অপহরণ ও ধর্ষণের পর মাদরাসাছাত্রীকে বাড়িতে রাখে রাকিব
ফরিদপুরঃ ঢাকা থেকে ভাঙ্গার উদ্দেশে ছেড়ে আসা প্রচেষ্টা পরিবহনের একটি বাস থেকে অপহরণের পর এক মাদরাসাছাত্রীকে (১৬) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (৩১ জুলাই) সকালে ওই ছাত্রীকে ভাঙ্গা পৌর সদরের কাপুড়িয়া সদরদী মহল্লা থেকে বাসচালকের সহকারী রাকিবের ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করেছে ভাঙ্গা থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় বাসচালকের সহকারী ভাঙ্গার আলগী ইউনিয়নের পীরেরচর গ্রামের রাকিব মাতুব্বর ওরফে ইমন (২৪), বাসের সুপারভাইজার ভাঙ্গা পৌরসভার পূর্ব হাসামদিয়া মহল্লার আসিফ সরদার (২১) এবং রাকিবের মা লিলি বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে ভাঙ্গা থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা কালাম শেখ বাদী হয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ভাঙ্গা থানায় একটি অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।
অন্যদিকে ভুক্তভোগীকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
ওই ছাত্রীর ভগ্নিপতি জানান, আমার শ্যালিকা আমার পরিবারের সঙ্গে ঢাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকে। সেখানের একটি মাদরাসায় লেখাপড়া করে। আমার শ্বশুরবাড়ি ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলায়।
গত রবিবার বিকেলে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে তাকে আমরা একাকী ঢাকার বাবুবাজার ব্রিজের ওপর থেকে প্রচেষ্টা পরিবহনের একটি গাড়িতে তুলে দিই। ওই সময় আমরা ওই গাড়ির নম্বর এবং সুপারভাইজার ও হেলপারের মোবাইল নম্বর রাখি। তাদের অনুরোধ করি, তাকে ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দিতে। অন্যদিকে ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে তার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন আমার শ্বশুর এবং তার সঙ্গের লোকজন।
কিন্তু মেয়েটি না পৌঁছানোয় আমার শ্বশুর আমাকে ফোন করে জানান। আমি তাকে ওই এলাকায় খোঁজাখুঁজি করতে বলি এবং আমার স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে চলে আসি। কিন্তু তাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে রাত ৩টার দিকে আমরা ভাঙ্গা থানায় তার নিখোঁজের ঘটনাটি মৌখিকভাবে জানাই। সোমবার সকালে আমার ভায়রা এবং অন্যান্য আত্মীয়রা ওই বাসটি খুঁজতে থাকি। একপর্যায়ে বাসটি শনাক্ত করি এবং ওই বাসের সুপারভাইজার আসিফকে ভাঙ্গা থানা পুলিশের সহায়তায় আটক করে ভাঙ্গা থানায় নিয়ে আসি।
ভাঙ্গা থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক জুয়েল জানান, আটককৃত সুপারভাইজার আসিফকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার বর্ণনা মতে ভাঙ্গা পৌরসভার কাপুড়িয়া সদরদী এলাকার একটি বাসা থেকে ওই বাসের হেলপার রাকিব ও তার স্ত্রী লিলি বেগমকে আটক করি এবং ওই ছাত্রীকে রাকিবের বাসা থেকে উদ্ধার করি।
এ ব্যাপারে মামলা তদন্তকারী অফিসার ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জিয়ারুল ইসলাম জানান, মেয়েটির পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানায় বাসের হেলপার রাকিব ওরফে ইমনকে এক নম্বর আসামি, বাসের সুপারভাইজার আসিফ সরদারকে ২ নম্বর ও রাকিবের মা লিলি বেগমকে ৩ নম্বর আসামি করে ভাঙ্গা থানায় অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অন্যদিকে মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করার জন্য এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০১/০৮/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়