বান্দরবানঃ জেলার আলীকদমে সরকারিকরণ হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭৫ শিক্ষকের বকেয়া বেতন ছাড়ে প্রাপ্ত অর্থের ১২ শতাংশ ঘুস দাবির অভিযোগ উঠেছে।
চাহিদামতো টাকা না দেওয়ায় বছর পেরোলেও বকেয়া বেতনের অর্থ ছাড়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের জেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেত্বত্বে সিন্ডিকেট। উলটো সরকারিকরণ হওয়া শিক্ষকদের চাকরি খেয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন শিক্ষকরা।
দুর্নীতির দায়ে চট্টগ্রামের রাউজানে কর্মরত থাকাকালীন চাকরি থেকে আগেও বরখাস্ত করা হয়েছিল অভিযুক্ত এ শিক্ষা কর্মকর্তাকে। পরে এক মন্ত্রীর তদবিরে চাকরি ফিরে পান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
শিক্ষা বিভাগের তথ্যমতে, বান্দরবান জেলা দাতা সংস্থা ইউএনডিপি পরিচালিত ৮০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০১৭ সালে সরকারিকরণ করা হয়। পরে ২০২২ সালে বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদেরও চূড়ান্তভাবে গেজেটের মাধ্যমে সরকারিকরণ করে নেওয়া হয়। সেই সুবাদে সরকারিকরণ হওয়া বিদ্যালয়গুলোতে শুরু থেকে চাকরি করা শিক্ষকরাও জনপ্রতি প্রায় ১৪ লাখ টাকা করে বিগত বছরগুলোর বকেয়া বেতন পাবেন। এর মধ্যে আলীকদম উপজেলার ৭৫ শিক্ষকের বকেয়া বেতন ছাড় করতে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতে গড়ে তোলা হয় সিন্ডিকেট। ঘুস দাবি করা হয় প্রতিজন শিক্ষক থেকে ৮০ হাজার টাকা করে। এর মধ্যে নগদ ১০ হাজার টাকা এবং চেকে ৭০ হাজার পরিশোধের শর্ত জুড়ে দেওয়া হয় শিক্ষকদের। কয়েকজন শিক্ষকের কাছে অফিস খরচসহ প্রাপ্ত বেতনের সরাসরি ১২ শতাংশ ঘুস দাবি করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন, সরকারিকরণ হওয়া ৭৫ জন শিক্ষকের বকেয়া বেতন ছাড় নিয়ে বাণিজ্য শুরু করেছেন প্রাইমারি সহকারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট। প্রতিজন শিক্ষকের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা করে দাবি করা হচ্ছে। এর মধ্যে নগদ ১০ হাজার টাকা করে প্রথম দফায় হাতিয়ে নেয় সিন্ডিকেট। বাকি ৭০ হাজার টাকা করে চেকের মাধ্যমে বকেয়া বেতন ঢুকলেই প্রত্যেক অ্যাকাউন্ট থেকে উত্তোলন করে নেবেন সিন্ডিকেট সদস্যরা। শিক্ষকদের অনেকে প্রথমে গড়িমসি করলেও কোনো উপায় না পেয়ে ইতোমধ্যে টাকা আর চেক জমা দিয়েছে সিন্ডিকেটের কাছে। সিন্ডিকেটের সদস্য মারাং রাইতংপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থোয়াইং কানু মারমার মাধ্যমে সংগ্রহ করেছেন।
তবে জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নান বলেন, আমি নতুন এসেছি এখানে। সরকারিকরণ হওয়া শিক্ষকদের বেতন ছাড়ে ঘুস দাবির কোনো অভিযোগ এখনো পায়নি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মামুন তিন মাস আগে বদলি হলেও কদিন আগে রিলিজ নিয়েছেন।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৩/০৯/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়