অধ্যক্ষ নিয়ে দ্বন্দ্ব, শিক্ষকদের কর্মবিরতি
বিধান চন্দ্র রায়, জলঢাকা (নীলফামারী)।।
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গোলনা ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় অধ্যক্ষ নিয়ে জটিলতায় শিক্ষকরা ভাতা পাচ্ছেন না তিন মাস ধরে। শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে বেতন ভাতার দাবিতে কর্ম বিরতি শুরু করেছেন ওই শিক্ষকরা।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়,গোলনা ফাজিল মাদরাসায় অধ্যক্ষ পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে দীর্ঘ আড়াই বছর থেকে।প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভায় হঠাৎ করে জৈষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে তৎকালীন অধ্যক্ষ মাহবুবার রহমানকে অপসারণ করে জুনিয়র প্রভাষক হোসাইন আহমেদ'কে অধ্যক্ষ নির্বাচিত করা হয়।ফলে সেই অধ্যক্ষ উচ্চ আদালতে রিট করলে হাইকোর্টের আদেশে ১৪ মাস ধরে শিক্ষকদের বেতন বন্ধ হয়ে যায়।হাইকোর্টে রিট চলাকালীন কমিটি না থাকায় বিল স্থগিত হয়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষক'রা পাঠদান বাদ রেখে অলস সময় পাড় করছেন।এদিকে দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকার পর শিক্ষকদের কর্ম বিরতিতে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন শিক্ষার্থীরা।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা ও আতিকুর রহমান আতিক বলেন,সামনে আমাদের এসএসসি পরীক্ষা।শিক্ষকদের কর্ম বিরতির দ্বিতীয় দিনেই পাঠদান ব্যাহত হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে পড়ালেখায় ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।অধ্যক্ষ স্যার, আজকে আমাদের এক মাদরাসার বড় ভাই দিয়ে ক্লাস করিয়েছেন।
গোলনা ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার বাংলা বিভাগের প্রভাষক ওবায়দুল ইসলাম বলেন,অধ্যক্ষের জটিলতায় এর আগে আমাদের ১৪ মাস বেতন বন্ধ ছিল।এখন তিন মাস ধরে মানবতাবর জীবন চলাচ্ছি।আগের টাকাও পাইনি।চলমান ভাতা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরছি না।আমাদের তো পরিবার ও সংসার আছে।
গোলনা ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হোসাইন আহমাদ জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বেতন কয়েকদিন আগে ছাড় হয়েছে।জুলাই,আগস্ট মাসের বেতনও কয়েকদিনের মধ্যে ছাড় হবে।এখানে আমার একটি বিপক্ষ দল কাজ করছেন।বাহিরের এক ছাত্র দিয়ে ক্লাস করাচ্ছেন, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি সঠিক কোনো জবাব দিতে পারেনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার চঞ্চল কুমার ভৌমিক বলেন, শিক্ষকদের কর্ম বিরতি অনাকাঙ্ক্ষিত। প্রয়োজনে তারা শিক্ষা দপ্তরের ঊর্ধ্বতনের হস্তক্ষেপ চাইতে পারতেন।সেখান থেকে আমাদের অফিসে কেউ অভিযোগ জানায় নি।যদি ক্লাসে না ফিরে প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্হা গ্রহন করা হবে।
জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃমাহবুব হাসান বলেন,বিষয়টি হাইকোর্টে গড়ায় তাদের নিয়ে আমরাও বিরক্ত।এভাবে শিক্ষার্থীদের ক্লাস থেকে বঞ্চিত করা মোটেও ঠিক হয়নি।খোজ নিয়ে তাদের কাছে ক্লাস বন্ধ রাখার জবাব চাওয়া হবে।