অভিভাবক প্রতিনিধিকে শোকজ: ঢাকা বোর্ডের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি
ঢাকাঃ প্রতিষ্ঠানের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড ও শিক্ষকদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের জেরে রাজধানীর আহম্মদ বাওয়ানী একাডেমির গভর্নিং বডির অভিভাবক সদস্য মৌসুমী বেগমকে সম্প্রতি শোকজ করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। শোকজের প্রতিবাদ ও বোর্ডের কর্মকর্তাদের ওপর অনাস্থা প্রকাশ করেছেন মৌসুমী বেগম।
বুধবার ঢাকার ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন।
অভিভাবক প্রতিনিধির সদস্য মৌসুমী বেগম বলেন, ৬ জুন তদন্ত প্রতিবেদন ও শোকজ জারি করেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন। বোর্ডের এ তদন্ত সঠিক নয়। আমি এ তদন্তের প্রতি অনাস্থা জানাচ্ছি। একইসঙ্গে এ তদন্তের বিপরীতে আমি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। নির্ধারিত সময়ে শোকজ পত্র পাননি বলেও দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত গভর্নিং বডির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে স্কুলে লাইব্রেরি ও বিজ্ঞানগার স্থাপন, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, শিক্ষার্থীদের সঠিক সময়ে বেতনভাতা দেওয়াসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজ করার জন্য দাবি জানিয়েছি। এসব কারণে গভর্নিং বডির সভাপতি সোলায়মান সেলিম এবং সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন মুন্সিসহ একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আমাকে নানা ধরনের অপবাদ দিচ্ছেন। আমি আগামীতে ঢাকা সাত আসন থেকে সংসদ নির্বাচন করব বলে তারা এমন অভিযোগ আনতে পারে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা মহানগরীর কোতোয়ালি থানাধীন ‘আহম্মদ বাওয়ালী একাডেমি’র গভর্নিং বডির অভিভাবক সদস্য মৌসুমী বেগমের বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ এবং প্রতিষ্ঠানের স্বার্থবিরোধী কাজের অভিযোগ পাওয়া যায়। উক্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে গভর্নিং বডির অভিভাবক সদস্য মৌসুমী বেগম প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ বিরোধী, গভর্নিং বডির সভাপতি ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার কাজে লিপ্ত থাকেন বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রতীয়মান হয়।
বলা হয়, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে প্রবিধানমালা ২০০৯ এর অনুচ্ছেদ ৩৮(২) উপপ্র-বিধান অনুযায়ী মৌসুমী বেগমকে কেন প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির অভিভাবক সদস্য পদ হতে অব্যাহতি দেওয়া হবে না তার কারণ ব্যাখ্যাপূর্বক পত্র ইস্যুর তারিখ হতে সাত কর্মদিবসের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে আহম্মদ বাওয়ানী একাডেমির অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন বলেন, করোনাকালীন শিক্ষকদের বেতন কিছুটা বকেয়া হলেও সেটি পরিশোধন করা হয়েছে। বর্তমানে নিয়মিতভাবে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন প্রদান করা হচ্ছে। মৌসুমী বেগম যেসব অভিযোগ তুলছেন তার কোনো ভিত্তি নেই। তার এমন অদ্ভুত আচরণে গভর্নিং বডির সকল সদস্য তার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে অপসরণ চেয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলাভঙ্গ করায় গভর্নিংবডির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ দাখিল করা হয়। সেটি তদন্ত করে মৌসুমী বেগমকে শোকজ দেওয়া হয়েছে। সেটি তিনি মেনে নিতে পারছেন না। তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অভিযোগ তদন্ত করে তার কোনো সত্যতা পায়নি বলে তাদের প্রতিবেদন উঠে এসেছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২১/০৬/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়