আগামী সপ্তাহে নতুন এমপিও তালিকা প্রকাশ
শিক্ষায় এখন সবচেয়ে আলোচিত বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নতুন এমপিওভুক্তির তালিকা আগামী সপ্তাহে পরিপত্র আকারে জারি করতে পারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এমপিওভুক্তির জন্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সায় মেলায় যেকোনো সময় এমপিওভুক্তির ঘোষণা হতে পারে। এবার মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিলিয়ে ২ হাজার ৭০০’রও কিছু বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হতে পারে বলে জানা গেছে। যদিও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ও ঘোষণার তারিখ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করছে।
অন্যদিকে এমপিওভুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ধর্মঘট করছেন নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। স্বীকৃতি পাওয়া সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে এবং এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে মঙ্গলবার থেকে আন্দোলন শুরু করেছে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন।
বর্তমানে সারা দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রায় ২৮ হাজার। এগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারী আছেন প্রায় ৫ লাখ। এমপিওভুক্ত হলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে মাসে মূল বেতন ও কিছু ভাতা পান। স্বীকৃতি পেলেও এমপিওভুক্ত না হওয়া প্রতিষ্ঠান আছে সাড়ে ৫ হাজারের মতো। আর স্বীকৃতি না পাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে আরও কয়েক হাজার। সর্বশেষ ২০১০ সালে ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করেছিল সরকার।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির একটি তালিকা গত ৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো সারসংক্ষেপের সঙ্গে ২০১৮ সালের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালাও পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এরপর গত ২৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানতে চাওয়া হয়, কোন মানদন্ডে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। একই সঙ্গে ২০১৮ সালের নীতিমালার কয়েকটি জায়গায় মুদ্রণজনিত ভুল সংশোধন করারও নির্দেশ দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠিতে। পরে সে অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মানদন্ডের ব্যাখ্যা পাঠানো হয়।
সারা দেশের ১ হাজার ৭০০টি স্কুল ও কলেজ এবং ১ হাজারের মতো মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বিদেশে অবস্থান করছেন। দেশে ফিরলে নতুন এমপিওর তালিকা সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হতে পারে। পরিপত্র যে দিনই জারি করা হোক, তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা গত ১ জুলাই থেকে এমপিও সুবিধা ভোগ করবেন বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর এমপিওভুক্তির জন্য জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা জারি করে আবেদন গ্রহণ করা হয়। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমের স্বীকৃতি, শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবং পরীক্ষায় পাসের হার এই চার মানদন্ডের ভিত্তিতে ৯ হাজার ৬১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবেদন করে। এরপর যাচাই করে সেগুলোর মধ্য থেকে যোগ্য প্রতিষ্ঠানের তালিকা চ‚ড়ান্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।