ওয়াসার ২০ শতাংশ গ্রাহক স্মার্ট মিটারের বাইরে
নিউজ ডেস্ক।।
ঢাকা ওয়াসার ৮০ শতাংশ গ্রাহক রয়েছেন স্মার্ট মিটার সিস্টেমের আওতায়। বাকি ২০ শতাংশ গ্রাহককেও স্মার্ট মিটার সিস্টেমের আওতায় আনতে যাচ্ছে ওয়াসা। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ কোটি টাকা। অন্যদিকে পানির বিল সংগ্রহের ক্ষেত্রে এখনো ২.৫ শতাংশ দক্ষতায় ঘাটতি আছে বলে ওয়াসা মনে করছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও দ্রুত নগরায়ণের সাথে সাথে সমন্বয় রেখে নগরবাসীর চাহিদা নিরিখে বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিশেষত নিরাপদ পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার মহানগরীতে সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার বিতরণ লাইন রয়েছে। তিন লাখ ৬১ হাজার ৯৩৮টি সার্ভিস সংযোগের মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে ২৪৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এই পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় ৮০ শতাংশ মিটার পদ্ধতির আওতায় আনা সম্ভব হলেও এখনো অবশিষ্ট ২০ শতাংশ মিটার পদ্ধতির বাইরে রয়েছে। প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্তের স্বল্পতা, অবৈধ সংযোগ ও সংযোজিত মিটারগুলো নষ্ট হওয়ার পর পুন:স্থাপন বা সংস্কারসহ যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাবে ওয়াসার পানি ব্যবস্থাপনায় অন্যতম অন্তরায় হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। অন্যদিকে পানির বিল সংগ্রহের ক্ষেত্রে এখনো ২.৫ শতাংশ দক্ষতায় ঘাটতি আছে বলে ওয়াসা মনে করছে।
২০১৪ সালে ঢাকা ওয়াসার একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হয়। ওই মাস্টার প্ল্যানের আওতায় ঢাকা শহরকে ১৪৫টি ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত করে ডিস্ট্রিক্ট মিটারিং এরিয়া (ডিএমএ) স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ৮০টি ডিএমএ সম্পন্ন করা হয়েছে। ডিএমএ বাস্তবায়নের আগে সেখানে নন-রাজস্ব পানি (এনআরডব্লিউ) ছিল ৪২ শতাংশ। ডিএমএ বাস্তবায়নের পর এটা কমে ১০ শতাংশে এসেছে। এসবের উন্নয়নের জন্যই কোরিয়ার ঋণে ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে এই মিটার বসানোর প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বাকিটা ওয়াসার নিজের। তিন বছরে এই প্রকল্পটি ঢাকা মহানগরীতে বাস্তবায়ন করবে।
ঢাকা ওয়াসা বলছে, বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার মিটার রিডাররা ম্যানুয়ালি মিটারের বিল প্রস্তুত করে। ম্যানুয়ালে মিটারগুলোর অবস্থান এবং জনবল স্বল্পতার কারণে যা করা অনেক কষ্টকর। ব্যয়সাপেক্ষও বটে। স্মার্ট মিটার স্থাপন করা হলে পানি ব্যবহারসংক্রান্ত গ্রাহক ডাটা সরাসরি ঢাকা ওয়াসার সেন্ট্রাল সার্ভারে চলে আসবে বা পাঠানো সম্ভব হবে। এতে ডাটা হেরফেরের ঝুঁকি কমবে। গ্রাহকরা সঠিক সেবা পাবে। পাশাপাশি তারা এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহকরা বিল সরাসরি পাঠাতে পারবে।
ব্যয়ের হিসাব পর্যালোচনা থেকে জানা গেছে, তিন বছরের এ প্রকল্পে এক কোটি ৪৪ লাখ টাকা যাবে পরামশর্কদের জন্য। এতে প্রতি মাসে জনপ্রতি চার লাখ টাকা ব্যয় হবে। তবে এখানে কতজন পরামর্শক থাকবে তা উল্লেখ নেই। সার্ভে ও স্টাডিতে ৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। এটাও থোক। প্রকল্পটি সম্পর্কে পরিকল্পনা কমিশন বলছে, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে পরামর্শক সেবা নিতে এক কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। যার যৌক্তিকতা খতিয়ে দেখা দরকার। এ ছাড়া কতজন কত দিনের জন্য সেটাও উল্লেখ নেই। পাশাপাশি কারিগরি এই প্রকল্পে স্মার্ট মিটার স্থাপনের জন্য সোয়া ৯ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। কতটি মিটার কেনা হবে তা উল্লেখ নেই। ফলে দর ও সংখ্যা ছাড়া এই অঙ্ক নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। পিইসি সভায় বিষয়গুলো বিস্তারিত জানতে চাওয়া হবে।