এটিইও নিয়োগ: ফের আদালতে যাবেন নতুন শিক্ষকরা
শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) অধীনে সহকারী উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসার (এটিইও) নিয়োগে জটিলতা কাটছেই না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়া নতুন শিক্ষকরা এ পদে আবেদন করতে পারবেন কি না, তা নিয়েই যত জটিলতা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে এক দফা জটিলতার নিরসনও হয়। গত ১ জুলাই থেকে শুরু হয় অনলাইনে আবেদন। কয়েকদিন বাদেই একই জটিলতায় পড়েন নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা। তাদের দৌড়ঝাঁপ ও অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ নিয়োগের আবেদন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয় পিএসসি। একই সঙ্গে স্থগিত করা হয়েছে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেও।
জানা গেছে, ১৫৯টি এটিইও (বিভাগীয়) পদে গত ২৬ জুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এতে বলা হয়, বিভাগীয় প্রার্থী বলতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষক (অনূর্ধ্ব ৪৫ বছর) এটিইও পদে আবেদন করতে পারবেন। তবে বিজ্ঞপ্তির নিচে আবেদন নির্দেশিকায় বলা হয়- এ পদে আবেদনের জন্য প্রাথমিকের শিক্ষকের কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকা লাগবে।
নতুন শিক্ষকরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দফায় দফায় যোগাযোগ করতে থাকেন। মন্ত্রণালয় থেকে স্পষ্টভাবে শিক্ষকদের জানানো হয়, নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরাও এটিইও পদে আবেদন করতে পারবেন। পরে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের এক প্রতিনিধি দল মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিখিত আবেদন করে।
গত ১৭ জুলাই মন্ত্রণালয় পিএসসিকে এ বিষয়ে চিঠি দেয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. আব্দুল মালেকের সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেটেড অফিসার ও নন-গেজেটেড কর্মচারীদের নিয়োগ বিধিমালা ১৯৮৫ (সংশোধিত ১৯৯৪), বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের ২০১৫ ও ২০১৮ সালের একই পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সরকারি চাকরি নিয়োগের শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ (বিশেষ বিধান) বিধিমালা, ২০০৩ যাচাই করে পিএসসির প্রকাশিত এটিইও পদে নিয়োগ যোগ্যতার শর্ত সংক্রান্ত জটিলতা অবসান ও বিজ্ঞপ্তি সংশোধনের প্রয়োজন হলে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এরপর আবেদন নির্দেশিকা থেকে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকার বাধ্যবাধকতা তুলে দেয় পিএসসি। ফলে বিভাগীয় কোটায় পূরণযোগ্য ১৫৯ পদে এটিইও নিয়োগে ১ জুলাই থেকে অনলাইনে যে আবেদন শুরু হয়েছিল, তাতে নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরাও আবেদন করার সুযোগ পান। ৩১ জুলাই পর্যন্ত এ পদে আবেদন প্রক্রিয়া চলার কথা ছিল। কিন্তু আবেদন চলাকালে ২৪ জুলাই আবারও নিয়মে পরিবর্তন আনে পিএসসি। কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতার ঘর হঠাৎ যুক্ত করা হয়। এতে ফের জটিলতায় পড়েন নতুন শিক্ষকরা। তারা পিএসসি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে আবারও যোগাযোগ করে অভিযোগ জানাতে থাকেন।
পিএসসির এমন কার্যক্রমে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ও। একপর্যায়ে ৩০ জুলাই এটিইও পদে আবেদন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয় পিএসসি। পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (নন-ক্যাডার) আব্দুল্লাহ আল মামুনের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘২৬ জুন প্রকাশিত নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের ৪০ নম্বর ক্রমিকের সহকারী উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসার পদের অনলাইনে আবেদন গ্রহণ অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হলো।’
হঠাৎ বিজ্ঞপ্তিতে পরিবর্তন ও আবেদন প্রক্রিয়া বন্ধ করায় গত ৩১ জুলাই হাইকোর্টে রিট করেন প্রাথমিকে নতুন নিয়োগ পাওয়া পাঁচ শিক্ষক। গত ১ আগস্ট রিটের ওপর শুনানি হয়। সেখানে রাষ্ট্রপক্ষ আদালতের কাছে সময় আবেদন করেন। গত ৬ আগস্ট এ বিষয়ে দ্বিতীয় দফা শুনানি হয়। সেখানে রাষ্ট্রপক্ষ আদালতকে জানান, পিএসসি এ বিষয়ে অবগত এবং সার্কুলারও (বিজ্ঞপ্তি) স্থগিত করেছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৯/০৮/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়