আমির হামজার পদক বাতিল দায় কার?
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
সমালোচনার মুখে মো. আমির হামজার স্বাধীনতা পুরস্কার বাতিল করেছে সরকার। চলতি বছর সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য তার নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। গত শুক্রবার আমির হামজার নাম বাদ দিয়ে নতুন করে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নামের তালিকাসহ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বিতর্কের মুখে পদক প্রত্যাহার হলেও যারা রাষ্ট্রীয় পদক নিয়ে এমন বিতর্ক তৈরি করেছে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে তা নিয়ে এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই পদকের জন্য আমির হামজাকে নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। চলতি বছরের স্বাধীনতা পুরস্কার ঘোষণা করা হয় গত ১৫ই ফেব্রুয়ারি। সেখানে ১০ ব্যক্তি ও ১টি প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করা হয়। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বীরমুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী, শহীদ কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা (বীরবিক্রম), আবদুল জলিল, সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, প্রয়াত মোহাম্মদ ছহিউদ্দিন বিশ্বাস ও প্রয়াত সিরাজুল হকের নাম ঘোষণা করা হয়।
চিকিৎসাবিদ্যায় পুরস্কার দেয়া হয় অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া ও অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল ইসলামকে। সাহিত্যে প্রয়াত মো. আমির হামজা এবং স্থাপত্যে প্রয়াত স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেনের নাম ঘোষণা করা হয়। আর গবেষণা ও প্রশিক্ষণে পুরস্কারের জন্য বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটকে (বিডব্লিউএমআরআই) নির্বাচন করা হয়। এই ঘোষণা আসার পর আমির হামজাকে নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। সাহিত্যিক ও পাঠকমহলেও একেবারে পরিচয়হীন এই ব্যক্তিকে নিয়ে কৌতূহল দেখা দেয়। প্রয়াত আমির হামজার বাড়ি মাগুরার শ্রীপুরে, মাত্র দু’টি বই লিখেছেন তিনি। চমকপ্রদ তথ্য হলো মো. আমির হামজার দু’টি বই ‘বাঘের থাবা’ ও ‘পৃথিবীর মানচিত্রে একটি মুজিব তুমি’ বের হয়েছে ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে।
আমির হামজার ছেলে খুলনা জেলা পরিষদের সচিব মো. আছাদুজ্জামান সরকার নির্ধারিত ফরম পূরণ করে তার বাবার জন্য এই পুরস্কারের আবেদন করেছিলেন। এতে সুপারিশ করেছিলেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ। তিনি জাতীয় পুরস্কার দেয়ার জন্য ১৬ জন সচিবের সমন্বয়ে গড়া ‘প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি’র সদস্যও।
বিতর্কের মধ্যে তথ্য প্রকাশ হয় প্রয়াত আমির হামজা একটি খুনের মামলার আসামি হিসেবে জেলও খেটেছিলেন। এ ছাড়া তাকে নিয়ে আরও কিছু বিতর্ক সামনে আসে।
এর আগে ২০২০ সালে সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য ঘোষণা করা হয় খুলনা বিভাগীয় সাবেক উপ-ভূমি সংস্কার কমিশনার এস এম রইজ উদ্দিনের নাম। ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন ভূমি সংস্কার বোর্ডের পক্ষ থেকে রইজ উদ্দিনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। সাহিত্য জগতে পরিচয়হীন এ ব্যক্তিকে পুরস্কার দেয়া নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। পরে তার পুরস্কার বাতিল করা হয়েছিল।