভোকেশনালের জন্য কেন্দ্র রয়েছে ৭৬০টি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যে দেখা গেছে ২০২১ সালে দেশের সাধারণ ৯টি বোর্ডের অধীনে ঢাকা বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে এক লাখ ৩৪ হাজার ৪৩১ জন, মানবিকে দুই লাখ ৯৫৭ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষায় এক লাখ ৪০ হাজার ৭১২ জন মিলে মোট চার লাখ ৭৬ হাজার ১০০ জন পরীক্ষার্থী।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দুই লাখ সাত হাজার, ৫৬৮ জন, কুমিল্লা বোর্ডে দুই লাখ ২৪ হাজার ৮৭৪ জন, যশোরে এক লাখ ৮১ হাজার ২৮১ জন, চট্টগ্রামে এক লাখ ৬০ হাজার ৯২৫ জন, বরিশালে এক লাখ চার হাজার, ৯৯০ জন, সিলেটে এক লাখ ২১ হাজার, ১১১ জন, দিনাজপুরে এক লাখ ৯৩ হাজার ৪৪৬ জন এবং ময়মনসিংহে এক লাখ ৩০ হাজার ৭০২ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।