এখনও অনড় জবি শিক্ষক সমিতি
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করতে গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এসময় একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা। মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কক্ষে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি নেয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন ও সিন্ডিকেট সভার আহ্বান জানিয়ে অবস্থান নেন শিক্ষকরা।
সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রায় চার শতাধিক শিক্ষকের অংশগ্রহণে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষক নেতারা বলেন, ‘গুচ্ছ এমন একটি প্রক্রিয়া যা কোনো গবেষণা ছাড়াই আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ চাপিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই। আর সবচেয়ে লজ্জার বিষয় হলো গত ১৫ মার্চ একাডেমিক কাউন্সিলে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত হয় সে সিদ্ধান্তগুলো কার্যবিবরণে বিকৃতভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো- গুচ্ছে অংশগ্রহণের ফলে আমাদের সেশনজট তৈরি হয়েছে তা আসলেই দুঃখজনক।’
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এ. কে. এম. লুৎফর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-২০০৫ এ বলা আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও অন্যান্য পাঠ্যক্রমে শিক্ষার্থী ভর্তি একাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নিযুক্ত ভর্তি কমিটি কর্তৃক প্রণীত বিধি দ্বারা পরিচালিত হবে। কিন্তু এখন আমরা শুনছি যে এটা সিন্ডিকেটে নিতে, সিন্ডিকেটের অনুমোদন লাগবে। কোথায় লেখা আছে যে সিন্ডিকেটের অনুমোদন লাগবে? এসব তালবাহানা করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমরা এসব মানি না। আমরা যদি আইনকে মানি, আইন বিশ্বাস করি তাহলে অবশ্যই একাডেমিক কাউন্সিলকে রেসপেক্ট করতে হবে। একাডেমিক কাউন্সিল আইন-২০০৫ এ প্রণিত। এখানে কোনো তালবাহানা চলবে না।’
অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়া বলেন, ‘আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আইন আছে সে অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষা নিতে চাই। একাডেমিক কাউন্সিলে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে প্রশাসনের এত অনীহা কেন। একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে যদি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবারও গুচ্ছে যায় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অমান্যের জন্য উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রয়োজন হলে সেখানেই যাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ।’
মানববন্ধনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘উপাচার্য আমাদের আজকের দাবিগুলো মেনে নিয়ে আবারও ৫/৬ তারিখে বিশেষ একাডেমিক সভার আহ্বান করেছেন। ওই একাডেমিক সভায় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য একটি কেন্দ্রীয় কমিটি ও ইউনিট ভিত্তিক কমিটি গঠন করে আগামী ৮ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভায় সেগুলো উপস্থাপন করা হবে। আর গত একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তগুলো বিকৃতভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়, সেটাও আমাদের উপস্থিতিতেই সংশোধন করে দেন উপাচার্য।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘আগামী ৮ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভা। এর আগে কিছু বলা যাচ্ছে না। ওই সিন্ডিকেট সভায় সব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এর আগে ২২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান রক্ষা ও স্বকীয়তা ফিরিয়ে আনতে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে এসে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৩/০৪/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়