আয়েশি ভাব ছেড়ে সবাই সতর্ক হোন : প্রধানমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক।।
সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে আয়েশি ভাব ছেড়ে দেশবাসীকে আবারো সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণভাণ্ডারে কম্বল গ্রহণ অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি। বাংলা নিউজ।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে যখনই শীতকাল আসছে, পৃথিবীর সব দেশে আবারো কিন্তু করোনাভাইরাস দেখা দিচ্ছে। এমনকি ইউএসএ, ইংল্যান্ড বা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ইতোমধ্যে প্রাদুর্ভাব কিছুটা দেখা যাচ্ছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
অসতর্ক হলে দেশে আবারো করোনা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন দেখা যাচ্ছে করোনা নাই, সবার মধ্যে একটু আয়েশি ভাব এসে গেছে। এখন সময় এসেছে আবার সতর্কতা অবলম্বন করার। আর সতর্কতা অবলম্বন করতে পারলে ইনশা আল্লাহ এই প্রাদুর্ভাব আমাদের বাংলাদেশকে আক্রান্ত করতে পারবে না।’
‘শীতকাল আসলে একটু ঠাণ্ডা লাগলে সর্দি-কাশি হয়। আর সর্দি-কাশিটা হলেই কিন্তু এই করোনাভাইরাসটা... সেই দিকে সবাইকে একটু সতর্ক থাকতে হবে।’ শেখ হাসিনা বলেন, সমগ্র বাংলাদেশের মানুষকে এই ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। যেন আবার এই করোনার প্রাদুর্ভাব না দেখা দেয়। সবাইকে সাবধানে থাকতে হবে।
সবাইকে মাস্ক পরার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাস্কটা অবশ্যই পরে থাকতে হবে। মাস্কটা পরে থাকলে পরে কেউ যদি সংক্রমিত হয়ে কথা বলতে আসে, আপনি নিজে সংক্রমিত হবেন না।
প্রতিষেধক টিকা নেয়া ব্যক্তিরাও অন্যকে করোনা সংক্রমিত করতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন যারা নিয়েছে যদি তাদের কারো করোনা হয়, সে কিন্তু করোনাটা ছড়াতে পারে। নিজে হয়তো অত বুঝবে না, কিন্তু সে অন্যকে সংক্রমিত করছে। এ বিষয়ে আমার মনে হয় দেশবাসীকে এখন থেকে আরো সতর্ক হওয়া উচিত। আর এ বিষয়ে আমাদের আরো প্রচার দরকার। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সবাইকে আমলকী, আমড়া, লেবু, কমলা, জাম্বুরা, টমেটোসহ ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত শাকসবজি বেশি খাওয়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
আগামী বছরের মাঝামাঝি সবাইকে টিকা : আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে সবাইকে টিকা দেয়ার প্রস্তুতির কথা জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘ইতোমধ্যে টিকাদান কর্মসূচি যেটা চলছে, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে আমরা সব মানুষকে টিকা দিতে সক্ষম হবো।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোনো মানুষ যেন বাদ না যায়, সব নীতিমালা অনুযায়ী টিকা নেয়ার যোগ্য প্রত্যেকটা মানুষ টিকা পাবে, সে ব্যবস্থা আমরা করেছি। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদেরও টিকা দেয়া হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, টিকাদান কর্মসূচি চলছে বাংলাদেশব্যাপী। পাশাপাশি ছাত্রসমাজকে আমরা টিকা দিচ্ছি এবং স্কুলের ছাত্রছাত্রীদেরও আমরা টিকা দেবো। সে প্রস্তুতি আমরা ইতোমধ্যে নিয়েছি। দুই-এক দিনের মধ্যেই আমরা কাজ শুরু করব।
সরকার করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সব কিছুতেই একটা স্থবিরতা সারা বিশ্বব্যাপী সৃষ্টি হয়েছিল। তবে বাংলাদেশে আমরা সবসময় চেষ্টা করেছি যেন কোনো কিছু স্থবির না হয়, অন্তত সচল থাকে। সে দিক থেকে আমরা মনে করি, বাংলাদেশ যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে। অনুষ্ঠানে ৩৭টি ব্যাংক প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণভাণ্ডারে ২৬ লাখ ৪৫ হাজার পিস কম্বল এবং ১০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস এসব অনুদান গ্রহণ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রান্তে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো: নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ বিভিন্ন ব্যাংকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ব্যাংক মালিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের যেকোনো দুঃসময়ে দেখেছি, আমাদের ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন সবসময় এগিয়ে আসে। প্রত্যেক ব্যাংকের পক্ষ থেকে সবসময় সহযোগিতা করে থাকে। এমনকি এটা আমাদের বলারও প্রয়োজন হয় না, আপনারা নিজেরা নিজেদের থেকে এগিয়ে আসেন মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য। সে জন্য আপনাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।