৫ বছর ধরে মিলছে না মাতৃত্বকালীন ভাতা

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দায়িত্বে গাফিলতি ও অবহেলার কারণে

শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার গ্রামীণ এলাকার দরিদ্র মায়েরা ২০১৮ সাল থেকে মাতৃত্বকালীন ভাতা পাচ্ছেন না। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দায়িত্বে গাফিলতি ও অবহেলার কারণে এমনটা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ দরিদ্র মায়েদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতার ৩৭ লাখ পাঁচ হাজার টাকা অব্যয়িত অবস্থায় ব্যাংক হিসাবে রহস্যজনকভাবে পড়ে আছে। দীর্ঘদিন ধরে এ অর্থ ব্যয় অথবা ফেরত পাঠানো হচ্ছে না। এ ঘটনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

চুনারুঘাট উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলে জানা যায়, ২০১৮-২০১৯ সালে উপজেলার দরিদ্র মায়েদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা বাবদ এ কার্যালয়ে ৩৭ লাখ পাঁচ হাজার টাকা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দ আসে। এর বিপরীতে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা ১৪০ জন দরিদ্র মায়ের মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য তালিকা চুনারুঘাট মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠান। কিন্তু তৎকালীন এ কার্যালয়ের মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাহমিদা ইয়াছমিন এমইএস ডাটা এন্ট্রি সম্পন্ন করতে না পারায় এ অর্থ কোনো কাজে আসেনি। পরে সমুদয় টাকা চুনারুঘাট সোনালী ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা থাকে।

উল্লেখ্য, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বরাদ্দকৃত টাকা খরচ করতে না পারায় এ অর্থবছরে দরিদ্র মায়েদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতার কোনো বরাদ্দ আসেনি।

চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, প্রতিবছর এ উপজেলায় প্রায় আট হাজার মা গর্ভধারণ করেন। এর মধ্যে ৭০ ভাগই দরিদ্র শ্রেণির। তারা ভাতা পাওয়ার যোগ্য।

এ ব্যাপারে তৎকালীন চুনারুঘাট মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাহমিদা ইয়াছমিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

বর্তমান চুনারুঘাট মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রোমানা আক্তার বলেন, তৎকালীন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানদের গাফিলতির কারণে দরিদ্র মায়েদের ডাটা এন্ট্রি হয়নি। এর দায় আমার না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সমুদয় টাকা ফেরত দিতে হবে। আমি চেষ্টা করছি ফেরত না দিয়ে কাজে লাগাতে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারি এক কর্মকর্তা বলেন, বিগত অর্থবছরের টাকা ব্যয় করতে না পারলে সরকারি অর্থ ফেরত দিতে হবে, এটাই নিয়ম।

চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে আমি এই উপজেলায় কর্মরত ছিলাম না। বিষয়টি আমি শুনেছি। দরিদ্র মায়েদের টাকা ফেরত যাওয়াটা দুঃখজনক।

চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ আব্দুল কাদির লস্কর বলেন, বিষয়টি শুনে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। কর্মকর্তাদের অবহেলায় আমার উপজেলার শত শত দরিদ্র মায়েরা মাতৃত্বকালীন ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৪/০২/২৩