এবারও হবেনা আয়কর মেলা
কোভিড-১৯ মহামারী অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় দেশে সার্বিক জীবনযাত্রা প্রায় স্বাভাবিক হলেও আয়কর মেলা এ বছরও হচ্ছে না। তবে আঞ্চলিক কর কার্যালয়গুলোতে মেলার মতোই সেবা মিলবে বলে এনবিআর জানিয়েছে।
নাগরিকদের আয়কর দিতে উদ্বুদ্ধ করতে ২০১০ সাল থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে আয়কর মেলার আয়োজন করে আসছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
২০২০ ও ২০২১ সালে মহামারীর কারণে আয়কর মেলা আয়োজন বন্ধ ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও আয়কর মেলা আয়োজনে বিরত থাকছে এনবিআর।
তবে করদাতাদের সুবিধায় পুরো নভেম্বর মাসব্যাপী কর অঞ্চলগুলোতে মেলার মতো করসেবা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনবিআরের কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা সদস্য শাহীন আক্তার।
তিনি বলেন, “আগের দুই বছরের মতো এবারও বিশেষ আয়কর মেলার আয়োজন করা হচ্ছে না। তবে কর অঞ্চলগুলোতে মেলার পরিবেশে আয়কর রিটার্ন দাখিলসহ কর সংক্রান্ত অন্যান্য সেবা দেওয়া হবে।”
১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এই সেবা চলবে জানিয়ে তিনি বলেন, “মেলার মতোই আয়কর দাতাদের প্রাপ্তি স্বীকারপত্র সরবরাহ করা হবে।”
এবারের সেবায় নতুন সেবা হিসেবে ‘এ চালান’ বা স্বয়ংক্রিয় চালানও দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
‘এ-চালান’ হচ্ছে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে আয়কর দাতার পরিশোধিত অর্থ সরকারি তহবিলে জমা হওয়ার একটি প্রমাণপত্র।
মহামারী শেষ হয়ে এলেও কেন আয়কর মেলা হচ্ছে না- জানতে চাইলে শাহীন আক্তার বলেন, “এসব বিষয় নিয়ে শিগগির একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। সেখানে এনবিআর চেয়ারম্যান বিস্তারিত জানাবেন।”
এনবিআর এর জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা (পরিচালক) সৈয়দ এ মু’মেন বলেন, “নভেম্বর মাসব্যাপী করদাতাদের তথ্য সেবা সরবরাহ করার জন্য কর অঞ্চলগুলো ছাড়াও বাংলাদেশ সচিবালয়, অফিসার্স ক্লাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে অস্থায়ীভাবে কর তথ্য ও সেবা কেন্দ্র চালু করা হবে। এসব কেন্দ্রেও আয়কর রিটার্ন দাখিলসহ অন্যান্য করসেবা এবং কর সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যাবে।”
এনবিআরের আরেক কর্মকর্তা জানান, কর অঞ্চলগুলোতে নভেম্বর জুড়ে রিটার্ন জমার পাশাপাশি রিটার্ন ফরম পূরণে সহায়তা দেওয়া হবে। রিটার্ন জমার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে রিটার্ন জমার প্রাপ্তি স্বীকারপত্র মিলবে। এছাড়া ই-রিটার্ন জমা দিতে আগ্রহী করদাতাদের জন্য আলাদা বুথ থাকবে।
আগামী ৩০ নভেম্বর ‘জাতীয় আয়কর দিবস’ উপলক্ষে সভা-সেমিনারসহ বিভিন্ন আয়োজন থাকবে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট রংপুর, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মোট ৪০টি কর অঞ্চল রয়েছে।
এনবিআর জানায়, এই অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৩ লাখ ৩০ হাজার করদাতা রিটার্ন জমা দিয়েছেন। বর্তমানে ৮০ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। গত অর্থবছর পর্যন্ত প্রায় ২৩ লাখ টিআইএনধারী রিটার্ন জমা দিয়েছেন বলেও জানানো হয়।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে ৩৮টি সেবায় রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাই চলতি অর্থবছর থেকে আয়কর রিটার্ন জমা ব্যাপকভাবে বাড়বে বলে আশা করছে এনবিআর