অবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন’
নিউজ ডেস্ক।।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে একটি প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ‘অবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন’ আন্দোলনের কর্মীরা। রোববার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এ সময় তারা দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানান।
এ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে গণস্বাক্ষর গ্রহণ কর্মসূচিও করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। জাতীয় জাদুঘর চত্বরে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। একই সময়ে এক গণ-সমাবেশ আয়োজন করে শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে তারা ১ জুন থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানান।
সমাবেশে বক্তব্য দেন ‘অবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন’ আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহম্মদ এম রাহাতসহ আরও অনেকে।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন- শিক্ষামন্ত্রী গতকাল বলছেন, অভিভাবকরা চায় না শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হোক। তার কাছে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বার্তাই আসে। অথচ বিভিন্ন সময়ে এ বিষয় নিয়ে জরিপে শিক্ষামন্ত্রীর দেয়া তথ্যের সম্পূর্ণ বিপরীত পাওয়া যায়।
পিপিআরসি এবং বিজিআইডি পরিচালিত জরিপ জানায়, প্রাথমিকের ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশ এবং মাধ্যমিকের ৯৬ শতাংশ অভিভাবক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পক্ষে।
এছাড়া ‘এডুকেশন ওয়াচ’ পরিচালিত জরিপেও প্রায় একই তথ্য উঠে আসে। সেখানে ৭৬ শতাংশ অভিভাবক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পক্ষে মতামত দেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে সেসব সংখ্যাগুরু অভিভাবকের বার্তা কেন এসে পৌছায় না? কেন শুধু সংখ্যালঘু অভিভাববকদের বার্তাই পৌছায়, তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। শিক্ষামন্ত্রী বলছেন, সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে নামলে নাকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে। তাহলে বলতে হয়, গত জানুয়ারিতেও তো সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে যায়, তখন কেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হলো না?
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ফেব্রুয়ারির শুরুতে দেশে সংক্রমণের হার ২ শতাংশের নিচে নেমে আসে। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে টিকা কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বাড়তে থকে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, আন্দোলনের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে আমরা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। অথচ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাসায় বসে থাকলে বরং আরো স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে। কারণ দীর্ঘদিন ঘরে আবদ্ধ থাকলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়, যা রোগাক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি করে।
তারা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাসায় আবদ্ধ থাকা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। জরিপে উঠে এসেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ৫২ দশমিক ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থী মানসিক অসুস্থ হয়ে উঠেছে। ৪০ দশমিক ৯১ শতাংশের মানসিক বৈকল্য দেখা দিয়েছে এবং ১২ দশমিক ৮ শতাং শিক্ষার্থীর মাঝে আত্মহত্যা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে পুরো একটি প্রজন্মকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে, যা করোনার ক্ষতি থেকে আরও বেশি ভয়ঙ্কর ও সুদূরপ্রসারী। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী সেই ক্ষতির কথা আমলেই আনছেন না।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, কোনরকম প্রস্তুতি ছাড়া আমাদের উপর অনলাইন কার্যক্রম চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনোও হয়ত জানে না- দেশের অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম কতটা অযৌক্তিক।