ঈদের খরচ মেটাতে স্কুলের গাছ বিক্রি করে দিলেন প্রধান শিক্ষক সভাপতি
পটুয়াখালীঃ কলাপাড়ায় স্কুলের ৩০ থেকে ৩৫টি গাছ বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের অনন্তপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠে।
এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন স্কুলটির অভিভাবকরা। তারা বলছেন, ঈদের খরচ জোগাতে প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি এসব গাছ বিক্রি করেছেন। এতে পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্কুলের চত্বর থেকে গত কয়েকদিনে ২০টি চাম্বল, ৮টি রেইনট্রি ও ৫টি মেহগনি গাছ কেটে বিক্রি করে দেন স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মো শহিদুল আলম ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান খলিফা। গাছ ব্যবসায়ী তাওহীদ ভ্যানে করে এ গাছ নিয়ে খোকন খলিফার স’মিলে জড়ো করেন।
কোনো ধরনের সভা ও উপজেলা কমিটির নিলাম বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই এসব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে প্রায় আড়াই লাখ টাকা স্কুল সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক হাতিয়ে নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্কুলটির পরিচালনা কমিটির দাতা সদস্য কে এম মেহেদী হাসান প্রিন্স খলিফা বলেন, স্কুল চত্বর থেকে পুরোনো গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। গাছ কাটার বিষয়ে স্কুলে কোনো সভা ডাকা হয়নি। বিষয়টি প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি কেবল জানেন।
গাছের ব্যবসায়ী তাওহীদ বলেন, ‘মনির খলিফা, খোকন খলিফা ও জিয়া হাওলাদার আমার কাছে গাছ বিক্রি করেছেন। নগদ টাকা দিয়ে আমি গাছ কিনেছি। গাছ কাটার আগেই তারা আমার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম নিয়েছে। গাছ কাটার পর বাকি টাকা আমাকে দিতে হয়েছে।’
স্কুলটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান খলিফা বলেন, ‘ঈদের খরচ জোগাতে নয়, স্কুলের স্পোর্টস অনুষ্ঠান ব্যয়ের জন্য আমরা এই গাছ কেটে বিক্রি করেছি।’
স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলব না। সভাপতির সঙ্গে কথা বলেন, তাহলেই হবে।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অচ্যুতানন্দ দাস বলেন, ‘এ বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বখতিয়ার মোল্লা বলেন, ‘স্কুল থেকে গাছ কাটতে হলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা কমিটির অনুমোদন নিতে হবে। গাছ বিক্রির টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। এর ব্যত্যয় হওয়ার সুযোগ নেই।’
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না। স্কুল সভাপতি, প্রধান শিক্ষকের সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ বিক্রির কোনো এখতিয়ার নেই। তারা গাছ বিক্রি করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২১/০৪/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়